শিক্ষকদের আন্দোলনের বলি রাবি শিক্ষার্থীরা, সেশনজটের শঙ্কা
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৪ PM , আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩১ PM
সার্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। এরই অংশ হিসেবে সোমবার (১ জুলাই) থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ অচলাবস্থার কারণে সেশনজটের শঙ্কা করছেন রাবি শিক্ষার্থীরা। তবে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে তা মেকআপ করার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের পাশাপাশি হল প্রাধ্যক্ষের অফিস, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বন্ধ থাকবে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অসংখ্য শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ পরান বলেন, শিক্ষকরা যেহেতু ক্লাস-পরীক্ষা পুরোপুরি বন্ধ করে আন্দোলন করছে সেহেতু এই আন্দোলন অবশ্যই শিক্ষার্থীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। শিক্ষকদের আন্দোলন যৌক্তিক হলেও কোনো অগ্রসর চিন্তাশীল রাষ্ট্রে এভাবে শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ রাখা নিঃসন্দেহে অযৌক্তিক। এতে আমাদের মধ্যে সেশনজটের শঙ্কা যেমন বাড়ছে তেমনি আমরা শিক্ষামূলক কার্যক্রম থেকেও ক্রমে দূরে সরে পড়ছি।
আরবি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী নুরুল্লাহ আলম নুর বলেন, শিক্ষকদের আন্দোলন এবং কর্মবিরতির ফলে আমরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। ক্লাস ও পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় আমাদের শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে, যা সেশনজটের সম্ভাবনাকে অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে পারে। গ্রন্থাগার বন্ধ থাকায় পড়াশোনা ও গবেষণা কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। পাশাপাশি অনলাইন এবং সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধ থাকায় কর্মজীবী শিক্ষার্থীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে আমাদের উচ্চশিক্ষা এবং ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ব্যাহত হবে এবং মানসিক চাপ বাড়বে। তাই শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করা অত্যন্ত জরুরি।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, সেশনজটের মতো কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করছি। আর যদি হয়ও তাহলে আমরা তা এক্সট্রা ক্লাস নেওয়ার মাধ্যমে মেকআপ করার চেষ্টা করব। ছুটির দিনে আমরা ক্লাস নিয়ে এটা করতে পারি। করোনা পার করে যেমন আমরা সবকিছু গুছিয়ে নিতে পেরেছি এবারও পারব।
তিনি আরো বলেন, এ আন্দোলন কিন্তু আমরা শিক্ষকদের জন্য করছি না; আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্যই করছি।বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচানোর জন্য করছি। গত তিন মাস ধরে বিভিন্ন প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি করে আসছি; তাতে কোনো কাজ হয়নি। কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করেননি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে এ আন্দোলনে নেমেছি।