শিক্ষকতাকে সহজ করবে ‘বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কর্মসহায়ক গবেষণা’

বইয়ের প্রচ্ছদ
বইয়ের প্রচ্ছদ  © টিডিসি ফটো

প্রতিনিয়তই কোনো না কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয় মানুষ; সমাধানও করে। কিন্তু এসব সমস্যা কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অবলম্বন করে সমাধান করা হয় না; বিশেষ করে যারা শিক্ষকতা পেশায় আছেন, তারা প্রতিনিয়তই পাঠদান প্রক্রিয়া, শিশুদের শিখন পদ্ধতি, মূল্যায়নব্যবস্থা কিংবা আরও নানা বিষয়ে সমস্যার মুখোমুখি হন। তবে শিক্ষকরা তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও কর্মদক্ষতা দিয়ে সমস্যাগুলো উতরে যান। কিন্তু এসব সমস্যা সমাধানের মাধ্যমেই তাদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে। আর এই সুযোগ করে দিচ্ছে কর্মসহায়ক গবেষণা।

গবেষণা সাধারণত যতটা কঠিন ও জটিল-প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত, সেই ধারণা থেকে বের হয়ে সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের জন্য গবেষণাক্ষেত্রে নমনীয় নীতিতে আবির্ভূত হয় ‘কর্মসহায়ক গবেষণা’। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মসহায়ক গবেষণা পরিচালিত হলেও বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে, বিশেষত শ্রেণিকক্ষভিত্তিক সমস্যা সমাধানে এই গবেষণা বহুলভাবে ব্যবহৃত। উন্নত বিশ্বে কয়েক দশক ধরে বিদ্যালয়ের উন্নয়নে এই গবেষণা ব্যবহৃত হয়ে এলেও বাংলাদেশে ততটা পরিচিতি পায়নি।

প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রের শ্রেণিকক্ষভিত্তিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা সমাধানে শিক্ষকদের কাছে কর্মসহায়ক গবেষণার ধারণা স্পষ্ট করতে ‘বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কর্মসহায়ক গবেষণা’ বইটি লেখা। সহজ ভাষায় বাস্তব উদাহরণসহ কর্মসহায়ক গবেষণার বিভিন্ন বিষয় সফলভাবে উপস্থাপন করেছেন বইটির লেখক মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন ও রাবেয়া খাতুন।

লেখকেরা দুজনই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইআর)। মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন আইইআরে এমফিল করেছেন। বর্তমানে মুহাম্মদ সালাহউদ্দিন জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমীর (নেপ) সহকারী বিশেষজ্ঞ হিসেবে এবং রাবেয়া খাতুন প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ শাখার সাধারণ ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

লেখকদের ভাষ্য মতে, যারা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত মূলত তাদের জন্য এই বই। এ ছাড়াও প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) এ প্রশিক্ষণরত প্রশিক্ষনার্থী ও প্রশিক্ষকগণের (ইন্সট্রাক্টর) জন্যও এ বইটি কর্মসহায়ক গবেষণা পরিচালনায় সহায়তা করবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একাডেমিক থিসিস সম্পন্ন করতে এই বইটি বিশেষভাবে সাহায্য করবে। শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন এমন উন্নয়ন কর্মীরাও বইটি থেকে উপকৃত হবেন।

মোট ১০টি অধ্যায় রয়েছে বইটিতে। শুরুতেই পাঠকের জন্য গবেষণার প্রাথমিক ধারণা দেয়া হয়েছে যা তাকে কর্মসহায়ক গবেষণা বুঝতে সাহায্য করবে। এ ছাড়াও বইটিতে নমুনায়ন, গবেষণার সাহিত্য পর্যালোচনা, তথ্য সংগ্রহের কলা কৌশল, তথ্য বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন কৌশল এবং গবেষণার নীতি-নৈতিকতার বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে। বইটিতে এপিএ (৭ম সংস্করণ) পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্যসূত্র লেখার কৌশল উদাহরণসহ বর্ণনা করা হয়েছে। নতুন গবেষকদের জন্য পর্যাপ্ত উদাহরণ দিয়ে গবেষণার প্রস্তাবনা ও প্রতিবেদন লেখার কলা-কৌশল প্রয়োজনীয় উদাহরণ দিয়ে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।

বইটি সম্পর্কে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব মো. শাহ আলম বলেন, “কর্মসহায়ক গবেষণার ধারণা এবং বিদ্যালয়ে এই গবেষণা সম্পন্ন করার কলাকৌশল নিয়ে বাংলা ভাষায় একটি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মাঠপর্যায়ের শিক্ষক, প্রশিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের এখনো অনেক জিজ্ঞাসা রয়েছে। এ বইটি তাদের সেসব অনেক জিজ্ঞাসার উত্তর পেতে সহায়তা করবে।”

আদর্শ প্রকাশনীর ১৮১ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ৩৪০ টাকা। ২৫ শতাংশ কমিশনে ২৫৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। বইটি অনলাইনে রকমারি ডটকমে অথবা আদর্শের ফেসবুক পেজে অর্ডার করতে পারেন। কল করে অর্ডার করতে পারেন ০১৭৯৩- ২৯৬২০২ নম্বরে।


সর্বশেষ সংবাদ