বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স-মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি

প্রতীকী
প্রতীকী

করোনার কারণে স্থগিত থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ের চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলো নিতে পারবে। যদিও আইন অনুযায়ী একাডেমিক বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে করোনার কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ইউজিসি উপাচার্যের সঙ্গে সভা করে সার্বিকভাবে এই সিদ্ধান্তের কথা জানাল।

আজ রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুুপুরে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এর সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসি সদস্যগণ যুক্ত ছিলেন।

ইউজিসি জানিয়েছে, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সভায় ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর করোনা সময়ে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন বিষয়ে ৭টি সুপারিশ তুলে ধরেন:

১) বিশ্ব মহামারী কোভিড-১৯ সংকটের কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে তা থেকে উত্তরণের জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটিসমূহের সুপারিশের প্রেক্ষিতে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।

২) বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কৃষি, চিকিৎসাসহ অন্যান্য শাখার অসমাপ্ত ব্যবহারিক ক্লাস এবং তার মূল্যায়ন স্বাস্থ্য বিধি মেনে পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করতে হবে।

৩) সেমিস্টার পরীক্ষা, ব্যবহারিক ক্লাস ও মূল্যায়ন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ সেমিস্টারের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে।

৪) করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ সরকারের নির্দেশনায় বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহ বন্ধ রাখতে হবে।

৫) শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য শিক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষা ও ব্যবহারিক ক্লাস শুরুর সর্বোচ্চ জন্য ১ ঘণ্টা আগে ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং শেষ হওয়ার ১ ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হবে।

৬) কোভিড-১৯ সংকটের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে চলমান শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

৭) বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধকল্পে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন ও অনুসরণ করতে হবে।

সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, পরীক্ষা গ্রহণ বিষয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ডিনস কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে। পরীক্ষার মান নিয়ে যেন কোন প্রশ্ন না ওঠে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাড়াহুড়া না করে সক্ষমতা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন।

সভায় উপাচার্যগণ জানান, করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। অসমাপ্ত সেমিস্টার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পরীক্ষা না হওয়ার কারণে শিক্ষাথীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তারা নিজেদেরকে পরবর্তী সেমিস্টারের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে আলাদা করে নিচ্ছে। পরীক্ষা বা মূল্যায়ন না হলে অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়বে। জাতীয় স্বার্থে পরীক্ষা নেওয়া দরকার।


সর্বশেষ সংবাদ