কোন পথে ‘৩৫ চাই’ আন্দোলনকারীরা?

  © ফাইল ছবি

চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে টানা কয়েকবছর ধরে আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এটি গত মাসে চূড়ান্ত সমাধানের দ্বারপ্রান্তেও পৌছে গিয়েছিল। তবে শেষমেষ তাদেরকে হতাশই হতে হয়েছে। জাতীয় সংসদে এটি উঠলেও কণ্ঠভোটে তা নাকচ হয়ে যায়।

তবে এতে থেমে যাচ্ছেন না আন্দোলনকারীরা। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য পৌছায়নি বলে তারা মনে করছেন। এছাড়া আন্দোলন আরও ভালোভাবে করার জন্য সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করছেন তারা। আগামী ঈদের পরে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে বড় ধরণের আন্দোলন করতে চান চাকরিপ্রার্থীরা।

এ ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমতিয়াজ হোসেন আজ বৃহস্পতিবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সংসদে প্রস্তাবটি পাস না হওয়ায় লাখো চাকরিপ্রার্থী হতাশ হয়েছেন। তবে এদেশের বাস্তবতায় এভাবে আন্দোলন করে দাবি আদায় হয় না। এজন্য আমরা জেলা পর্যায়ে এখন কমিটি শক্তিশালী করার চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘রমজানে একটি মতবিনিময় সভা করা হবে। সেখানে ইফতার করার পাশাপাশি সবার পরামর্শ নেওয়া হবে। এছাড়া দাবির ব্যাপারে আমরা সবাই একমত। আমাদের মধ্যে যে মতবিরোধ ছিল তা আর নেই। ওই সভায় আমাদের কাউন্সিলও হয়ে যেতে পারে। এরপর আমরা শেষবারের মত একটি ভালো আন্দোলন করে সরকারকে এ দাবির যৌক্তিকতা জানাতে চাই।’ 

আরো পড়ুন: ৩৫ চাই প্রস্তাব নাকচ, বাড়ছে না চাকরির বয়স

গত ২৫ এপ্রিল চাকরি প্রত্যাশীদের বহুল কাঙ্ক্ষিত চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার প্রস্তাব জাতীয় সংসদে ওঠে। তবে তা নাকচ করে দিয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, পড়াশোনা শেষ করার পর একজন ছাত্র অন্তত সাত বছর সময় পেয়েছে। এটা অনেক সময়। তাছাড়া এর আগে চাকরির বয়স ২৫ বছর ছিল, সেখান থেকে ২৭ ও পরবর্তীতে ৩০ বছর করা হয়। সে হিসেবে এখন বাড়ানোর যৌক্তিকতা নেই।

এ সময় তিনি প্রস্তাব উত্থাপনকারী সংসদ সদস্যকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানান এবং প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। কিন্তু বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য মো. রেজাউল করিম বাবলু সেটি প্রত্যাহারে রাজি না হলে কণ্ঠভোটের আয়োজন করা হয়। কণ্ঠভোটে প্রস্তাবটির বিপক্ষে ভোট দেন সংসদ সদস্যরা।

ওইদিন সংসদ অধিবেশন চলাকালে রেজাউল করিম বাবলু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা ও উত্তর পর্বে ‘৩৫ চাই’ সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে নিয়োগে আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে ৩৫ বছরে উন্নীত করা হোক।’ তবে সেটি পাস না হওয়ায় তীব্র হতাশা প্রকাশ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ইমতিয়াজ হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, ‘মাননীয় প্রতিমন্ত্রী সাত বছর সময় পাওয়ার কথা বলেছেন, তা আসলে সঠিক নয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করতে এখন ২৫ বছরেরও বেশি সময় লাগে। সাত কলেজে দুই বছরের বেশি সেশন জট রয়েছে। অথচ দুর্বল যুক্তির ভিত্তিতে জাতীয় সংসদে তাদের প্রস্তাবটি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।’

এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মূলত আমলাদের অনাগ্রহের কারণেই এ প্রস্তাব পাস হচ্ছে না আমাদের মনে হচ্ছে। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিকট এ ব্যাপারে সঠিক তথ্য যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে এ দাবির বিপক্ষে চলে যাচ্ছে সরকার।’

পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমতিয়াজ হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অত্যন্ত যৌক্তিক হওয়া সত্ত্বেও দাবি না মানা হতাশাজনক। তবে ছোট কোন আন্দোলন আর করা হবে না। আমরা সবাই সংগঠিত হয়ে সরকারের নিকট শেষবারের মতো আমাদের দাবি জানাতে চাই।’ এসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নজিরও তুলে ধরেন তিনি।

আরো পড়ুন: ‘৩৫ চাই’ দাবিতে সম্মতি জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস রাব্বানীর


সর্বশেষ সংবাদ