হল খোলার পরেও খোলেনি ঢাবির ৪ হলের মেস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)।  © সংগৃহীত

করোনা মহামারি চলাকালীন গেল বছরের শেষের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলো খুলে দেয়া হলেও বন্ধ রয়েছে বেশ কয়েকটি হলের মেস। যেখানে শিক্ষার্থীরা কম দামে তুলনামূলক ভাল খাবার খেতে পারতেন। বছরের শুরুর দিকে অর্থাৎ গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে একাডেমিক কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রিয় ক্যাম্পাস ঢাবি আঙ্গিনা আবারো মুখরিত হয়ে উঠে। কিন্তু হল খোলার চার মাস হয়ে গেলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য খাবারের প্রিয় জায়গা মেস আজও চালু হয়নি।

শুক্রবার (১১ মার্চ) দুপুরে সরিজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন আবাসিক হলের ক্যান্টিনগুলো খোলা রয়েছে তবে বন্ধ আছে বেশ কয়েকটি হলের মেস। এর মধ্যে রয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কবি জসিম উদ্দীন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন: গণচীনের উন্নয়ন নিয়ে নতুন বই ‘নয়াচীনের সাফল্যের মুকুটে সাতটি পালক’

এদিকে মেসে খাবারের ব্যবস্থা চালু না করায় ক্যান্টিনগুলোতে খাবারের জন্য শিক্ষার্থীদের বেশি ভিড় পড়ছে। এতে হলের কিছু ক্যান্টিনে শিক্ষার্থীদের নিরুপায় হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে জিয়া হলের ক্যান্টিনে প্রায় সব সময়ই ভিড় লেগে থাকে। অন্যান্য হলের খাবারের ব্যবস্থা নাজুক হওয়ার কারণে এই হলে একটু ভাল খাবারের জন্য অন্যান্য হল থেকে ছুটে আসেন শিক্ষার্থীরা। 

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ক্যান্টিন ম্যানেজার ডালিম জানান, ‘করোনার বন্ধের পর ক্যান্টিনে কর্মচারীরা ফিরলেও সেই আগের মত কাজের উদ্যম আর নেই। তাই অনেক সময় ঠিকমতো খাবার দিতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।

অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের বাড়তি চাপ প্রসঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ক্যান্টিন ম্যানেজার জনাব শাহাবুদ্দীন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, যে দিন ক্যাম্পাস খোলা থাকে বিশেষ করে দুপুর বেলায় ভিড় পড়ে সব থেকে বেশি। আগে মেসের সঙ্গে ক্যান্টিন সংলগ্ন দেয়াল ছিল তাই সংকুলান করতে আরও সমাস্যা হতো কিন্তু বর্তমানে দেয়াল না থাকায় ( বর্তমানে কাঁচের পার্টিশান দেয়া আছে) একপাশে জায়গা বাড়ানো যায়।

আরও পড়ুন: বল ছাড়ার আগে ক্রিজ ছাড়লে হবে আউট, আসছে নতুন নিয়ম ‘মানকাডিং’

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের মাস্টার্সে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থী জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হওয়ায় আমাদের হলে চলে আসতে হয়েছে। কিন্তু মেস না খোলায় আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শুধু অন্যান্য হলেই নয় এমনকি ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে হোটেল, রেস্টুরেন্টে খেয়ে আসতে হচ্ছে। এটা যেমন সময়সাপেক্ষ তেমনই ব্যায়বহুল।

এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন জানান, আমার হলের ক্যান্টিন খোলা রয়েছে। তবে মেস চালু করা সম্ভব হয়নি। মেস চালুর জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি নানাভাবে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। দফায় দফায় সদস্য আহ্বান করে রুমে রুমে ফরম বিলি করার কথাও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের শেষের দিকে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়লে তার রেশ এসে পড়ে বাংলাদেশেও। এরপর ২০২০ সালের মার্চে করোনার সংক্রমণ আতঙ্কের মধ্যেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা ভেবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের জন্য তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে ভাল খাবারের জায়গা হলের মেস। তারপর দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর ২০২১ সালের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেওয়া হলেও আজ অবধি বন্ধ রয়েছে ওই চারটি হলের মেস।


সর্বশেষ সংবাদ