হাসপাতালে নেয়ারও সুযোগ হয়নি, আকস্মিক মারা গেলেন বাকৃবি ছাত্রী

হাসপাতালে নেয়ারও সুযোগ হয়নি, আকস্মিক মারা গেলেন বাকৃবি ছাত্রী
হাসপাতালে নেয়ারও সুযোগ হয়নি, আকস্মিক মারা গেলেন বাকৃবি ছাত্রী  © ফাইল ছবি

টাইফয়েড জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবা আমিন অনন্যার আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৮ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তার নিজ বাড়িতে মারা যান হাবিবা।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হাবিবা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থানকালীন সময় রমজান মাসের শেষের দিকে প্রচন্ড মানসিক অসুস্থতায় ভুগতে থাকেন। এরপর ক্যাম্পাসে থাকাকালীন সময়ে গত ১৩ মে তারিখে টাইফয়েডের লক্ষণ দেখা যায়। পরের দিন হাবিবার বাবা এসে তাকে হল থেকে বাড়িতে নিয়ে চলে যান।

এরপর তাকে ১৭ মে হাসপাতালে নিয়ে টাইফয়েডের পরীক্ষা করানো হয়। আজ সকালে ফজরের নামাজের পর বাড়িতে থাকাকালীন সময়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সে মারা যায়। তাকে হাসপাতালে নেওয়ারও সুযোগ হয়নি। পরিবারের তিন বোনের মধ্যে বড় ছিল হাবিবা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, হাবিবা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের বেগম রোকেয়া আবাসিক হলের ছাত্রী ছিলেন। তিনি বেগম রোকেয়া হলের মূল ভবনের ৩১৩ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তার বাসা ঢাকার মিরপুর-১ রোডে দারুস সালাম থানার পাশে অবস্থিত।

আরও পড়ুন: ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বাকৃবি অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন

এদিকে তার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মৃত্যুর খবর শুনে তার সহপাঠী বেগম রোকেয়া হলের সুরাইয়া আঁখি নামের এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পরে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

মৃত শিক্ষার্থী হাবিবার হলের সহপাঠীরা জানান, হাবিবা প্রায় ১ মাস ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। সে বেশকিছুদিন ধরে হলের ডায়নিংয়ের খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। কারণ হিসেবে সে বলছিল, সে কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ডায়নিংয়ে খাবারে বিষ মেশানো থাকতে পারে এই ভয়ে সে ডায়নিংয়ের খাবার খেতে চাইত না।

এমনকি সে তার কক্ষের আশেপাশের ছাত্রীদের গিয়ে বলত, আমার অনেক ভয় লাগে। আমার যদি কোনো কিছু হয়ে যায় তোমরা আমার পাশে থেকো। তবে কি কারণে এই ভয় এ বিষয়ে সবাই জানতে চাইলে সে বিষয়টি গোপন রাখে।

হলের শিক্ষার্থীরা আরও জানান, মানসিক সমস্যায় থাকার কারণে হাবিবা ঠিকমত ক্লাসে যেত না। কয়েকটি পরীক্ষাও সে দেয়নি। হলের শিক্ষার্থীরা তার এ ধরনের সমস্যা লক্ষ্য করার পর তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। তার পরিবার এসে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে বেগম রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি নিজেই অসুস্থতার কারণে মৃত্যুর খবর শোনার পর তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। তবে আমি ওই হলের হাউজ টিউটরদের খোঁজখবর নিতে বলেছি। আমি শিঘ্রই নিজে মেয়েটির বাবার সাথে কথা বলব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি মৃত্যুর খবরটি শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী এক ছাত্রীর আকষ্মিক মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মর্মাহত ও গভীর শোকাহত।


সর্বশেষ সংবাদ