গাইবান্ধায় ‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচিতে পচা চাল বিতরণের অভিযোগ

সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি ‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচিতে নিম্নমানের চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে
সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি ‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচিতে নিম্নমানের চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে  © টিডিসি

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সরকারি ‘খাদ্যবান্ধব’ কর্মসূচির নামে ভূমিহীন, দরিদ্র ও নারীপ্রধান পরিবারগুলোর কাছে পচা, গন্ধযুক্ত ও খাবার অযোগ্য চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক প্রতিবাদ ও হইচই সৃষ্টি হয়। ক্ষুব্ধ মানুষ পচা চাল রাস্তায় ফেলে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অনেকেই চাল না নিয়েই ফিরে যান। এ ঘটনাকে স্থানীয়ভাবে ‘লংকাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ২৫ হাজার ৯৩২টি দরিদ্র, প্রতিবন্ধী ও মহিলাপ্রধান পরিবারকে স্বল্পমূল্যে খাদ্যসহায়তা দেওয়ার জন্য ১৫ টাকা কেজি দরে বছরে ৬ মাস ৩০ কেজি করে চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে উপজেলার ৪২ জন ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়।

গত রোববার ধোপাডাংগা, বামনডাংগা, সোনারায়, রামজীবন, ছাপরহাটি, শান্তিরাম ও চন্ডিপুর ইউনিয়নের ১৭ জন ডিলার বামনডাংগা খাদ্য গুদাম থেকে চাল সংগ্রহ করেন। গুদাম থেকে চাল নিয়ে আসার পর ডিলাররা তাদের নির্ধারিত কেন্দ্রে দরিদ্র মানুষের মধ্যে তা বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু চালের বস্তা খুলতেই ধরা পড়ে ভয়াবহ দুর্নীতির চিত্র। গুদাম থেকে আনা চালের অধিকাংশই পচা, গন্ধযুক্ত ও খাবার অনুপযোগী।

এসব পচা চাল পেয়ে ক্রেতাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকেই টাকা দিয়ে পচা চাল কিনতে অস্বীকৃতি জানান। যারা কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন, তারাও ওজন ও মান দেখে প্রতিবাদে ফিরে আসেন। বিক্রয়কেন্দ্রে উপস্থিত নারী-পুরুষের প্রতিবাদের ফলে এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

ডিলার রাশেদুল ইসলাম, সুজন সরকার ও সাইমা আকতার জানান, টাকা জমা দিয়ে গুদাম থেকে চাল আনার পর বিতরণের সময় দেখতে পান যে চালগুলো পচা ও খাবার অযোগ্য। মানুষ টাকা দিয়ে এমন চাল নিতে রাজি নয়।

চাল কিনতে আসা মিনতি রানী, চম্পা খাতুন ও শহিদুল ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করেন, খাদ্য কর্মকর্তা একশ্রেণির মিলের মালিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে দীর্ঘদিন ধরে একই চাল বারবার ক্রয় দেখিয়ে গুদামে জমা রেখেছেন। দীর্ঘ সময় গুদামে রাখার ফলে চালগুলো পচে গেছে, আর সেই পচা চালই এখন গরিব মানুষকে খাওয়ানো হচ্ছে।

বামনডাংগা খাদ্য গুদামের খাদ্য পরিদর্শক সাহানাজ পারভীন পচা চালের অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, ‘চালগুলো শুধু একটু লাল হয়েছে। বৃষ্টির সময় ধান কিনেছিলাম, কিন্তু মিলাররা যে ভেজা চাল গুদামে দেবেন, সেটা তিনি বুঝতে পারেননি। তিনি এ সংবাদ প্রকাশ না করারও অনুরোধ করেন।’

অন্যদিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কর্মকর্তা স্বপন কুমার জানান, বামনডাংগা গুদাম থেকে পচা চাল সরবরাহের অভিযোগটি তার গোচরে এসেছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence