রাকসুর ভোটগ্রহণ শুরু
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪৫ AM , আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৭ AM
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯টি অ্যাকডেমিক ভবনে স্থাপিত ১৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সরেজমিনে দেখা যায়, আজ সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা ভোট কেন্দ্রের সামনে লাইন ধরেছেন। একে একে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করছেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসের সদস্যরা ভোট কেন্দ্রের ভেতর ও বাহিরে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকগুলোতে বিএনসিসি- স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশে শিক্ষার্থীদের পরিচয় পত্র, অন্যদের পাস কাড চেক করছেন।
জানা গেছে, এবারের রাকসু নির্বাচনে ২৮ হাজার ৯০১ জন ভোটার ৮৬০ জন প্রার্থীকে ভোট দেবেন।
মোট ভোটারের ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ নারী, ৬০ দশমিক ৯০ পুরুষ। কেন্দ্রীয় রাকসুর ২৩টি পদে মোট ৩০৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে রয়েছে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস), সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ। সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধির ৫টি পদে ৫৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অন্যদিকে ১৭টি হল সংসদের ২৫৫টি পদে মোট ৫৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রত্যেক শিক্ষার্থী সবমিলিয়ে মোট ৪৩টি ভোট দেবেন।
নির্বাচনে মোট ১০টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল আছে মাত্র দুটি–ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল। অন্যগুলো হলো: বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ’, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্র ফেডারেশনের ‘রাকসু ফর রেডিক্যাল চেঞ্জ’, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত ‘সচেতন শিক্ষার্থী পরিষদ’ ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) ‘অপরাজেয় ৭১, অপ্রতিরোধ্য ২৪’, সাবেক দুই সমন্বয়কের নেতৃত্বে ‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’, নারী ভিপি প্রার্থীর নেতৃত্বে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’, ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট’ ও ‘ইনডিপেনডেন্ট স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স’।
এদিকে নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত ২১২ জন শিক্ষকের মধ্যে ১৭ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং বাকি শিক্ষকেরা সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। আর ৯১ জন কর্মকর্তা পোলিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্বাচনে ২ হাজার পুলিশ সদস্য, ৬ প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র্যাব পুরো ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছেন। এ ছাড়াও নির্বাচনপ্রক্রিয়ার প্রতিটি কার্যক্রম সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুসারে, প্রতি বছর রাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর ৭২ বছরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে মোটেই ১৬ বার।
এর মধ্যে প্রথম ২বার ভোট হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন (রাসু) নামে; বাকি ১৪ বার হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নামে।
এখন পর্যন্ত যে ১৬ বার ছাত্র সংসদ গঠন হয়েছে, তার মধ্যে ১০ বারই হয়েছে পাকিস্তান আমলে। স্বাধীন দেশে ৫৫ বছরে ৭ম বারের মতো আজ ভোট দিচ্ছেন মতিহারের শিক্ষার্থীরা।