রাজধানীর হাট মাতাবে ২৫ মণ ওজনের ‘বীর বাহাদুর’
- পিরোজপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ১০:৩৩ AM , আপডেট: ২৭ মে ২০২৫, ০৯:০২ PM
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর হাটে আনা হচ্ছে বিশাল আকৃতির গরু ‘বীর বাহাদুর’। পিরোজপুরের সদর উপজেলার কলাখালী গ্রামের সোহেল সরদারের ‘সরদার অ্যাগ্রো ফার্মে’ প্রস্তুত হচ্ছে এই গরু। অতি যত্নে লালন-পালন করা এই গরুর ওজন ২৫ মণ, উচ্চতা ছয় ফুট এবং দৈর্ঘ্য আট ফুট।
বিশাল এই গরুর পরিচর্যায়ও রয়েছে বিশেষ হিসাব-নিকাশ। গরুটির দেখভাল করতে মাঝেমধ্যেই প্রয়োজন হয়ে পড়ে ৮ থেকে ১০ জনের সহায়তা। বীর বাহাদুর এখন জেলাব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। একে দেখতে স্থানীয় জনগণ ভিড় জমায় সোহেলের বাড়িতে। সোহেল সরদার গরুর দাম হাঁকছেন আট লাখ টাকা এবং তিনি রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটে বীর বাহাদুরকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
গরুর মালিক সোহেল সরদার বলেন, বীর বাহাদুরকে তিন বছর বয়সে ঢাকার একটি হাট থেকে কিনেছিলাম। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে তিন বছর ধরে লালিত-পালিত হওয়া এই গরুর খাদ্যতালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, খৈল, কলা, ভুট্টা, অ্যাংকর ডাল ও চালের কুঁড়া। গরুটির প্রতি যত্নের কারণে আজ এটি সুস্থ ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, আমি বীর বাহাদুরকে বিক্রির জন্য আট লাখ টাকা দাম চাচ্ছি। ইচ্ছা আছে বীর বাহাদুরকে ঢাকার যেকোনো একটি হাটে নিয়ে যাব। তবে ভালো ক্রেতা পেলে বাড়ি থেকে দাম কম-বেশি করে বিক্রি করে দেব। আল্লাহ যাকে রিজিক দিয়েছেন, তিনিই বীর বাহাদুরকে নিয়ে যাবেন। তিনি আশা করছেন ভালো ক্রেতা খুঁজে পাবেন এবং তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করবেন।
গরুটির পরিচর্যাকারী রাজীব ডাকুয়া বলেন, ‘গরুটিকে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার দেওয়া হয়েছে। যেমন সকালে আট কেজি সাইলেজ, পরে ভুসি, অ্যাংকর ডাল, ভুট্টা, চালের কুঁড়া খাওয়ানো হয়। তিন বেলা গোসল করানো হয়। গরুটির সঙ্গে আমার বন্ধুর মতো সম্পর্ক হয়ে গেছে। ওর কাছে গেলেই আমার আদর নিতে চায়, আমিও সেভাবে যত্ন করি।’
এ বছর কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পিরোজপুরে প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু, যার মধ্যে বীর বাহাদুর হলো এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও নজরকাড়া ষাঁড়। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের মাঝে গরুটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুদেব সরকার বলেন, ‘কলাখালী গ্রামের একটি খামারে ২৫ মণ ওজনের একটি গরু রয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত জেলার সবচেয়ে বড় গরু বলে আমাদের জানা আছে।’
পিরোজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রানা মিয়া বলেন, ‘চলতি বছর জেলার সাতটি উপজেলায় কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে ৪০ হাজার ২৫৭টি পশুর। প্রস্তুত রয়েছে ৪৬ হাজার ৯৩৫টি। এই অতিরিক্ত ৬ হাজার ৬৭৮টি পশু, যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় সরবরাহ করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলায় ছোট-বড় প্রায় ৫৩ হাজার খামার থেকে প্রস্তুত ৪৬ হাজার ৯৩৫টি পশুর মধ্যে রয়েছে ২৬ হাজার ৯২০টি গরু ও গাভি, ২১০টি মহিষ, ১৭ হাজার ৭০০টি ছাগল, ১৮ হাজার ৮৭টি ভেড়া।’