নেপাল-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ইয়ুথ রিসার্চ ক্যাম্প ২০২৫ সমাপ্ত

নেপাল-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ইয়ুথ রিসার্চ ক্যাম্প ২০২৫
নেপাল-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ইয়ুথ রিসার্চ ক্যাম্প ২০২৫  © সৌজন্যে প্রাপ্ত

বাংলাদেশের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়, ২টি কলেজ থেকে ১৯ জন গবেষণা উদ্যমী তরুণ গিয়েছিলেন নেপালের কাঠমান্ডু এবং পোখরায় আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ রিসার্চ ক্যাম্প-২০২৫-তে। গত ২২ মে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে যাত্রা শুরু করে সফল রিসার্চ ভ্রমণ আরেকটি ফ্লাইটে দেশে ফিরে এসেছেন ২৮ মে, ২০২৫ তারিখে।

৭দিন ব্যাপী এই রিসার্চ ক্যাম্পের আয়োজনে ছিলো বাংলাদেশ গবেষণা সংসদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ ছিলো সহ আয়োজনে। আর নেপালে হোস্ট হিসেবে ছিলো International Development Institute (IDI), Nepal. আয়োজনে ট্রাভেল পার্টনার ছিলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং মিডিয়া পার্টনার ছিলো The Business Standard and Sports Partner ছিলো Run Globally. 

২২ মে, ২০২৫ তারিখে ছিলো ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ রিসার্চ ক্যাম্পের উদ্বোধনী দিন এবং প্লেনারি সেশন। পরদিন রিসার্চ ক্যাম্পের অধীনে প্রথম আনুষ্ঠানিক সেশন অনুষ্ঠিত হয় বিমান বাংলাদেশ কাঠমান্ডু অফিসে। সেখানে বিমানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা শেয়ারিং এবং নলেজ আদান প্রদান হয়।  

২দিনের ছিলো নেপালের পর্যটন স্বর্গ পোখরা ভ্রমণ। সেখানে গবেষকদল এক রাত ২ দিন অতিবাহিত করেন। প্রথমদিন ছিলো পোখরা সিটি ভ্রমণ। দ্বিতীয়  দিন ভোরে পোখরার লেক পাড়ে অনুষ্ঠিত হয় নেপাল-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ রান। এরপর বেলা ১১টায় রিসার্চ ক্যাম্পের দ্বিতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় পোখরা রিসার্চ সেন্টারের সাথে। এতে পোখরা রিসার্চ সেন্টার, তাদের পরিচিতি,  কার্যক্রম, তরুণ গবেষকদের সঙ্গে তাদের সুযোগ-সুবিধা এবং বাংলাদেশ গবেষণা সংসদ এবং পোখরা রিসার্চ সেন্টার একত্রে কীভাবে দুই দেশের তরুণ গবেষকদের নিয়ে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে রুপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় তরুণ গবেষকরা নিজেদের গবেষণা চিন্তা ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

পরদিন আবার কাঠমান্ডু ফিরে কাঠমান্ডু ইউনিভার্সিটি ভিজিট এবং গ্লোবাল এংগেজমেন্ট ডিভিশনের সাথে ফিউচার কোলাবরেশন নিয়ে মিটিং অনুষ্ঠিত হয়৷ রিসার্চ ক্যাম্পের ৫ম দিনে কাঠমান্ডু ইউনিভার্সিটির দারুণ আতিথেয়তা গ্রহণ করেন তরুণ গবেষকরা। এতে গ্লোবাল এংগেজমেন্ট ডিভিশনের ডিরেক্টর ডিনেশ কাফলে নেপাল-বাংলাদেশ দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক  নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি কাঠমান্ডু ইউনিভার্সিটিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা, গবেষণা এবং এক্সেঞ্জ প্রোগ্রামের স্কুপগুলো গবেষকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন। 

নেপালে ৬ষ্ঠ দিনে ছিলো ন্যাশনাল ইয়ুথ কাউন্সিলে সেমিনার, যেখানে ১৯ জন তরুণ গবেষককে নেপালের ঐতিহ্যবাহী 'খাদা' দিয়ে সাদর সম্ভাষণ জানানোর পাশাপাশি আগামীতে দুই দেশের তরুণদের নিয়ে নতুন নতুন উদ্যোগের বিষয়ে আলাপ হয়।

একই দিনে দুপুরে রিসার্চ ক্যাম্প ছিলো কাঠমান্ডুস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে। যেখানে একই সাথে সদ্য এভারেস্ট জয়ী ইকরামুল হক শাকিলের অনবদ্য গল্প শোনা হয়, সেই সাথে গবেষকরা নিজেদের গবেণার ফাইন্ডিংসের প্রেজেন্টেশন দেন। এসময় ক্যাম্পে অংশ গ্রহণ করা সকলকে সার্টিফিকেট প্রদান করেন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির।

৭ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ইয়ুথ রিসার্চ ক্যাম্প ২০২৫-এর চূড়ান্ত ও সমাপনী সেশনটি অনুষ্ঠিত হয় নেপালের কাঠমান্ডুতে অবস্থিত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ACE Institute of Management এর হল রুমে। এই সেশনটি যৌথভাবে আয়োজন করে ACE Institute of Management এবং International Development Institute (IDI), Nepal।সেশনের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ACE Institute of Management-এর অধ্যক্ষ Dr. Ashish Tiwari. এরপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন Impact Adventure-এর প্রতিষ্ঠাতা পঙ্কজ প্রধানাঙ্গা। “Destination Nepal: Tourism for All” শীর্ষক তাঁর উপস্থাপনায় তিনি ভ্রমণ ও পর্যটন বিষয়ক ব্যাপক ধারণা ও বিশদ দিকগুলো তুলে ধরেন, যা তরুণ গবেষকদের জন্য ছিলো অত্যন্ত অন্তর্দৃষ্টি ও অনুপ্রেরণামূলক।পরবর্তী অংশে, IDI Nepal-এর পরিচালক রোশন গিমিরে একটি বিশদ প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন, যেখানে ভবিষ্যতে IDI এবং বাংলাদেশ গবেষণা সংসদ কিভাবে যৌথভাবে আরও বড় পরিসরে আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম আয়োজন করতে পারে, সে বিষয়ে পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ গবেষণা সংসদের পরিচালক এবং ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ রিসার্চ ক্যাম্প এর পরিচালক এস, এম সাদেক। সেশনের শেষে, ৭ দিনব্যাপী গবেষণা ক্যাম্প সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিনিধি-গবেষকদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন International Development Institute (IDI), Nepal।নেপালের প্রধান দুটি শহরে অনুষ্ঠিত নানা সেমিনারের পাশাপাশি ছিলো পোখরা এবং কাঠমান্ডু সিটি ভ্রমণ, যেখানে ঐতিহাসিক স্থাপনা, কালচারাল স্থান, ধর্মীয় স্থাপনা ভ্রমণের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তরুণ গবেষকরা বাস্তব জ্ঞান সঞ্চয় করেন।

এই বিষয়ে আয়োজকরা জানান, এধরনের আয়োজনের মাধ্যমে তরুণদের গবেষণামুখী করা হয়, ভ্রমণ আর সেমিনার, নলেজ শেয়ারিং প্রোগ্রাম সহ একত্রে নতুন জ্ঞান অর্জনের দারুণ উদ্যোগ এটি। আগামীতে বিভিন্ন দেশে এধরনের উদ্যোগ আরও বড় পরিসরে আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন আয়োজক কমিটির পরিচালক এবং বাংলাদেশ গবেষণা সংসদের পরিচালক এস, এম সাদেক।


সর্বশেষ সংবাদ