ঢাবি ব্যান্ড সোসাইটির নেতৃত্বে ইনজামাম-রুদ্র
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:০০ PM , আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৫৩ AM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ব্যান্ড সোসাইটি (ডিইউবিএস) এর নতুন কমিটিতে সভাপতি হিসেবে মো. ইনজামাম উল ইবনে কবীর এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রুদ্র প্রসাদ রায় নির্বাচিত হয়েছে। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির মডারেটর ড. মাহবুবুর রহমান লিটু নতুন এ কমিটি ঘোষণা করেছেন। এ সময় সংগঠনটির সদ্য বিদায়ী সভাপতি শিবলী হাসান জয়, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান এবং নতুন কমিটির সভাপতি মো. ইনজামাম উল ইবনে কবীর এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রুদ্র প্রসাদ রায়সহ অন্যান্য সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি ঘোষণাকালে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠকালে সংগঠনটির মডারেটর ড. মাহবুবুর রহমান লিটু বলেন, ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রথম ক্যাম্পাসভিত্তিক ব্যান্ড মিউজিকাল সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি (ডিইউবিএস) প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি একটি স্বাধীন এবং স্বনির্ভর সাংস্কৃতিক সংগঠন। সংগঠনটিতে বিদ্যমান যে গঠনতন্ত্র রয়েছে সেই আলোকে সংগঠন পরিচালিত হয়ে থাকে। আমরা আশা করি নতুন এই কার্যকরী পরিষদ আপনাদের সকলের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি তথা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আরও বেশি সমৃদ্ধ করবে এবং তরুণদেরকে সাথে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে স্মার্ট ক্যাম্পাস বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়াও, কমিটিতে সহ সভাপতি হিসেবে আছেন মো.ইফতেখারুল দিনার ও চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সারিকা মাসতুরা, সাংগঠনিক সম্পাদক রিদোয়ান সালেহ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক রিফাত হোসেন দিগন্ত, অর্থ সম্পাদক শিরিয়া শবনম রাহা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ফাহিমা নাসরিন, অনুষ্ঠান সম্পাদক সিয়াম মাহবুব, শৃঙ্খলা সম্পাদক মুর্তুজা হাহান খান, মানবসম্পদ সম্পাদক নুসরাত জাহান, আপ্যায়ন সম্পাদক সালমান শাহরিয়ার, প্রশিক্ষণ সম্পাদক জায়েদ হাসান এবং সদস্য পদে অনিদ হাসান, সামি আজমাইন, সোহানুর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ক্যাম্পাসে ব্যান্ড সঙ্গীতের চর্চা, প্রসার এবং সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পের উত্থানকে প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে রুখে দেয়ার অঙ্গীকার নিয়ে ক্যাম্পাস ভিত্তিক ব্যান্ড অর্জন এর দলনেতা লালন মাহমুদ এবং দুর্গ ব্যান্ডের দলনেতা আব্দুল্লাহ আল ফারাবির হাত ধরে একই বছরের ৪ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের প্রথম ক্যাম্পাসভিত্তিক ব্যান্ড মিউজিক্যাল সংগঠন "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি"।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগঠনটি বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন, ব্যান্ড সঙ্গীতের বিষয়ক সেমিনার আয়োজন, ভাষার মাসে "আমার ভাষার গান" আয়োজনসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পছন্দের সংগঠনে পরিণত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি লালন মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফারাবীর তত্ত্বাবধানে প্রকাশ পায় বাংলাদেশের প্রথম ক্যাম্পাস ভিত্তিক ব্যান্ড মিক্সড অ্যালবাম "অপরাজেয়", যা ক্যাম্পাসভিত্তিক ব্যান্ড আন্দোলনে বাংলাদেশে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এছাড়াও সংগঠনটি বিভিন্ন জাতীয় ও সামাজিক সংকটে আয়োজন করে আসছে বিভিন্ন চ্যারিটি কনসার্ট। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ট্রিবিউট টু স্যার লাকি আখন্দ, কনসার্ট ফর অহন, বন্যার্তদের সাহায্যার্থে আয়োজিত কনসার্ট ইত্যাদি।
করোনা মহামারীর সময় দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমেও কিছুটা ছেদ পড়ে। সেই অবস্থান থেকে উত্তরণের জন্য ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর সংগঠনটির তৃতীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হয়। শিবলী হাসান জয় এবং কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৭ জনের সেই নির্বাহী পরিষদ করোনাকালীন অচলায়তন ঘুচিয়ে পুনরায় সংগঠনটিকে গতিশীল করেন এবং তাদের গত এক বছরের কর্মকাণ্ড শুধু ক্যাম্পাসের গণ্ডিতেই নয়, বরং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সংগীত প্রেমীদের কাছে পৌঁছে গেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি, ক্লাবরুম সংস্কার ছাড়াও দশটির বেশি অনুষ্ঠানের সফল আয়োজন করে এই নির্বাহী পরিষদ।
একটি স্বাধীন ও স্বনির্ভর সংগঠন হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি সংগঠনটিতে বিদ্যমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পরিচালিত হয়। সেই আলোকে সংগঠনকে নিজস্ব গতিতে গতিশীল রাখতে ইনজামাম উল ইবনে কবীর কে সভাপতি এবং রুদ্র প্রসাদ রায়কে সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন করে সংগঠনের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য ১৭ সদস্যের কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হয়েছে।
নবনির্বাচিত পরিষদ আশা করেন, টিএসসিভিত্তিক সকল সংগঠনের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যান্ড সোসাইটি কাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলকে আরও বেশি সমৃদ্ধ করবে এবং তরুণদের সাথে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে স্মার্ট ক্যাম্পাস বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।