২৪ ঘণ্টা ধরে অনশনে চবির ৯ শিক্ষার্থী, প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর অভিযোগ

২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন চবির ৯ শিক্ষার্থী
২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন চবির ৯ শিক্ষার্থী  © টিডিসি ফটো

সাত দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই নারীসহ ৯ শিক্ষার্থী। অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে বাম সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ কর্মসূচি পালন করছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টা থেকে প্রক্টর অফিসের সামনে অনশনে বসেন তারা। 

অনশনরত ৯ শিক্ষার্থী হলেন, বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, সংগীত বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, একই বিভাগের দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহ জান, বাংলা বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া, মার্কেটিং বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, সংগীত বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে এবং বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।

তাদের সাত দফা দাবি হলো- প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা করা এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সকলপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা ও নিরাপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা, বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা ও ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা এবং সিন্ডিকেটকর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ করে বাস্তবায়ন করা।

আরও পড়ুন: হাতে গোনা হবে জাকসুর ভোট, ছাত্রদল-শিবিরের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাইম শাহ জাহান বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে সাত দফা দাবি দিয়েছিলাম। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে আমাদের বিভিন্ন ভাবে বোঝানো হয়। মূলত দাবির কিছুই পূরণ হয়নি। দাবি আদায়ে আমরা আমরণ অনশনে বসেছি। ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে এখনও দেখা করা হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমরা আমাদের দাবিতে অটল।’

অনশনরত নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া সিকদার বলেন, ‘গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনার দায় প্রক্টরিযাল বডির। তারা সঠিক সময়ে রেসপন্স করলে সংঘর্ষ অতিমাত্রায় ছড়াতো না। তাদের পদত্যাগসহ আমরা প্রশাসনের কাছে সাত দফা দাবি জানিয়েছিলাম। এছাড়াও আমরা কয়েকদিন ধরে টানা আন্দোলন করছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের কোনো দাবি মেনে নিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে গতকাল থেকে অনশনে বসেছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তাদের দাবিগুলো পূরণের জন্য কাজ করছি। কাজ চলমান বলার পরও যদি তারা না বোঝে, তাহলে কি করা যেতে পারে?’


সর্বশেষ সংবাদ