জাবির ভর্তি পরীক্ষায় শিফট পদ্ধতিতে বৈষম্যের অভিযোগ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:০৯ AM , আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:২৮ AM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) স্নাতকের ভর্তি পরীক্ষায় শিফট পদ্ধতিতে মেধা যাচাইয়ে বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিফট পদ্ধতিতে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিলেও ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশিত হওয়ায় তাদের একটি অংশ বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সব ইউনিটের ফলাফল ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এই ফলে ‘এ’ ইউনিটের ১০টি শিফটে মোট ৪১০ জন ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। এখানে দুইটি শিফটের ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, তৃতীয় শিফট থেকে চান্স পেয়েছেন ১০৯ জন এবং চতুর্থ শিফট থেকে পেয়েছেন মাত্র একজন।
‘বি’ ইউনিটে মোট আসন ৩২৬টি। এখানে পাঁচ শিফটে পরীক্ষা হয়েছে। দুটি শিফটের ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, পঞ্চম শিফটে চান্স পেয়েছেন ২১৭ জন এবং দ্বিতীয় শিফটে পেয়েছেন মোটে ১২ জন।
‘সি’ ইউনিটে ছয়টি শিফটে পরীক্ষা হয়েছে, চান্স পেয়েছেন ৪৭৯ জন। দুটি শিফটের ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রথম শিফটে চান্স পান ১৯৭ জন এবং দ্বিতীয় শিফটে পান ৩৭ জন।
‘ডি’ ইউনিটে ৩২০টি আসনের জন্য দশ শিফটে পরীক্ষা নেওয়া হয়। দুটি শিফটের ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যায়, পঞ্চম শিফটে চান্স পেয়েছেন ১০৪ জন এবং তৃতীয় শিফটে পেয়েছেন একজন। এভাবে প্রতিটি ইউনিটে চান্স পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক ব্যাবধান দেখা যাচ্ছে।
এখানে ভর্তি পরীক্ষায় একই ইউনিটে ভিন্ন ভিন্ন শিফটে ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সবগুলো শিফট মিলে ছেলে ও মেয়েদের ক্ষেত্রে দুটি অভিন্ন মেধা তালিকা তৈরি করা হয়।
‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ইশতিয়াক ফরাজী বলেন, একাধিক শিফট থাকায় প্রশ্নপত্রের মান ঠিক রাখা সম্ভব নয়। আর প্রশ্নপত্র ভিন্ন হওয়ায় কারও কাছে তুলনামূলক সহজ আবার কারও কাছে কঠিন।
ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিয়ে সব শিফটের ফলাফল একসঙ্গে প্রকাশিত হওয়ায় ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরক্ষায় অংশগ্রহণকারী আব্দুল্লাহ আল রাহি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইতিমধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছি, সেখানেও শিফট পদ্ধতি আছে। তবে সেটা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিফট পদ্ধতি থেকে শতগুণে ভালো।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও প্রকাশিত ফলাফল পর্যালোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. নুরুল আলম বলেন, এই ব্যাপারে আলোচনা করে কীভাবে সমস্যা থেকে উত্তরণ করা যায় সেই চেষ্টা করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, জাবিতে শিফট বৈষম্যের শিকার হচ্ছে ভর্তিচ্ছুরা। একই ইউনিটে বিভিন্ন শিফটের প্রশ্ন ভিন্নতার কারণে কোন শিফট থেকে বেশি আবার কোন শিফট থেকে খুবই কম সংখ্যক পরীক্ষার্থী মেধা তালিকায় স্থান পাচ্ছে। ফলে বড় বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা।
“যেমন এবার ‘বি’ ইউনিটের মোট ৩২৬টি আসনের মধ্যে শুধুমাত্র ৫ম শিফট থেকে সর্বোচ্চ ২১৭ জন অপরপক্ষে ২য় শিফট থেকে সর্বনিম্ন ১২ জন মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছেন। এই বিতর্কিত শিফট পদ্ধতি বছরের পর বছর চলতে পারে না।”