ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলে পেট্রোল বিক্রি বন্ধ
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৩৪ AM , আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৩৬ AM
যশোরে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলে পেট্রোল না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটি। একইসঙ্গে শহরের যানজট নিরসনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ ও চৌগাছার বলুহ মেলার অশ্লীলতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম।
সভায় উপস্থাপিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, খুলনা বিভাগের মধ্যে গত আগস্ট মাসে যশোর জেলায় সর্বাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ৯টি দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত ও ৯ জন আহত হন। দুর্ঘটনার মধ্যে ২১ দশমিক ৭৩ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘লাইসেন্সবিহীন ও হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলে পেট্রোল না দিলে কিশোররা বাইক চালাতে পারবে না। এতে দুর্ঘটনা কমবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের সময় লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি ট্রাফিক নিয়ম বিষয়ে ক্লাস নিতে হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করতে হবে। আর ইজিবাইকের লাইসেন্স ভাড়া দেওয়া শতভাগ বন্ধ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: পিরোজপুরে জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৫ এর উদ্বোধন
যশোর পৌর প্রশাসক রফিকুল হাসান বলেন, ‘ইতোমধ্যে ৮০-১০০টি অবৈধ যানবাহন আটক করা হয়েছে। আগামী এক মাস কাউকে ফোন না করতে বলেছি, তাহলে শহরকে যানজটমুক্ত করা সম্ভব হবে। পৌরসভার লাইসেন্স ছাড়া ইজিবাইক শহরে চলতে পারবে না।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার জানান, প্রতিটি সভায় একাধিক ইস্যুতে আলোচনা হওয়ায় সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। এক মাসে একটি সমস্যা ফোকাস করা দরকার। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও প্রমাণের অভাবে মূল গডফাদারদের ধরতে পারা যাচ্ছে না।
সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও পিপি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘ঢাকার চেয়ে যশোরে এখন বেশি যানজট হচ্ছে। দুর্গাপূজা সামনে রেখে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কিশোররা মাদক সেবন করে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে।’
সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, ‘২৫০ শয্যা হাসপাতালে চাহিদার তুলনায় বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। ফলে ঔষুধ সংকট ও জনবল ঘাটতির কারণে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের ভেতরে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রাখা ও বাইরে অবৈধ দোকানের কারণে যানজট তৈরি হচ্ছে।’
চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডের সামনে থেকে ঢাকার রোড ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার অর্ধেক দখল করে বাস থামানো হয়। এতে বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে।’
প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, ‘সিভিল কোর্ট মোড়, দড়াটানা, চৌরাস্তা ও কুইন্স হাসপাতালের সামনে যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ইজিবাইক ও অটোরিকশা কমালে যানজট কমবে।’
জেলা জামায়াতের আমীর গোলাম রসুল বলেন, ‘গ্রামে পূজা উদযাপন নির্বিঘ্নে করতে জামায়াত সহযোগিতা করবে। একইসঙ্গে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এছাড়া পুলিশ প্লাজা নামক প্রতিষ্ঠানের নামে বছরের পর বছর মেলার আড়ালে বাণিজ্য চালানোর অভিযোগ তোলা হয়। এতে ট্রেড লাইসেন্স ও ট্যাক্স না দেওয়ার পাশাপাশি গাড়িখানা রোডে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে সভায় উল্লেখ করা হয়।