রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হল বন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

রাবি লোগো
রাবি লোগো

সমালোচনা থাকা সত্ত্বেও ঈদের ছুটিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে অনড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। দেশের বেশ কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছুটিতে আবাসিক হল খোলা রাখলেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে সাত দিনের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭টি হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল (২৭ মার্চ) দুপুর ১২টার মধ্যে আবাসিক হলে অবস্থানরত সকল শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করতে হবে। ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ভ্যাকেন্ট থাকবে হলগুলো। গত ৪ এপ্রিল সকাল ১০টায় আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হবে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা। বেশ কিছু বিভাগে ছুটির পরপরই পরীক্ষা আছে; এছাড়া বিসিএস, ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যও অনেকেই ঈদের ছুটিতে বাড়ি যান না। সামাজিক মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পোস্ট করে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এছাড়া ছুটিতে আবাসিক হল খোলা রাখার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। 

রাবি ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন জানান, ঈদে হল খোলা রাখার দাবিতে প্রশাসন ভবনের সামনে আজও (২৬ মার্চ) অবস্থান কর্মসূচি চলবে। হল খোলা না রাখলে ২৭ মার্চ থেকে প্রশাসন ভবনের সামনে রাত্রি যাপন করা শুরু হবে। আসুন আমরা যারা হলে অবস্থান করতে চাই, জোরালো আন্দোলন গড়ে তুলে প্রশাসনকে হল খোলা রাখতে বাধ্য করি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ছুটির সময়গুলোতে আবাসিক হল বন্ধ নিয়ে এর আগেও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছে। ঢাবি, রাবি ও চবিসহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবাসিক হল খোলা রাখলেও নিরাপত্তার অজুহাতে ঈদের ছুটির দিনগুলোতে আবাসিক হল বন্ধ রাখতো তৎকালীন প্রশাসন। 

তবে ২০২২ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের প্রবল দাবির মুখে, বেশ লম্বা সময় পর ঈদের ছুটিতে আবাসিক হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সে সময়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদ। এরপর থেকে ঈদের ছুটিসহ কোনো ছুটিতেই আবাসিক হল বন্ধ করেনি প্রশাসন। সবশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন গত বছরের ১৬ জুলাই আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন প্রশাসন।

সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তারিফ হাসান মেহেদী এ প্রসঙ্গে বলেন, যে স্পিরিট থেকে এই প্রশাসনের সৃষ্টি, সেই স্পিরিট থেকে প্রশাসন হেলে পড়েছে। একটা কল্যাণকর সিদ্ধান্ত না নিয়ে, প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে হল বন্ধ করা কখনোই ভালো কিছু হতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদ অবশ্য বলছে, দেশের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সামগ্রিক বিষয় চিন্তা করেই এ বছরের ঈদের ছুটিতে হলগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে।

প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমানকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বর্তমানে চারদিকে এক ধরনের অস্থিরতা ও নিরাপত্তা সংকট বিরাজ করছে, যা আমাদের সবার জন্য উদ্বেগের বিষয়। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

হল প্রশাসনও মনে করছে এ সময়ে হল খোলা রাখলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তাই সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও হলগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের স্বার্থে আগামী ২৮ মার্চ থেকে  ৩ এপ্রিল— সর্বমোট ৭ দিন হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কিছু শিক্ষার্থীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে শহীদ হবিবুর রহমান হলের এ প্রাধ্যক্ষ জানান, আমি নিজেও একটি হলের প্রভোস্ট। এখনও পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী আমাকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে জানায়নি যে সে ঈদের ছুটিতে আবাসিক হলে থাকতে চায় কিংবা তার থাকার সমস্যা হচ্ছে। কারো সমস্যা হলে আমাদের জানাতে পারে; আমরা সেক্ষেত্রে অল্টারনেটিভ কিছু করার চেষ্টা করব।

ছুটিতে আবাসিক হল বন্ধ রাখার প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, আমি এ বিষয়টি নিয়ে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের সাথে কথা বলেছি। মূলত নিরাপত্তা ইস্যুতেই প্রাধ্যক্ষগণ কোনো রিস্ক নিতে চাচ্ছেন না; সেজন্যই ঈদের ছুটিতে আবাসিক হলগুলো সাত দিনের জন্য ভ্যাকেন্ট করা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence