যশোরে ৪৬৫ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের শিম চাষ, কৃষকের মুখে হাসি
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১৫ PM
জাকির হোসাইন একজন সবজি চাষি। সারা বছর বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেন। অন্য সবজির পাশাপাশি তিনি এবারও ২৫ কাঠা জমিতে আগাম জাতের শিম চাষ করেছেন। মাসখানেকের মধ্যেই তার জমিতে শিমের ফলন এসেছে। তিনি সর্বশেষ সোমবার পাইকারি মোকামে প্রতি কেজি শিম ১৪০ টাকায় বিক্রি করেছেন। যা গত বছরের তুলনায় তিন গুণ বেশি।
এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে এলাকায় শিম চাষ কমেছে। ফলনও এবার তুলনামূলক কম। চাহিদার তুলনায় ফলন কম হওয়ায় মৌসুমের শুরুতেই চড়া দামে শিম বিক্রি করছেন কৃষকরা। বাড়তি দামে শিম বিক্রি হওয়ায় খরচ পুষিয়ে লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের এই কৃষক।
শুধু জাকির হোসাইনই নন, তার মতো অনেক চাষি এবার আগাম জাতের শিম চাষ করে খুশি। খরচ জুগিয়ে লাভের আশায় বুক বেঁধেছেন তারাও।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর যশোর জেলায় ৪৬৫ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের শিম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সদর উপজেলায় ১০৫ হেক্টর ও সর্বনিম্ন অভয়নগর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। এছাড়া চৌগাছায় ৯০ হেক্টর, বাঘারপাড়ায় ৭০ হেক্টর, শার্শায় ৩০ হেক্টর, মণিরামপুরে ৬৫ হেক্টর, কেশবপুরে ৫০ হেক্টর ও ঝিকরগাছায় ৩৫ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিম শীতকালীন সবজি হলেও হাইব্রিড জাত আবিষ্কার হওয়ায় গ্রীষ্মকালেও চাষ হচ্ছে। আগাম জাতের রূপবান ও রহিম (ইপসা-১ ও ইপসা-২) শিমের শীত মৌসুমের আগেই ফলন হচ্ছে। বাজারে আগাম জাতের এই শিমের চাহিদাও বেশি। এর আগে কৃষকরা সর্বোচ্চ ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে পাইকারি এই শিম বিক্রি করেছে। খুচরা বাজারে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে পাইকারি ১০০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এই শিম ২০০ টাকা কেজি।
চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের চাষি বিপুল হোসেন। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস বলেন, চার কাঠা জমিতে শিমের চাষ করেছি। ইতোমধ্যে ১১৭ কেজি শিম বিক্রি করেছি। প্রতি কেজি ৯৫ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে পেরেছি। বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা পুষিয়ে যাবে দামে।
আরেক চাষি চৌগাছা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের ফজলুর রহমান। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘১০ কাঠা জমিতে শিম চাষ করেছি। বৃষ্টিতে শিমের ফুল নষ্ট হয়েছে। ফলন খুব ভালো হয়নি। যা-ই ফলন হয়েছে, দাম বেশি পাচ্ছি। এতে ক্ষতিপূরণ হয়ে যাবে।’
জানতে চাইলে চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাব্বির হোসাইন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিম ও টমেটো মূলত শীতকালীন সবজি। আগাম জাত উদ্ভাবন হওয়ায় শীতকালেও শিম চাষ হচ্ছে। আগাম রূপবান ও রহিম জাতের শিম চাষ বেশি হয়েছে। শীতের আগেই ফলন শুরু হওয়ায় বেশি দাম পাচ্ছেন চাষিরা।
তিনি আরও বলেন, বেড তৈরি করে সাধারণত শিম চাষ করা হয়। এ জন্য বৃষ্টির কারণে খুব বেশি ক্ষতি হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের চাহিদার বেশির ভাগ সবজি যশোরের চাষিরা সরবরাহ করছে। নিরাপদ ও অর্গানিক সবজি উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।