একদিনে ঘুরে আসুন সবুজ গালিচা বিছানো সৈকত গুলিয়াখালী

গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত
গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত  © টিডিসি সম্পাদিত

অপরূপ সৌন্দর্যের আরেক নাম গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, সৈকত জুড়ে সবুজ গালিচা বিছানো। চারপাশে বিস্তৃত জলরাশি। অন্যদিকে কেওড়া বন। কেওড়া বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট ছোট খালের চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল বেড়িয়ে আছে।

এই কেওড়া বন সমুদ্রের অনেকটা গভীর পর্যন্ত চলে গেছে। এর পরিবেশ সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মতো।  সমুদ্র পাড়ের এই মনোরোম সৌন্দর্য বোধ হয় অন্য কোথায় দেখতে পাবেন না!

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নে এটির অবস্থান। বৃহত্তর সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার ও পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের আদলে এই পর্যটন স্পট। প্রতিদিন এখানে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে শত শত ভ্রমণপিপাসুরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড উপজেলা সদর ৭ কিলোমিটার দূরে এই সৈকত। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে অবশ্য এই জায়গা মুরাদপুর বিচ নামে পরিচিত।

ছবি: আমান উল্যাহ আলভী

গুলিয়াখালী বীচে যাবার উপায়
স্থানীয় মানুষের কাছে এই সৈকত ‘মুরাদপুর বীচ’ নামেও সুপরিচিত। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালি সি বীচের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। যেহেতু এই বীচ সীতাকুণ্ডে তাই দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে প্রথমে আসতে হবে সীতাকুণ্ডে। বিভিন্ন উপায়ে ঢাকা বা চট্রগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ডে আসতে পারবেন।

ঢাকা থেকে সীতাকুণ্ড
ঢাকা থেকে চট্রগ্রামগামী যে কোন বাসে করেই যেতে পারবেন সীতাকুন্ড। এসি ও নন এসি এইসব বাসের ভাড়া ৪২০-১০০০ টাকা। প্রয়োজন হলে বাসের সুপারভাইজার কে আগেই বলে রাখবেন সীতাকুন্ড নামিয়ে দিতে। ঢাকা থেকে সীতাকুন্ড মেইল ট্রেনে করে জনপ্রতি ১২০ টাকা ভাড়া সীতাকুণ্ড আসতে পারেন। ঢাকা থেকে আন্তঃনগর ট্রেনে করে ফেনী যেতে পারবেন, শ্রেণীভেদে ভাড়া ২৬৫-৮০০ টাকা। ফেনী থেকে লোকাল বাসে করে সীতাকুণ্ড যেতে পারেন। ফেনী থেকে লোকাল বাসে সীতাকুণ্ড যেতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা ভাড়া লাগবে।

চট্রগ্রাম থেকে সীতাকুণ্ড
চট্রগ্রামের অলংকার মোড়, এঁকে খান মোড়, কদমতলী থেকে সীতাকুণ্ড যাবার বাস ও মেক্সি পাওয়া যায়। পছন্দ মতো জায়গা থেকে চলে আসতে পারবেন সীতাকুণ্ড বাজারে।

সীতাকুন্ড থেকে গুলিয়াখালী
সীতাকুন্ডের বাস স্ট্যান্ড ব্রীজের নিচ থেকে সরাসরি সিএনজি/অটো নিয়ে গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত চলে যেতে পারবেন। গুলিয়াখালি বীচের বাঁধ পর্যন্ত জনপ্রতি অটো ভাড়া নিবে ৩০ টাকা, আর অটো রিজার্ভ নিয়ে যেতে চাইলে ভাড়া লাগবে ১৫০-২০০ টাকা। ভাড়ার পরিমাণ অবশ্যই দরদাম করে ঠিক করবেন। সীতাকুণ্ড ফিরে আসার জন্যে আগে থেকেই সিএনজি চালকের নাম্বার নিয়ে রাখতে পারেন। অথবা যাওয়া আসা সহ রিজার্ভ করে নিতে পারেন। সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফিরে আসার সময় সিএনজি/অটো পাওয়া যায় না।

কোথায় থাকবেন
সীতাকুণ্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন-চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এ ছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুণ্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

কোথায় খাবেন
সীতাকুণ্ড বাজারে খাবারের অনেকগুলো দোকান আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা
গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে বিকেলে গেলে ভালো লাগবে। সীতাকুণ্ড থেকে ঘুরে আসতে সব মিলিয়ে দুই-তিন ঘণ্টা সময়ই যথেষ্ট। তাই সারা দিনের জন্য সীতাকুণ্ডের প্ল্যান থাকলে সকালটা আশপাশের অন্য কোনো দর্শনীয় স্থানে কাটাতে পারেন। ভ্রমণের সময় জোয়ার-ভাটার টাইম জেনে নিন।

স্থানীয় জেলেরা এ ব্যাপারে ভালো ধারণা দিতে পারবে। জোয়ারের সময় সমুদ্রের কাছে না থাকাই ভালো। কারণ খালগুলো জোয়ারের পানিতে ভরে গেলে ফিরতে অসুবিধা হবে। সন্ধ্যার মধ্যেই সীতাকুণ্ড বাজারে ফিরে আসুন। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা যাবে না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence