ঢাবির বন্ধ হলে থাকছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা

জহুরুল হক হলের ৩১৫ নম্বর রুম। বুধবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে তুলা ছবি
জহুরুল হক হলের ৩১৫ নম্বর রুম। বুধবার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে তুলা ছবি  © টিডিসি ফটো

করোনা মহামারির মধ্যে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পরপরই সব আবাসিক হল ত্যাগ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এই বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে হলে কোনো আবাসিক শিক্ষার্থীর অবস্থানের অনুমতি না থাকলেও কয়েকটি হলে থাকছেন ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

জানা গেছে, করোনার এই বন্ধে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা তার কর্মীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের কয়েকটি রুমে থাকছেন। সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) ও জগন্নাথ হলেও ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক এসএম রিয়াদ হাসানের নেতৃত্বে প্রায় ২০ জন কর্মী হলের ২২১, ২২২, ৩১৩ ও ৩১৫ নম্বর সহ আশেপাশের কয়েকটি রুমে অবস্থান করতে দেখা যায়।

গত বুধবার দিনগত রাত দেড়টায় ওই হলের গেটে কড়া নাড়লে এক নিরাপত্তকর্মী এসে এই প্রতিনিধিকে কোথায় যাবে জানতে চায়। ‘রিয়াদ ভাইয়ের’ রুমে যাবে বললেই হল গেটের তালা খুলে দেন সেই নিরাপত্তকর্মী৷

হলের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, দ্বিতীয় তলায় অনেকে রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷ তাদের মধ্যে একজনকে চাল পরিষ্কার করতে দেখা যায়। আবার কেউ কেউ রুমে গান শুনছেন।

এই প্রতিনিধি সেখানে গেলে তারা বিভিন্ন প্রশ্ন করে জেরা করতে থাকেন। তবে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ হাসানের পরিচয় দিয়ে কথা বললে প্রতিনিধি ছেড়ে দেন তারা। অন্যদিকে, হলের ৩১৫ নম্বর রুমে সাত-আটজনকে আড্ডা দিতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ হাসান ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ছাত্রলীগের মাসব্যাপী ইফতার বিতরণের কাজে এবং রুম থেকে বিভিন্ন জিনিস আনার জন্য হলের দিকে যাওয়া হয়৷ তবে রাতে থাকা হয় না। হলে মাঝেমধ্যে যাওয়া মানে তো থাকা নয়৷

হলে অবস্থা করার বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগটি ওভাবে সত্য নয়।

পরে তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন রিপোর্টারও (সাংবাদিক) হলে থাকেন৷ তবে তিনি কারও নাম বলতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।

হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি কয়েকদিন আগে জানার পর হাউজ টিউটরদের জানাই এবং আমি তাদেরকে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু তারা এখনো ছেড়ে যাননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বন্ধের সময় কোন শিক্ষার্থীর হলে থাকা কোনোভাবেই বৈধ নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.  এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, বিষয়টি সর্ম্পকে আমি অবগত নয়। হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলেও অবস্থান করেন হল সংসদের সদ্য সাবেক ভিপি ও তার কর্মীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করে ছাত্রলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা জানান, করোনার বন্ধে এসএম হলে থাকেন হল সংসদের সাবেক ভিপি এম এম কামাল উদ্দীন।

এই বিষয়ে কামাল বলেন, ছাত্রলীগের উদ্যোগে মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ চলছে। সেজন্য দিনের বেলা হলে যেতে হয় এবং ইফতার বিতরণ কর্মসূচির পর কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে, আড্ডা দিয়ে যে যার মত করে চলে যাই।

তিনি আরও বলেন, আমি রাতে হলে থাকি না। আমার বাসা আছে৷ আমি বাসায় থাকি।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলেও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন৷ এই প্রতিবেদক ওই হলে খোঁজ নিতে গেলে হলের নিরাপত্তাকর্মী ‘এখানে কেউ থাকেন না’ বলে জানান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence