পালাতে থাকা প্রাইভেট কারের মধ্যে সহপাঠীর সঙ্গে অচেতন বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী

  © সংগৃহীত

ব্যস্ত সড়কে বেপরোয়াভাবে দ্রুতগতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল প্রাইভেট কারটি। পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেলচালক চেষ্টা করছিলেন গাড়িটিকে ধরতে। পরে যানজটের কারণে সেটি আটকা পড়ে। কিন্তু যখনই তাকে থামানো হলো গাড়ির গ্লাস নামাতেই দেখা গেল ভেতরে তরুণ চালকের পায়ের কাছে রয়েছে অজ্ঞান এক তরুণী।

গতকাল রবিবার (২৩ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। তরুণীকে এবং ওই চালক তরুণকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানানো হয়নি।  

পুলিশের খিলগাঁও অঞ্চলের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রাশেদুল ইসলাম জানান, তরুণ-তরুণীর তাদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। ছেলেটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে অ্যাবনরমাল আচরণ করছে। একই অবস্থা মেয়েটির। কী হয়েছিল, কেন ছেলেটি পালাতে চাচ্ছিল, সেটা এখনো জানা যায়নি।

পুলিশের ধারণা, ওই তরুণ-তরুণী ঢাকার কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। তাদের বয়স ২৪-২৫ বছর হবে। 

স্থানীয়রা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে রামপুরা বাজারের পর যানজটে পড়ে একটি কালো রঙের প্রাইভেট কার। সেখানেও সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেলকেও ধাক্কা দেয়। এ সময় মোটরসাইকেল থেকে দুজন নেমে প্রাইভেট কারের চালকের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। গ্লাস নামাতে বলেন। আরও কয়েকজন গাড়িটিকে ঘিরে ধরলেও চালক সেদিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। এর মধ্যে সিগন্যাল ছেড়ে দিলে প্রাইভেট কারটি এগোতে থাকে। এসময় বাঁ পাশ দিয়ে কোনো গাড়িকে সামনে যেতে দিচ্ছিল না।  মোটরসাইকেলটির চালকও প্রাইভেট কারটির সামনে আসার চেষ্টা করলেও পারছিলেন না। 

এক পর্যায়ে পেছন থেকে সবাই বলা শুরু করেন, ওই গাড়িটিকে আটকান। পালাচ্ছে।’ এ সময় প্রাইভেট কারটি খিলগাঁওয়ের দিকে যেতে চাইলেও একটি রিকশার কারণে আটকে যায়। পরে একটি ছেলে গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান আরও তখন একজন দৌড়ে এসে ওই প্রাইভেট কারের চালককে গ্লাস নামাতে বলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি গ্লাস নামান। এ সময় পেছনে থেকে এক নারী চালকের সঙ্গে এক নারী থাকার কথা জানান। কিন্তু গাড়িতে কোনো নারীকে দেখা যাচ্ছিল না। 

পরে পাশে দাঁড়ানো একটি মিনিট্রাকের যাত্রী বলেন, ওই গাড়িতে একজন মেয়ে পড়ে আছে। তখন একটি মোবাইলের লাইট জ্বালিয়ে প্রাইভেট কারটির ভেতর দেখা যায় চালকের পাশের আসনে পা রাখার জায়গায় এক তরুণীকে কুঁকড়ে পড়ে আছেন। 

এরপর চালকের আসনে বসা ওই তরুণ মেয়েটির মুখ ঝাঁকিয়ে বারবার বলতে থাকেন, ‘জান গেট আপ প্লিজ। জান গেট আপ।’ কিন্তু মেয়েটির কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে একসময় পুলিশ সেখানে চলে আসে। মেয়েটিকে বের করে হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি গাড়িসহ চালককে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তরুণ-তরুণীর তাদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের কাছেই তরুণ-তরুণীকে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


সর্বশেষ সংবাদ