এবারও ইউজিসির র্যাংকিংয়ে তলানিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৩, ১০:৪৪ PM , আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:৫২ PM
২০২২-২৩ শিক্ষাবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) মূল্যায়নের ফলাফল প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এতে দেশের ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকায় ৫৯ দশমিক ২৬ স্কোর পেয়ে ৩৪তম হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। গতবছর ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রাবির অবস্থান ছিল ৪৪তম।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ইউজিসির সচিবালয় এবং প্রশাসন বিভাগের সচিব ড. ফেরদৌস জামান স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এ নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা হতাশা ও ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। অনেকেই বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবহেলাতেই রাবির অবস্থান তলানিতে গেছে। কারণ যেসব তথ্য ইউজিসি চেয়েছিলেন সেগুলো ঠিকমতো সরবরাহ করা হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত সমস্যাগুলোর সমাধান না করাও আর একটা বড় কারণ। এসব ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হলেও প্রতিবেদন জমা হয় না।’
ইউজিসি সূত্রে জানা যায়, ছয়টি বিষয়ে ১০০ নাম্বারের ভিত্তিতে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। কৌশলগত উদ্দেশ্যে ৭০ নাম্বার, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনায় ১০, ই-গভর্ন্যান্স বা উদ্ভাবন পরিকল্পনায় ১০, অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনায় ৪, সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি কর্মপরিকল্পনায় ৩ এবং তথ্য অধিকার কর্ম পরিকল্পনায় ৩ নাম্বার রয়েছে।
প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, ২০২২-২০২৩ শিক্ষা বছরে ১০০ পেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম, ৯৭ দশমিক ৯১ পেয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয়, ৯৫ দশমিক ৯৭ পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তৃতীয়, ৯৫ দশমিক ৪৭ পেয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ, ৯৪ দশমিক ৯৭ পেয়ে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে।
এছাড়া এ তালিকায় ৯৪ দশকি ৫৮ স্কোর পেয়ে ষষ্ঠ অবস্থানে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ৯২ দশমিক ৩৪ পেয়ে সপ্তম অবস্থানে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ৯১ দশমিক ৩৬ পেয়ে অষ্টম অবস্থানে আছে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ৯০ দশমিক ৬৬ পেয়ে নবম অবস্থানে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ৫৯ দশমিক ২৬ স্কোর পেয়ে ৩৪তম অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
ইউজিসির কর্মসম্পাদন চুক্তিতে মূল্যায়নে তলানিতে থাকার কারণ জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, “এগুলো প্রশাসনিক বিষয়। সরকার বা ইউজিসি কর্তৃপক্ষ যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর কোনো দায়-দায়িত্ব দেন তখন সেটা প্রতিপালন করার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এখানে হয়তো প্রশ্নের একটা গাফিলতি আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত সমস্যাগুলোর প্রতিকার বিষয়ে রাবি অনেক পিছিয়ে আছে। এখানে কোনো ঘটনা ঘটলে শুধু তদন্ত কমিটিই গঠন হয়, তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয় না। আমরা দেখি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু রাবিতে এমনটা কখনো দেখা যায়নি।”
এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, “আমি ইউজিসির প্রতিবেদনটা না দেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারছি না। তিনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন বলে ফোন কেটে দেন।”
প্রসঙ্গত, সেবায় গতিশীলতা আনয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে সরকার ২০১৪-১৫ সালে দেশে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) চালু করে। এর মাধ্যমে সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত, সক্ষমতার উন্নয়ন, সব স্তরের কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন সহজ হবে।