চবিতে শিক্ষক হতে লাগবে ১৬ লাখ টাকা!

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে এক প্রার্থীর কাছে ১৬ লাখ টাকা দাবি করেছেন কয়েকজন। তাদের মধ্যকার ফোনালাপ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে সারাদেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

২০১৯ সালের ১৬ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে প্রভাষক পদে তিনজনকে নিয়োগ দিতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর এ নিয়োগের সিলেকশন বোর্ড আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তিনজন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়ম ভেঙে পাঁচজনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় সিলেকশন বোর্ডে। চবির সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষার জন্য কার্ড ইস্যু করতে হয় সাত কর্মদিবস সময় দিয়ে। কিন্তু নজিরবিহীনভাবে তিন থেকে চার দিন সময় দিয়েই প্রভাষক পদের প্রার্থীদের কার্ড ইস্যু করা হয়। পরে একজন প্রার্থী উচ্চ আদালতে অনিয়মের বিরুদ্ধে আবেদন করে। আদালত বিষয়টি নিষ্পিত্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিলেও আমলে নেয় নি কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি ফাঁস হওয়া চারটি কল রেকর্ডে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে যারা কথা বলেছেন তাদের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক শিরীণ আখতারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) মোকাররম হোসেন রবীন, অপরজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টস শাখার কর্মচারী আহমদ হোসেন এবং ফার্সি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জসীম উদ্দিন বলে জানা গেছে।

ফোনালাপে প্রার্থীর সঙ্গে পিএস খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শোনা যায়। ওই ফোনালাপে একজন আবেদনকারীকে রবীন বলেন, ‘আমি ম্যাডামের সাথে দেখা হলে তোমার কথা বলব। ম্যাডাম যেভাবে বলে সেভাবে হবে। তুমি আমার এলাকার বলেই তোমাকে টান দিলাম। এখন প্রেক্ষাপট এটাই এবং এটাই বাস্তবতা।’

আরও পড়ুন- মেয়াদ শেষ করাই একমাত্র সফলতা, হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ 

টাকার অভাবে নিজের স্ত্রীকে শিক্ষক পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে পারেননি দাবি করে রবীন বলেন, ‘আমার স্ত্রীর জন্য চেষ্টা করেছি, এটা (টাকা) দিতে পারিনি বলে হয়নি। আমার স্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছে। বর্তমানে সে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আছে। আমি এখানে থাকা সত্ত্বেও তাকে আনতে পারিনি শুধু এ কারণে। বাস্তবতা যেটা সেটা আমি তোমাকে ইঙ্গিত করলাম।’

আরেকটি ফাঁস হওয়া ফোনালাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব নিয়ামক শাখার বৃত্তি বিভাগের কর্মচারী আহমেদ হোসেনকে এক নিয়োগ প্রার্থীকে বলতে শোনা যায়, ‘ভিসি ম্যাডাম অনেক টাকার বিনিময়ে এ পদে এসেছেন। এখানে লেনদেন ছাড়া চাকরি হবে না। চাকরি পেতে হলে টাকা দিতে হবে। আমি আপনাকে ভিসি ম্যাডামের সাথে বসিয়ে দিব।’

নিয়োগ প্রার্থী টাকার পরিমাণ কত জানতে চাইলে আহমেদ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষক পদে ২০ লাখ লাগবে। আপনি চট্টগ্রামের বলে ১৬ ধরা হয়েছে। এখানে এখন তৃতীয় শ্রেণিতে চাকরি পেতে ১২ লাখ এবং চতুর্থ শ্রেণির ঝাড়–দার ও মালীর চাকরি পেতেও ৮ লাখ নেওয়া হচ্ছে। এ টাকাগুলো দিয়ে ভিসি ম্যাডামকে... ও... দপ্তর ম্যানেজ করতে হয়।’

এদিকে ফোনালাপগুলো নিজেদের নয় বলে দাবি করেছেন রবীন ও আহমদ হোসেন। তারা দাবি করেন, তাদের বিপদে ফেলার জন্য এগুলো বানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন- ৫৩ শতাংশ ছাত্রীই যৌন হয়রানির শিকার

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মনিরুল হাসান বলেন, অডিও ক্লিপটির বিষয়ে তারা হাটহাজারী থানায় অভিযোগ করেছেন। কারো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence