বাকৃবি গবেষকদের সাফল্য

কাঁচকি মাছের বাদাম, চানাচুর ও তিল উদ্ভাবন

কাঁচকি মাছের বাদাম, চানাচুর ও তিল উদ্ভাবন
কাঁচকি মাছের বাদাম, চানাচুর ও তিল উদ্ভাবন  © টিডিসি ফটো

কাঁচকি দেশী প্রজাতির খুব ছোট এবং প্রায় স্বচ্ছ একটি মাছ। দেশের নদ-নদী, খাল-বিলে প্রচুর পরিমাণে এ মাছটি পাওয়া যায়। কিন্তু মাছের আকার ছোট এবং কাটাযুক্ত হওয়ায় ছোট বাচ্চাসহ অনেকেই এটি খেতে পছন্দ করেন না। কিন্তু প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকলেও না খাওয়ার কারনে অনেকেই এ পুষ্টি উপাদানগুলো পান না।

তাই বিকল্প উপায়ে তাদের সেই পুষ্টি গ্রহণের জন্য কাঁচকি মাছের আলাদা চারটি মূল্য সংযোজক পণ্য তৈরি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের একদল গবেষক। পণ্যগুলি হলো কাঁচকি মাছের পিনাট (বাদাম) বার, সেসিমি (তিল) বার, পিনাট-সেসিমি বার এবং কাঁচকি মাছের চানাচুর।

ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের  প্রধান অধ্যাপক ড. ফাতেমা হক শিখার কাছে গবেষণার উদ্ভাবন তুলে দিচ্ছেন গবেষক দল।

রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে গবেষণাটির প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নুরুল হায়দার এসব কথা জানান। গবেষণাটির সহযোগী গবেষক হিসেবে ছিলেন প্রভাষক মো. মোবারক হোসেন। সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে একটি প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি পরিচালনা করেন গবেষকবৃন্দ।

ড. মুহম্মদ নুরুল হায়দার বলেন, কাঁচকি মাছে শরীরের জন্যে প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, আমিষ ও ভিটামিন ‘এ’ বিদ্যমান। বর্তমানে এ মাছটির প্রচুর পরিমাণে আহরিত হচ্ছে। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাঁচকি মাছ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ পুষ্টিসমৃদ্ধ মাছ খেতে শিশুসহ অনেকেই অনাগ্রহী। মাছের এ পুষ্টিগুলো তারা যেন পেয়ে যায় সেজন্যে আমরা এই ৪টি পণ্য উদ্ভাবন করেছি। এতে তারা এসব মুখরোচক খাবারের সাথে মাছের পুষ্টিও গ্রহণ করতে পারবে।

তিনি আরও জানান, তিল এবং বাদামের পণ্যগুলো তৈরি করা হয় বাদাম , মাছ, তিল এবং গুড়ের সমন্বয়ে। মাছ দিয়ে তৈরি এসব পণ্যে পরবর্তীতে মাছে কোনো গন্ধ থাকে না। জিপার ব্যাগে পণ্যগুলো ২ মাসের বেশি সময় পর্যন্ত ভালো থাকে।

পণ্যগুলোর বাণিজ্যিক উৎপাদন এবং দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, সাধারণ প্রাণের ২৫ গ্রামের যে পিনাট বার পাওয়া যায় তার দাম ১০ টাকা করে। তাই মাছের তৈরি বারের দাম ১৫-২০ টাকা করে হতে পারে। প্রতি কেজি মাছের তৈরি বার বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা ৬০০ টাকা পর্যন্ত লাভ করতে পারবেন। অন্যদিকে মাছের চানাচুরের দাম নির্ধারণ হবে মাছের পরিমাণের উপর। চানাচুরে মাছের পরিমাণ যত বেশি হবে তার দামও ততো বেশি হবে। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করব।

সহযোগী গবেষক প্রভাষক মো. মোবারক হোসেন বলেন, মুখরোচক খাবারে প্রয়োজনীয় পুষ্টিমান বৃদ্ধিও লক্ষ্যেই আমরা মূলত গবেষণাটি প্রকল্প সম্পন্ন করেছি। ছোট মাছের কাটা খেতে হবে চিবিয়ে এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে। অন্যদিকে গর্ভবতী মা এবং দুগ্ধদানকারী মায়ের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে এ কাঁচকি মাছ।

এ বিষয়ে ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. ফাতেমা হক শিখা বলেন, এ ধরণের পণ্য বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা গেলে দেশীয় পুষ্টিকর ছোট মাছগুলো সকল শ্রেণীর ভোক্তাদের মাঝে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। যা বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence