পরীক্ষার হলে গল্প করেন ঢাবি শিক্ষকরা, অভিযোগ দিলেন শিক্ষার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ  © ফাইল ছবি

‘‘পরীক্ষা চলাকালে হল নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা হলের অভ্যন্তরে উচ্চস্বরে কথা বলেন, মুঠোফোনে গল্প করেন। শিক্ষকদের আলাপের কারণে পরীক্ষার খাতায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়। এ বিষয়ে সমস্যার কথা শিক্ষকদের বললে তারা আমাকে নিজ আসন থেকে উঠে পেছনে একটি আসনে বসতে বলেন। সেখানে গিয়েও শিক্ষকরা মুঠোফোনে কথা বলেন, উচ্চস্বরে বই পড়েন।’’

অ্যাকাডেমিক পরীক্ষার হলের এমন অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ কাওসার মোস্তফা আবুলউলায়ী বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থী। চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাওসার মোস্তফা জানিয়েছেন, তিনি অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছেন। বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

দর্শন বিভাগের ওই শিক্ষার্থীর নাম মতিউর রহমান সরকার দুখু। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ সেশনে ৩য় বর্ষের (৬ষ্ঠ সেমিস্টার) শিক্ষার্থী। অভিযোগপত্রে পরীক্ষার হলে তিনি তার খারাপ অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর প্রতিকার চেয়েছেন।

পরীক্ষার হলের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা শিক্ষকদের দায়িত্ব। আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখছি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। -কর্তৃপক্ষ

গতকাল রবিবার (১৩ আগস্ট) দর্শন বিভাগের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের ৩০৫ কোর্স নং (আধুনিক চিরায়ত দলনি-হিউম ও কান্ট) কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এ পরীক্ষাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ৫ম তলায় দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়।

অভিযোগপত্রে মতিউর রহমান লিখেন, ‘‘পরীক্ষায় আমি কেন্দ্রের সামনের দিকে দ্বিতীয় বেঞ্চে বসি। পরীক্ষা শুরু হওয়ার সাথে সাথে সামনে বসা শিক্ষক নিজেদের মধ্যে উচ্চস্বরে আলাপ শুরু করেন। শিক্ষকদের আলাপের কারণে পরীক্ষার খাতায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়ায় আমি একজন শিক্ষককে আমার সমস্যার কথা বলি। তিনি তখন আমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রের শেষের দিকের বেঞ্চে চলে যেতে বলেন।’’

‘‘কেন্দ্রের শেষের দিকের বেঞ্চে বসার কিছুক্ষণ পর আরেকজন শিক্ষক আমার পেছনে এসে বসে একটি ইংরেজি আর্টিকেল উচ্চস্বরে পড়া শুরু করেন। প্রায় ১ ঘণ্টা যাবৎ তিনি আর্টিকেল পড়েন। তাছাড়া কেন্দ্রে মোবাইল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও শিক্ষকরা পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রের অভ্যন্তরে উচ্চস্বরে মোবাইলে কথা বলেন।’’

আরও পড়ুন: দর্শন বিভাগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় গর্ব অনুভব করে: ঢাবি উপাচার্য

পরীক্ষা হলে এমন খারাপ অভিজ্ঞতা নতুন নয় জানিয়ে মতিউর আরও লিখেন, ‘‘একই সমস্যার কারণে বিগত ৫ম সেমিস্টারে প্রায় প্রতিটি পরীক্ষা শেষের দিকে বসেই দিয়েছি।’’

অভিযোগপত্রে মতিউর লিখেন, গতকাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট পূর্বে আমাকে শেষের বেঞ্চ থেকে ফের উঠিয়ে সামনে দিকের বেঞ্চে আনা হয়েছে। শিক্ষকরা পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রের অভ্যন্তরে নাস্তা করেন ও উচ্চস্বরে হাসাহাসি করেন। ফলে এ সকল সমস্যার কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রের সুষ্ঠু স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

জানতে চাইলে দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ কাওসার মোস্তফা আবুলউলায়ী সোমবার রাতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের এক শিক্ষার্থীর এ ধরনের একটা অভিযোগ আমরা পেয়েছি। বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। পরীক্ষার হলের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা শিক্ষকদের দায়িত্ব। আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখছি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence