ঢাবি শিক্ষক সমিতির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতি লাইনেই ভুল

ভুলে ভরা ঢাবি শিক্ষক সমিতির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
ভুলে ভরা ঢাবি শিক্ষক সমিতির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি  © ফাইল ছবি

জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভার ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় গণমাধ্যমে। তবে বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ এর অধিক বানান ভুল পাওয়া গেছে। কয়েকটি লাইনে ছিল একাধিক ভুল। কিছু ক্ষেত্রে ব্যকরণ নিয়মও মানা হয়নি। এমনকি জাতির পিতা শব্দকে ‘জতির পিতা’ লেখা হয়েছে। এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে পরে আলাদা বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর কথা জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির আলোচনা সভার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব বানান ভুল ধরা পড়ে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা স্বাক্ষরিত এ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে ভুলগুলো আন্ডারলাইন করে দেওয়া হলো। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ১৫ই আগস্ট '(,)' মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী (বাঙালি), জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে (কালরাতে) নিহত সকল শহীদদের (সব শহীদের/শহীদদের) প্রতি সভায় গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। সভার শুরুতেই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রায় ২.৩০ (আড়াই বা দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিট) ঘন্টা ব্যাপী (ঘণ্টাব্যাপী) অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, অনুষদ ও ইনস্টিটিউটের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সংঘটিত এ হত্যাকান্ডের (হত্যাকাণ্ডের) বিভিন্ন ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক ও সমাজতাত্বিক কারণসমূহ (কারণ) বিশ্লেষণ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এক্ষেত্রে স্থানীয় ও বৈশ্বিক ষড়যন্ত্র, একশ্রেণী (একশ্রেণির) সামরিক কর্মকর্তার ক্ষমতার প্রতি অতি আগ্রহ ও লোভ, অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যমে বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়া প্রবর্তন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশেরে (অধ্যাদেশের) মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বিচার প্রক্রিয়া রহিতকরণ, যুদ্ধপরাধীদের (যুদ্ধাপরাধীদের) পূর্নবাসন (পুনর্বাসন) প্রক্রিয়া, বঙ্গবন্ধু সরকার বিরোধী (সরকারবিরোধী) প্রচার '(-)' প্রচারনায় (প্রচারণায়) একশ্রেণীর (একশ্রেণির) সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ ও তথাকথিত সুশীল ও সাংবাদিকদের ভূমিকার বিষয় নিয়েও শিক্ষকবৃন্দ বিস্তারিত আলোচনা করেন।

তদুপরি, সম্মানিত শিক্ষকসমাজ ‘শিক্ষকসমিতির’ (শিক্ষক সমিতির) এ আলোচনা সভায় নিম্নলিখিত প্রস্তাবনাসমূহ পেশ করেন-

(১) স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমালোচনা কোনভাবেই (কোনোভাবেই) গ্রহণযোগ্য নয়। কোন (কোনো) ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জতির (জাতির) পিতাকে অসম্মানের অধিকার রাখেন না। যদিও এটি সাংবিধানিকভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে তথাপিও (তথাপি) অনেক সময়ই এর ব্যতয় ঘটছে বিধায় শিক্ষক সমাজ এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং এটিকে বাস্তবিক ক্ষেত্রে সঠিকভাবে প্রযোগের (প্রয়োগের) সুপারিশ করেন।

(২) বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত (মেজর ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরীসহ ও অন্যান্যরা) খুনীদের অতিসত্ত্বর দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি প্রদানের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী (দাবি) জানানো হয়।

(৩) একটি বিশেষ কমিশন গঠনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের (হত্যাকাণ্ডের) পরিকল্পনাকারী (Master Mind) ও নেপথ্য কুশীলবদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবী (দাবি) তোলা হয় এ আলোচনা সভায়। এক্ষেত্রে এদেশের প্রথম সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানকে বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত একজন মূল পরিকল্পনাকারী হিসাবে (হিসেবে) আখ্যায়িত করা হয়।

(৪) বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নামক কোর্সটি সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাধ্যতামূলক কোর্স হিসাবে (হিসেবে) প্রবর্তনের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, প্রকৌশল, কারিগরী বিশ্ববিদ্যালয় সহ' (বিশ্ববিদ্যালয়সহ) সকল (সব) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ কোর্স পাঠদান অতি আবশ্যক বলে মত প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী (শিক্ষকমণ্ডলী)।

(৫) সর্বোপরি, স্থানীয় ও বৈশিক (বৈশ্বিক) মোড়লদের নানামুখী অপতৎপরতা, ষড়যন্ত্র, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ বিরোধী (বাংলাদেশবিরোধী) অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের উপর গুরুত্ব আরোপ (গুরুত্বারোপ) করেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত দুঃখিত যে, সবাইকে এমন একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমাদের প্রেস রিলিজ যাকে দিয়ে করানো হয়েছে, তিনি মূলত এক্সপার্ট। আমরা তেমন বাংলা বুঝিও না বা নতুন প্রণীত নিয়মও জানি না। তাই আমি সেক্রেটারিকে বলেছিলাম, আপনি দেখে পাঠিয়ে দেন।’

দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যাক্তি দায়সারা কাজ করেছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সঙ্গে একমত যে, যাদের দিয়ে কাজটি করা হয়েছে, তারা দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছে। পরবর্তীতে গতকাল রাত ১১টার পরে আমরা বিষয়টি পুনরায় লিখে সবার কাছে পাঠিয়েছি।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence