মেডিকেলের পরীক্ষায় ৫৭টি প্রশ্নের উত্তর করেছিলেন ছোঁয়া, পেয়েছিলেন কত?
- মুনতাসির রহমান
- প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:০৩ PM , আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১১:০২ AM
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেলের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় নকল না করলেও হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া নামে এক ভর্তিচ্ছুর উত্তরপত্র ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করা হলেও তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। শুধু তাই নয়; শিক্ষার্থীর দাবি করা ওএমআর শিটে ৭৫টি বৃত্ত ভরাটের তথ্যও মিথ্যা বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি সূত্র দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ছোঁয়া। তিনি ওএমআর শিটে ৫৭টি প্রশ্নের উত্তর করেছিলেন। যার অধিকাংশই ভুল উত্তর ছিল। ভর্তি পরীক্ষায় ছোঁয়া পাস করতে পারেননি।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের উচ্চপর্যায়ের এক কর্মকর্তা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার সাথে অনেক বিষয় সম্পৃক্ত। কোনো কেন্দ্রে পরীক্ষা নিয়ে কোনো ঝামেলা হলে সঙ্গে সঙ্গে তা কেন্দ্র সচিবকে অবহিত করার নির্দেশনা ছিল। শিক্ষার্থীর অভিযোগ অনুযায়ী ঘটনাটি অনেক বড়। এত বড় ঘটনা ঘটলেও কক্ষ পরিদর্শক কেন্দ্র সচিবকে অবহিত করবেন না এটা হতেই পারে না।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ছোঁয়া নামের ওই শিক্ষার্থী দাবি করেছেন তিনি ৭৫টি প্রশ্নের উত্তর করেছেন। তবে আমরা তার ওএমআর শিট দেখেছি। সেখানে তিনি ৫৭টি প্রশ্নের উত্তর করেছেন। যার অধিকাংশই ভুল উত্তর ছিল। ভর্তি পরীক্ষায় তিনি ২৭.৫ নম্বর পেয়েছেন।’
এদিকে ছোঁয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় কোনো পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেনি।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো: টিটো মিঞা এই কথা জানান।
অধ্যাপক টিটো মিঞা জানান, ‘অভিযোগকারী শিক্ষার্থীর অভিযোগ অনুযায়ী রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র (শেখ কামাল ভবন, অষ্টম তলা) আমাদের তদন্ত কমিটি পরিদর্শন করেছে। তারা শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছে। সবমিলিয়ে আমরা জানতে পেরেছি, পরীক্ষার দিন ওএমআর শিট ছেঁড়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই ছাত্রীর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার সময় পর্যবেক্ষকের বিরুদ্ধে উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ করেন হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া নামের এক পরীক্ষার্থী। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক কাজী আফজালুর রহমানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর সদস্য সচিব ছিলেন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- ঢাকা মেডিকেল কলেজের থোরাসিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আলম ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামাল হোসেন।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে চলে যাওয়ার সময় এক পরীক্ষার্থী এবং তার পরিবারের সদস্যরা মন্ত্রীর পথ আগলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন, ৯ ফেব্রুয়ারি ভর্তি পরীক্ষার সময় ওই পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলেন পরীক্ষা কেন্দ্রের এক পর্যবেক্ষক।