বদলি নীতিমালা সংশোধনের দাবিতে আন্দোলনে নামছেন নিবন্ধনধারীরা

আন্দোলনরত শিক্ষকরা
আন্দোলনরত শিক্ষকরা  © ফাইল ফটো

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ বা এনটিআরসিএর মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য প্রকাশিত বদলি নীতিমালা সংশোধন করে ওই নীতিমালায় এনটিআরসিএর সনদপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলির দাবিতে আন্দোলনে নামছেন নিবন্ধনধারীরা। আগামী ১৪ ও ১৫ মে অবস্থান ও লংমার্চ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

এ বিষয়ে "বদলি প্রত্যাশী এনটিআরসিএ নিবন্ধিত শিক্ষক ফোরাম"র সভাপতি মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় বদলির জন্য যে নীতিমালা প্রকাশিত হয়েছে তা চরম বৈষম্যমূলক। ওই নীতিমালায় শুধু এনটিআরসিএর সুপারিশ প্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ রাখা হয়েছে। কিন্তু এনটিআরসিএর নিবন্ধিত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ রাখা হয়নি। এনটিআরসিএর নিবন্ধিত হাজার হাজার শিক্ষক স্বল্প বেতনে শত-শত কিলোমিটার দূরে চাকরি করছেন। পরিবার পরিজন ছেড়ে উচ্চ মূল্যে বাসা ভাড়া দিয়ে তাঁরা অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছেন। তাই এই নীতিমালা সংশোধনের দাবিতে তারা আন্দোলনে নামছেন। 

আরও পড়ুন: এপ্রিলের বেতন নিয়ে দুঃসংবাদ দিল ইএমআইএস সেল

তিনি আরও বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির দাবিটি আসছে দূরত্বের কারণে। দূরত্ব বিবেচনায় সবাইকে বদলির সুযোগ দিলে কোন সমস্যা হতো না। কিন্তু শুধুমাত্র সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ রেখে নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে এবং ওই নীতিমালা অনুযায়ী শুধুমাত্র সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অথচ সুপারিশপ্রাপ্ত সকল শিক্ষকের কিন্তু বদলির প্রয়োজন নেই। কারণ সুপারিশপ্রাপ্ত প্রায় ৮০% শিক্ষক নিজেদের এলাকায় নিয়োগ পেয়েছেন। প্রায় ২০% সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক দূরে চাকরি করছেন। শুধু দূরে চাকরিরত এই শিক্ষকদের বদলির প্রয়োজন। তাহলে সুপারিশপ্রাপ্ত ৮০% শিক্ষকের বদলির প্রয়োজন না হওয়া সত্ত্বেও তাদের বদলির সুযোগ রাখা হয়েছে। অথচ এনটিআরসিএ এর সনদধারী হাজার হাজার শিক্ষক নিজেদের এলাকায় পদ শূন্য না পাওয়ায় শত-শত কিলোমিটার দূরে চাকরি নিয়েছেন। তাদের জন্য বদলি অপরিহার্য হলেও তাদেরকে বদলির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তোফায়েল সরকার বলেন, বর্তমান সরকার একটি বৈষম্যহীন সরকার। এই সরকারের আমলে একটি বৈষম্য মূলক বদলি নীতিমালা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি বলেন, এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত এবং এনটিআরসিএর নিবন্ধিত শিক্ষকের সকল তথ্য এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে রয়েছে। এমনকি এনটিআরসিএ সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষক একই মেধাতালিকার অন্তর্ভুক্ত। তাহলে ওই মেধাতালিকার একটি অংশকে বদলির সুযোগ দেওয়া হবে এবং আরেকটি অংশকে বদলির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হবে এটি চরম বৈষম্যমূলক। আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই। 

সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের বদলির ব্যবস্থা না থাকায় আমরা শত-শত কিলোমিটার দূরে অত্যন্ত স্বল্প বেতনে মানবেতর জীবনযাপন করছি। অসুস্থ পিতামাতাকে সেবা করার মত সুযোগ আমাদের হয় না। কোন ঘনিষ্ঠ নিকট আত্মীয় স্বজনরা মারা গেলে তাদের কবরে দুমুঠো মাটি দেওয়ার সুযোগ আমাদের হয় না। 

তিনি বলেন, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯০% শিক্ষক নিজেদের এলাকায় থেকে চাকরি করেন। আমরা এলাকায় পদ শূন্য না পেয়ে বাধ্য হয়ে দূরে চাকরি নিয়েছি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত আমাদের প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ ছিলো। কিন্তু সরকার আমাদেরকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করায় আমরা ২০১৫ সাল থেকে বদলির দাবি জানিয়ে আসছি। আমরা বহুবার কর্মকর্তাদের কাছে গিয়েছি। কিন্তু উনারা কোন পদক্ষেপ নেননি। অথচ এই বদলি চালু করতে সরকারের একটি পয়সাও লাগবে না অর্থাৎ বিষয়টি বাজেট বিহীন। শুধুমাত্র কর্মকর্তাদের সদিচ্ছার অভাবের কারণেই শত-শত কিলোমিটার দূরে চাকরিরত শিক্ষকরা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা থাকবেন শ্রেণী কক্ষে। বাজেট বিহীন বদলির দাবিতে কেন শিক্ষকদেরকে শ্রেণি কক্ষ ছেড়ে রাজপথে নামতে হবে। বিষয় টি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন। আগামী ১৪ ও ১৫ মে বুধবার এবং বৃহস্পতিবার এনটিআরসিএ নিবন্ধিত সারাদেশের  বদলি প্রত্যাশী শিক্ষকদেরকে যথাসময়ে আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় জন্য তিনি আহবান জানান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence