লাইফ সায়েন্স ক্যাটাগরি
টাইমস হায়ার র্যাঙ্কিংয়ে দেশসেরা বাকৃবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২২, ০৭:২১ PM , আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২২, ০৭:২১ PM
টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) বিষয়ভিত্তিক র্যাংকিংয়ে লাইফ সায়েন্স ক্যাটাগরিতে দেশসেরা হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। ২০২১ সালেও একই ক্যাটাগরিতে বাকৃবির অবস্থান প্রথম ছিল।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্স ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘বিষয়ভিত্তিক র্যাংকিংয়ে দেশ সেরা বাকৃবিথ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাকৃবির ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক অধ্যাপক ড. সুকুমার সাহা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তেব্যে তারা জানান, গত ২৫ অক্টোবর টিএইচই সংস্থাটি বিষয়ভিত্তিক র্যাংকিং-২০২৩ এর তালিকা প্রকাশ করে। ১১ টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে এই র্যাংকিং হয়ে থাকে। এর মধ্যে লাইফ সায়েন্স,ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ব্যবসা ,অর্থনীতি, সমাজ বিজ্ঞান, শারীর বিজ্ঞান এবং ক্লিনিক্যাল এন্ড হেলথ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশের অবস্থান রয়েছে। লাইফ সায়েন্স ক্যাটাগরির মধ্যে আবার কৃষি এবং বন, বায়োলজিক্যাল সায়েন্স, ভেটেরিনারি সায়েন্স এবং স্পোর্টস সায়েন্স। লাইফ সায়েন্স ক্যাটাগরিতে বিশ্বের ১০১৭ টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। বাংলাদেশ থেকে বাকৃবি ও ঢাবি এই তালিকায় আছে। উভয়ের অবস্থান ৬০১-৮০০ এর মধ্যে। এই অবস্থানের জন্য প্রাপ্ত স্কোর ২১.৫-২৯.৩ এর মধ্যে। বাকৃবি আরো দশমিক আট স্কোর করতে পারলে ৫০১-৬০০ এর মধ্যে স্থান করে নিতে সক্ষম হতো ।
এছাড়া গত ১২ অক্টোবর টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং ২০২৩ প্রকাশিত হয়। শিক্ষা, গবেষণা, সাইটেশন, শিল্প থেকে আয় এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভংগী সংশ্লিষ্ট ১০টি নির্দেশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে এই র্যাংকিং করা হয়। এ বছর বিশ্বের ১০৪টি দেশের ১৭৯৯ টি বিশ্ববিদ্যালয় এ র্যাংকিং তলিকায় স্থান পেয়েছে এবং শীর্ষ পাঁচে রয়েছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ, যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড, স্টানফোর্ড ও এমআইটি। গতবছর বাংলাদেশের ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি, বাকৃবি ও বুয়েট) সহ এ সংখ্যাটি ছিল ১৬৬২।
র্যাংকিং তালিকায় বাংলাদেশ থেকে এবছর ঢাবি, বাকৃবি ও বুয়েটের সাথে যোগ হলো নর্থ সাউথ ও কুয়েট। ঢাবি ও নর্থ সাউথের গ্লোবাল পজিশন র্যাংকিং তালিকায় থাকা ১৭৯৯ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৬০১-৮০০ এবং বাকৃবি, বুয়েট ও কুয়েটের গ্লোবাল পজিশন ১২০১-১৫০০ এর মধ্যে।
সংবাদ সম্মেলনে আইকিউএসির সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং তত্ত্বাবধায়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিশ্বে অনেক ধরণের ইউনিভার্সিটি র্যাংকিং থাকলেও এই র্যাংকিংয়ের গ্রহণযোগ্যতায় অনন্য। বাংলাদেশ সরকারও এই র্যাংকিংকেই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। যেমন, মর্যাদাপূর্ণ প্রধানমন্ত্রী পিএইচডি ফেলোশীপে আবেদনকারীর অবশ্যই টিএইচই এর র্যাংকিং তালিকার শীর্ষ একশতে থাকা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন অফার থাকতে হয়। তা নাহলে ফেলোশীপ পাবে না।
টিএইচই এর এই র্যাংকিং তালিকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থান পেতে বছরে ১৫০ প্রকাশনাসহ বিগত ৫ বছরে কমপক্ষে ১০০০ স্কোপাস ইন্ডেক্সয়ে প্রকাশনা থাকতে হয় এবং টিএইচই ডেটা পোর্টালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হালনাগাদ তথ্যাদি প্রদান করতে হয়।
আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন বলেন, আমাদের প্রায় ৬২.৫ শতাংশ স্কোর আসে গবেষণা থেকে। তাই আমাদের গবেষণা আরোও বাড়াতে হবে। এইজন্য শুধু শিক্ষকদের একার পক্ষে এই গবেষণা বাড়ানো সম্ভব হবে না। শিক্ষার্থীদেরকেও গবেষণায় এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের আওতায় প্রতি বছর প্রায় পাঁচ শতাধিক গবেষণা সম্পন্ন হয়।
ড. সুকুমার র্যাংকিং নিয়ে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় মূলত কাজ করে লাইফ সায়েন্স নিয়ে। উদ্ভিদ এবং প্রাণির জীবন নিয়েই আমাদের কাজ। এ জায়গায় আমরা ঠিক আছি। এজন্যেই আমরা টাইমস হায়ার এডুকেশনের মতো সুনামধন্য র্যাঙ্কিং প্রকাশক প্রতিষ্ঠানের র্যাঙ্কিংয়ে জায়গা করে নিয়েছি। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং-২০২৩ এ আমরা পিছিয়েছি। কারণ আমরা কাজ করি শুধু লাইফ সায়েন্স নিয়ে। অর্থনীতি, ইঞ্জিনিয়ারিং, সমাজ বিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের কাজের সুযোগ কম হওয়ায় আমরা সার্বিকভাবে পিছিয়েছি। এছাড়া করোনার একটি প্রভাব এখানে কাজ করেছে। ১৩ টি নির্দেশকের মধ্যে আমরা শুধু সাইটেশনে কম স্কোর পেয়েছি। এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে । কিভাবে স্কোর বাড়িয়ে র্যাঙ্কিংয়ে ভালো করা যায় সে বিষয়ে কমিটি কাজ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরোও উপস্থিত ছিলেন আইকিউএসিথর অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর-রশীদ, আইকিউএসির সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং তত্ত্বাবধায়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর হোসেন, আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন এবং সেকশন অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস তানিয়া।