সাম্যের বড় ভাই 

‘আমি ৫০ বার রক্ত দিলাম, আর আমার ভাইটা রক্তক্ষরণে মারা গেল’

বড় ভাইয়ের সঙ্গে সাম্য
বড় ভাইয়ের সঙ্গে সাম্য  © সংগৃহীত

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য। তার বড় ভাই এ. এম. আমিরুল ইসলাম বলেছেন, ‘আমি ৫০ বার রক্ত দিলাম, আর আমার ভাইটা রক্তক্ষরণে মারা গেল’। আজ বুধবার (২১) ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে এই আক্ষেপের কথা লিখেছেন ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা।

ঢাবির সাবেক ছাত্র আমিরুল ইসলাম বলেন, স্রোতের বিপরীতে রাজনীতি করার কারণে একটা বড়ভাই মানসিকতা তৈরি হয়েছিল। নানা মতের পথের বর্ণের জুনিয়রদের কাছে ডাকা, পাশে রাখার প্রবণতা ছিল। কিন্তু আমি আমার রক্তের ছোট ভাইয়ের কাছে কখনোই সেই বড় ভাই হয়ে উঠতে পারি নাই।

তিনি বলেন, একবার মিছিলে দেখি শাম্মু (সাম্য), হাতে জিয়াউর রহমানের প্ল্যাকার্ড। সে তখন বিসিআইসি কলেজের প্রথম বর্ষে পড়ে। মিরপুরের কোন এক ওয়ার্ড নেতার ছোট ভাই সে, তার সাথে নিয়মিত মিছিল মিটিং করে। আমাকে এড়িয়ে থাকে, কিন্তু আজ সামনে পরে গেছে। খুব কড়া করে ধমক দিলাম। ভার্সিটিতে ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত যেন রাজনীতি না করে।

সাম্যের ফেসবুক আইডি তিনি খুলে দিয়েছেন উল্লেখ করে লেখেন, শাম্মুর (সাম্য) প্রথম ফেসবুক আইডি আমি খুলে দিয়েছিলাম। মূলত আম্মার সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য। শাম্মু তখন উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজে অষ্টম বা নবম শ্রেণিতে পড়ে। কলেজে উঠে নিজে নতুন আইডি খোলে। সেই আইডিতে সবাইকে এড করে আর আমাকে করে ব্লক। যেন ওর উপর নজরদারি করতে না পারি।

স্ট্যাটাসের শেষে তিনি লিখেন, আমি নিয়মিত রক্ত দিই। কিছুদিন আগে ৫০তম বার রক্ত দিলাম। আর আমার ভাইটা ছুরির আঘাতে রক্তক্ষরণ হয়েই মারা গেল।

গত ১৩ মে রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক। এ ঘটনার পরপরই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে, গতকাল মমঙ্গলবার (২০ মে) পর্যন্ত এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাবি প্রশাসন।


সর্বশেষ সংবাদ