প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র মাসুমের আয় এখন মাসে সাড়ে ৩ লাখ

মাসুম প্রামাণিক
মাসুম প্রামাণিক  © টিডিসি ফটো

ভাল চাকরির হাতছানি দিলেও সেটি না করে বেছে নিলেন ফ্রিল্যান্সিং। শুরুটা ৪০০ টাকা আয় দিয়ে শুরু করলেও এখন মাসে আয় ৩ থেকে ৪ হাজার ডলার বা প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা। এটা মাসুম প্রামাণিকের গল্পের কথা। মাসুম নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আবুল প্রামাণিক ও আছিয়া বেগম দম্পতির ছেলে।

শুরুটা ২০১৩ সালে। কিছু করার ইচ্ছা তার ছোট বেলা থেকেই ছিল। মাধ্যমিকের পরে শুরু করেন টিউশন। কয়েকমাসের মধ্যেই ভাল সুনাম নিয়ে নিজেই কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে শুরু করেন নিজের কোচিং সেন্টার। কয়েকমাস পরে পাবনা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে কম্পিউটার বিভাগে সুযোগ পেয়ে চলে আসেন পাবনায়। পরে ডিপ্লোমা পাস করে ভর্তি হন উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ালিং বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

ক্যারিয়ারের শুরুতে ডোল্যান্সার নামের একটি সাইটে শুরুতে কাজ করেন মাসুম। যেখানে নতুন একটা একাউন্ট নেয়ার জন্য গুনতে হয় ৫০০০ টাকা। ঠিক একমাস পর যখন তার টাকা পাওয়ার পর কিছুটা ভরসা পেলেন। পরে জমানো সব টাকা দিয়ে নতুন একাউন্ট নিয়ে। ২ মাস ভালোই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এক ভুয়া কোম্পানির কাছে নিজের সর্বস্ব হারিয়ে হতাশার সাগরে ডুবতে হয় তাকে। তবুও হাল ছাড়েননি মাসুম প্রামাণিক।

এরপর নিজেকে আরও ভাল করে গড়ে তুলতে শুরু করেন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের উপরে কাজ শেখা। এরপর ওডেস্ক নামে একটি কোম্পানির সাইডে একাউন্ট করে আবারও শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। এর ঠিক দুইমাস পর ৫ ডলারের একটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেন তিনি। এই ৫ ডলারই ঘুরিয়ে দিয়েছে তার জীবনের মোড়।

মাসুম প্রামাণিক জানান, ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৪ বছরে ফ্রিল্যান্সিং এর পাশাপাশি প্রশিক্ষক হিসেবে চাকরি করেছেন স্কিলস টু সাক্সিসিড, লার্নিং এ্যান্ড আরনিং ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট, স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্ট প্রকল্পে।

এরপর ২০১৭ সালে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় একটি টিম নিয়ে আবার নতুন উদ্যমে শুরু করেন। এবার একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি করতে চান তিনি। ২০১৭ সালের শেষের দিকে শুরু হয় এজেন্সি করার লক্ষ নিয়ে আবারো ফ্রিল্যান্সিং পেশায় পুরোদমে যাত্রা। শুরুটা কঠিন হলেও থেমে যাননি। বরং টিমকে দিয়েছেন সাহস, নিজেও ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। স্টোরি আইটি নামে তার বর্তমান কাজ করছেন ১৬ জন তরুণ-তরুণী।

তিনি বলেন, ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ এই দুই বছরে আপওয়ার্কে ২৫০টি, ফাইবারে ২০০টি এবং স্থানীয় ১০০টি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করেছি। বর্তমানে মার্কেটপ্লেসের বাইরে কানাডিয়ান এজেন্সি সিএনএস, আমেরিকান এজেন্সি ব্রাইট হাউস, অস্ট্রেলিয়ান এজেন্সি ভেট এইয়ের সাথে কাজ করছেন। এছাড়া অ্যাফিলিয়েট, অ্যাডসেন্স সাইট করেছি ২০টির বেশি।

মাসুম প্রামাণিক বলেন, প্রথম যে দিন ৫ ডলার আয় করেছিলাম, সেদিনের কথা আজও বারবার মনে করিয়ে দেয়। দিনে প্রায় ৫ বার প্রোফাইলে গিয়ে রিভিউটা দেখতাম, কত ডলার যোগ হয়েছে। তবে আইটি সেক্টরে বর্তমানে অনেক তরুণ-তরুণীরা আসছে। তাদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা নিজেকে দক্ষ করে লেগে থাকতে হবে, সাফল্যে একদিন ধরা দিবেই।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence