‘ব্যাঙের লাফ-হাঁসের ডাক’ দেয়া ভিডিও নিয়ে যা জানাল এনসিটিবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৫১ PM , আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:০৪ PM
নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রমের অংশ হিসেবে হিন্দি গানের সাথে স্কুলের পোশাক পরা ছেলেমেয়েদের অশ্লীল নাচ কিংবা ব্যাঙের লাফ অথবা হাঁসের ডাক দিচ্ছে— এমন কিছু ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)’ বলছে, এসব ভিডিও স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী নতুন শিক্ষাক্রম সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনমনে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এসব মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, “এমন মিথ্যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড, শেয়ার বা কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।”
আজ রবিবার এনসিটিবির সচির মোসা. নাজমা আখতার স্বাক্ষরিত এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এর আগে দুপুরে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি নতুন শিক্ষাক্রমের অংশ নয়— এমন বিষয়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে ব্যাপকভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে ছড়ানো ভিডিও নতুন শিক্ষাক্রমের অংশ নয়: শিক্ষামন্ত্রী
তিনি বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ভয়ানক রকম অপপ্রচার চলছে। সেটি করা হচ্ছে— ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ হানি হওয়ার ভয়ে। কিছু ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী শিক্ষাক্রমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছেন। তারসঙ্গে এখন তো নির্বাচনের মৌসুমে তো কিছু ঝামেলা থাকেই। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থাকেন, তাদের উসকানি যুক্ত হয়ে গেছে। অতি ডান ও অতি বামের উসকানিও যুক্ত হয়ে গেছে। যেগুলো আমাদের প্রশিক্ষণের অংশ নয়, সেরকম কিছু ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
এদিকে এসিটিবির সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাক-প্রাথমিক হতে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের মানসম্পন্ন শিক্ষা উন্নয়ন ও প্রসারে এই প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা লক্ষ করছি, স্বার্থান্বেষী একটি গোষ্ঠী সম্প্রতি নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনমনে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে বা আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থী কাজকে শিক্ষাক্রমের কাজ বলে প্রচার করা হচ্ছে। নবীর ছবি আঁকতে বলা হয়েছে লিখে মিথ্যাচার করছে। হিন্দি গানের সাথে স্কুলের পোশাক পরা কিছু ছেলেমেয়ে ও ব্যক্তির অশ্লীল নাচ আপলোড করে বলা হচ্ছে শিক্ষাক্রমের নির্দেশনা-যা সর্বৈব মিথ্যা।
আরও: নতুন শিক্ষাক্রম ‘নৈতিকতা ধ্বংসকারী’ দাবি, বাতিল চান অভিভাবকরা
এতে আরও বলা হয়েছে, কিছু লোক ব্যাঙের লাফ বা হাঁসের ডাক দিচ্ছে এমন ভিডিও আপলোড করে বলা হচ্ছে এটা নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষক প্রশিক্ষণের অংশ যা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। নতুন শিক্ষাক্রমে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে বিকশিত করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মিথ্যা অপপ্রচারের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টা যারা করছেন তাদের এরূপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা যাচ্ছে। শিক্ষাক্রমের কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা আমাদের জানালে আমরা অবশ্যই তা বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন পরিমার্জন করবো। কিন্তু অপপ্রচার করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংরেজি শিক্ষা ব্যবসার জন্য নতুন শিক্ষাক্রম’
“এমতাবস্থায় সর্বসাধারণকে মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য এনসিটিবি অনুরোধ জানাচ্ছে এবং এরূপ মিথ্যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড, শেয়ার বা কমেন্ট করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।”