ঢাবির হলে ছাত্রলীগের নির্যাতন

ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা, নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগীকে আপোসের প্রস্তাব

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রবেশদ্বার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রবেশদ্বার  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবু তালিবকে নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে বারবার আপোসের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে খোদ তদন্ত কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে।

এ পর্যন্ত তিনবার আবু তালিবকে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য প্রস্তাব দেন তদন্ত কমিটির ওই শিক্ষক। হলের বিষয়টা হলেই সমাধান করার জন্য পরামর্শ দেন তিনি। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু তালিব।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন— আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক মো. আব্দুস সোবহান (উপল তালুকদার), ড. সাইফুল হক, ড. আব্দুল খায়ের ও তানজিল শাহ। তারা চারজনেই ওই হলের আবাসিক শিক্ষক।

আরও পড়ুন: স্কুল শিক্ষিকার রহস্যজনক মৃত্যু, গ্রেফতার স্বামী

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আবু তালিব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তদন্ত কমিটি গঠিত হওয়ার পর স্যার একদিন নয় তিনদিন আমাকে ডেকে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছেন। স্যার বলেন, ‘আমি চাই তুমি অনেক বড় হও। একদিন আসো, বসো। ওদেরও (অভিযুক্তরা) ডাকব। একসাথে বসে একটা মীমাংসা করে দেব।’

তালিব আরও বলেন, স্যার আমাকে যত ধরনের নরম ভাষা আছে সবকিছু দিয়ে বুঝিয়েছেন যে উনি আমার পাশে আছেন এবং আমি যেন বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি কিছু না করি। হলের বিষয়টা হলেই যেন সমাধান হয়ে যায়।

এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক মো. আব্দুস সোবহান (উপল তালুকদার) জানান, তদন্ত কমিটিতে আমরা যারা আছি আমাদের মধ্যে আলোচনা করেই কাজ করতে হয়। আমার কোন সদস্য এই কাজ করেছে তা আমর জানা নেই। এরকম কেউ বলে থাকলে তো আমি জানতাম। আমরা তো ‌এককভাবে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আমি আবু তালিবকে জিজ্ঞাসা করব কে বা কারা তাকে এই কথা বলেছে।

আরও পড়ুন: ‘হলে ২৪ ঘণ্টা কি হয়, এগুলো আমরা দেখব নাকি’

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের ১০ তারিখ আবু তালিবকে নির্যাতন করে হল থেকে বের করে দেয় একই হলের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রলীগের ৪ সক্রিয় কর্মী।

নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন- সমাজকল্যাণ বিভাগের শেখ শান্ত আলম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইমদাদুল হক বাঁধন, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের শাহাবুদ্দিন ইসলাম বিজয় ও আইন বিভাগের নাহিদুল ইসলাম ফাগুন। তারা সবাই বঙ্গবন্ধু হলের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এবং ওই হল ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান শান্তের ছোটভাই হিসেবে পরিচিত। মেহেদী হাসান শান্ত বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী।

এদিকে, ঘটনার ১০ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি তদন্ত কমিটি। তাই এখন পর্যন্ত চাঞ্চল্যকর এই ছাত্র নির্যাতনের ঘটনার কোন সুরাহা হয়নি। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে আসছেন।


সর্বশেষ সংবাদ