জেলের সাহসিকতায় প্রাণে বাঁচলেন সমুদ্রে ভেসে যাওয়া পর্যটক
- কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৭:১২ PM , আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৫, ১২:১১ AM
কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের উত্তাল ঢেউ আর স্রোতের মাঝখানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ছিলেন তরুণ পর্যটক। ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা এই তরুণ হঠাৎ জোয়ারের স্রোতে ভেসে যেতে থাকেন গভীর সমুদ্রের দিকে। ঠিক তখনই নজিরবিহীন সাহসিকতা দেখান স্থানীয় এক জেলে—আলতাফ হোসেন। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে স্রোতের মুখ থেকে টেনে তীরে ফিরিয়ে আনেন ওই পর্যটককে। একটুর জন্য রক্ষা পাওয়া এ ঘটনা শুধু সাহসিকতার দৃষ্টান্ত নয়, বরং কুয়াকাটায় পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সচেতনতার প্রশ্নও নতুন করে সামনে এনেছে।
আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে কুয়াকাটা সৈকতের পশ্চিম পাশে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ওই পর্যটকের নাম তানভীর (২৩)। তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে সমুদ্রে গোসল করতে নামেন। হঠাৎ জোয়ারের স্রোত বেড়ে গেলে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সমুদ্রের গভীরের দিকে ভেসে যেতে থাকেন। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে দ্রুত পানিতে ঝাঁপ দেন স্থানীয় জেলে আলতাফ হোসেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি স্রোতের মুখ থেকে তানভীরকে টেনে তীরে ফিরিয়ে আনেন। তীরে তোলার পর তানভীর অচেতন হয়ে পড়লে উপস্থিত লোকজন দ্রুত তাকে কুয়াকাটা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান।
চিকিৎসকরা জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত ও শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সেলিম মাহমুদ বলেন, ‘ছেলেটা গোসল করতে নেমেছিল, কিন্তু কোনো সতর্কতা অবলম্বন করেনি। হঠাৎ স্রোতের তোড়ে ভেসে যেতে থাকে। ভাগ্য ভালো, সময়মতো উদ্ধার হওয়ায় বড় দুর্ঘটনা এড়ানো গেছে।’
উদ্ধারকারী জেলে আলতাফ হোসেন বলেন, ‘আমি দেখলাম একজন লোক পানিতে ভেসে যাচ্ছে, তখন আর চিন্তা না করে দৌড়ে পানিতে নেমে পড়ি। অনেক কষ্ট করে টেনে আনতে পেরেছি। আল্লাহর রহমতে সে এখন ভালো আছে, সেটাই বড় স্বস্তির ব্যাপার।’
এ ঘটনায় কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনস্পেক্টর জয়ন্ত কুমার মণ্ডল বলেন, ‘উদ্ধারের বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি এবং পর্যটকের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানান, কুয়াকাটা সৈকতে জোয়ারের সময় উপযুক্ত সতর্কতা না মেনে সাগরে নামার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। তারা মনে করেন, পর্যটকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সৈকতে উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।