চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

বন্ধ ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ বিল ৪ কোটি, খেলাধুলা ব্যয় ২০ লাখ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের মার্চ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। এ সময় শিক্ষার্থীরা সশরীরে অংশ নিতে পারেনি শ্রেণি কার্যক্রমে, আবাসিক হলগুলোও ছিল বন্ধ। ফলে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়নি তেমন একটা। তবুও ২০২০-২১ অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যয় দেখিয়েছে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও বিদ্যুৎ খাতে বিপুল অঙ্কের এ খরচ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। যেখানে পুরোদমে ক্যাম্পাস খোলা থাকা অবস্থায় ২০১৯-২০ অর্থবছরের বিদ্যুৎ বিল ছিল ৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

একইভাবে গত অর্থবছরে খেলাধুলার ব্যয় দেখানো হয়েছে ২০ লাখ টাকা। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এ সময়ে কোনো খেলাধুলা হয়নি।

বাজেট বই বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত অর্থবছরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পোশাক খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯৫ লাখ টাকা। যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ বেশি। শাটল ট্রেন একদিনের জন্যও না চললেও এই খাতে ভাড়া বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ২০ লাখ টাকা।

গত অর্থবছরে আরও বেশ কিছু খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় দেখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে কোনো খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে স্বাভাবিক সময়ের দ্বিগুণ। আবার কোনো খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে অনেকটা স্বাভাবিক সময়ের মতোই।

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সীমিত পরিসরে অনাড়ম্বরভাবে উদ্‌যাপিত হয়েছে বিভিন্ন দিবস ও অনুষ্ঠান। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় এসব খাতে ব্যয় দেখিয়েছে স্বাভাবিক সময়ের মতোই। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্‌যাপনে ৫ লাখ, জাতীয় দিবস উদ্‌যাপনে ১৫ লাখ ও অন্যান্য অনুষ্ঠান উদ্‌যাপনে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২০ লাখ টাকা। ওষুধপত্রে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৮ লাখ টাকা, আপ্যায়ন বাবদ ৩৭ লাখ, ইন্টারনেট বাবদ ৬৫ লাখ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ গফুর বলেন, করোনার মধ্যে তো আবাসিক এলাকা ছাড়া সবকিছুই বন্ধ ছিল। তবুও এত টাকা বিদ্যুৎ বিল আমাদের কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে ৷ হলের বাল্ব ক্রয়, শাটলের ভাড়াসহ আরও বেশ কিছু খাতের ব্যয়ও অস্বাভাবিক লেগেছে।

চবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, এগুলো প্রণয়ন করে হিসাব নিয়ামক সাহেব। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যাখ্যা পাবেন।

এ বিষয়ে চবির হিসাব নিয়ামক (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুল আলম চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ বিলের ওপর আমাদের কোনো হাত নেই। বিদ্যুৎ কোম্পানি যে বিল দিয়েছে সেটা পরিশোধ করা হয়েছে। পোশাক ভাতা সরকারি নিয়মানুযায়ী দেওয়া হয়। সরকার পোশাকের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বেশি ব্যয় হয়েছে। খেলাধুলা কিছু ইনডোরে হয়েছে আর কিছু তার আগের বছরের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। শাটল ট্রেনের ভাড়াও আগের বছরে কিছু বকেয়া ছিল। তা দেওয়া হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ