যে হত্যা আপনাকে কষ্ট দেয়, সেই হত্যাই পাশের রাজনৈতিক মানুষগুলোর আনন্দের খোরাক

সালমান মুক্তাদির
সালমান মুক্তাদির  © ফেসবুক

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি পণ্যের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষের সময় মো. সোহাগ (৪০) নামের এক যুবককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। গত বুধবারের (৯ জুলাই) এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন দেশের জনগণ। জনসমক্ষে ঘটা এ ঘটনায় জনগণ প্রশ্ন তুলছেন, “আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?” এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন সেলিব্রেটিরাও, কঠোর বিচারের দাবি করেছেন তারা। 

শোবিজাঙ্গনের আলোচিত অভিনেতা ও মডেল সালমান মোহাম্মদ মুক্তাদির এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘প্রতিটি রেপ কেস এবং মার্ডার যেটা আপনাকে কষ্ট দেয়, সেটা আপনার পাশের পলিটিক্যাল মানুষগুলাকে আনন্দ দেয়। শুধু কোনও জাতীয় সংকটে কেউ আপনার পক্ষে কথা বলছে বলে মনে করবেন না যে তারা ন্যায়বিচারের পক্ষে আছে। তারা শুধু সুযোগটাকে কাজে লাগাচ্ছে নিজেদের স্বার্থে। মানবতার জন্য নয়, সহমর্মিতার জন্য নয়।

তিনি লিখেছেন, ‘যারা নিঃস্বার্থভাবে সবসময় আপনার পাশে থেকেছে, তাদের অনেকেই তাদের জীবন বা হাত-পা হারিয়ে ফেলেছে। যারা সত্যি দেশের ভালোর জন্য কাজ করতে চায়, তারা কখনও রাজনৈতিক ফলাফলের জন্য কাজ করে না।’ 

সালমান সতর্ক করে লিখেন, ‘যারা আপনার আবেগকে ব্যবহার করে তাদের লক্ষ্য পূরণ করতে চায়, তাদের ফাঁদে পা দেবেন না। তারা চায় আপনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ুন, আপনি অসহায় বোধ করুন। যাতে আপনি তাদেরকেই আপনার ত্রাণকর্তা হিসেবে ভাবেন। শুধু রাজনৈতিক সংগঠনের পেছনে দৌঁড়াবেন না। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত অপরাধ এবং অপরাধীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। তারা কোন দলে সেটা মুখ্য নয়।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘সব অপরাধীই রাজনৈতিক নয়। কিন্তু আমরা হয়তো একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভুলে যাচ্ছি—যদি আমাদের লক্ষ্য হয় শুধু একটা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে যাওয়া, তাহলে আমরা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে যাই। আমরা তখন প্রকৃত অর্থে অপরাধের বিরুদ্ধে নয়, বরং সেই দলের করা অপরাধের বিরুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থেকে যাই। অথচ বাংলাদেশে প্রতিটি অপরাধীর শাস্তি হওয়া উচিত। প্রতিটি অপরাধ দিনের আলোয় আসা উচিত।’

তিনি জনগণকে সতর্ক করে আরওি লিখেন, ‘অন্যের রাজনৈতিক এজেন্ডার ফাঁদে পা দেবেন না। আপনার মানবতা এবং সহমর্মিতাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হতে দেবেন না।’

এরপর তিনি সোহাগ হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে লিখেন, ‘সোহাগের ঘটনাটি ইন্টারনেটে আসতে দুই দিন লেগে গেছে। আপনি বলছেন ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বিএনপি, এনসিপি কেউই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কিছুই জানল না, কেউ কিছু বলল না, অবস্থান নিল না। বিএনপিকে তাদের লোকজনের কার্যকলাপের জন্য কেউ দায়ী করল না। অর্থাৎ এতো বড় বড় সংগঠন থাকার পরও ফেসবুকের কিশোর-তরুণরাই সবচেয়ে আগে তথ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।’


সর্বশেষ সংবাদ