মৃত্যুর আগে রাবির ছাত্রের লেখা চিরকুটে একরাশ কষ্টের কথা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৩, ০৮:১২ AM , আপডেট: ০৯ জুন ২০২৩, ০৮:১২ AM
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ ছাত্রাবাসের নিজ কক্ষে উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দিবাগত রাতে বিনোদপুরের স্টুডেন্ট প্যালেস ছাত্রাবাস থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে একটি চিরকুটে তিনি নিজের কষ্টের কথা লিখে গেছেন।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম তানভীর ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি নীলফামারী জেলায় বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, সন্ধ্যা থেকে কক্ষে দরজা বন্ধ করে অবস্থান করছিলেন তানভীর। রাতে বাড়ি থেকে যোগাযোগ করতে না পেরে তার বাবা মেস মালিককে খোঁজ নিতে বলেন।
তখন দরজায় কড়া নেড়ে কোনো সাড়া পাননি তিনি। পরে জানালা দিয়ে দেখলে তাকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। মৃত্যুর আগে একটা চিরকুটও রেখে গেছেন এই শিক্ষার্থী। সেই চিরকুটে তার মানসিকভাবে হতাশার কথা জানা গেছে।
চিরকুটে তিনি লিখেছেন, 'প্রিয় বাবা মা। আপনাদের অনেক ভালোবাসি। জানিনা কোথায় কমতি ছিল। আম্মুর জন্য বেশি খারাপ লাগতেছে। আমাদের ফ্যামিলিটায় আম্মুর অবদানটাই আমি বেশি মনে করি। কথাটা বলার অনেক কারণ যেটা আব্বু হয়ত জানে। তোমাদের জন্য কিছু তো করতেই পারলাম না উল্টো ফ্যামিলিটাই শেষ করলাম। ছোট বোনটার কথা আর বললাম না, কান্না পাচ্ছে। দিনের পর দিন আপনার ঠকাই গেছি। এসব আপনারা জানতে পারলে হয়ত ভিতর থেকেই মরে যেতেন। সবসময় ভয়ে ভয়েই থাকতাম। গলা গিয়ে খাবার নামতো না।'
আরও লিখেছেন, ‘বেশি বাড়াবো না আর। যে হারায় সেই হারানোর যন্ত্রণাটা বোঝে আর কেউ না। এসব কিছু থেকে বাঁচার জন্যই সিদ্ধান্ত, আর কোনো উপায় ছিল না আমার কাছে। শেষমেশ একাকিত্বই আমাকে গিলে খেল। মনের শক্তি ফুরিয়ে এলে দেহের শক্তি যতই থাক সম্ভব না বাঁচা। যদিও ক্ষমার যোগ্য না আমি, পারলে ক্ষমা করে দিয়েন।- আপনাদের অযোগ্য সন্তান।'
রাবির প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা বিষয়টি তাকে জানান। পরে এসে দেখেন, পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে। তবে মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।
নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, ঘটনাস্থলে গেলে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।