আজও চলছে কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের কর্মবিরতি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৬ PM , আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:০০ PM
সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয়’ স্কিম বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছেন দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আজও অব্যাহত ছিল কর্মবিরতি। শনিবার (০৬ জুলাই) সকাল থেকে এসব ক্যাম্পাসগুলোর তথ্য জানিয়েছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধিরা।
সরেজিমনে দেখা গেছে, এদিন সকাল থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি), মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি ক্যাম্পাসে শিক্ষকরা কর্মবিরতি করেছেন। বুয়েট শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও আজ খোলা রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বুয়েট শিক্ষকরা আজকে কর্মবিরতি কর্মসূচি শুরু করেছেন। আমি বুয়েটের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। এভাবে যে ক্যাম্পাসে যেদিন ছুটি থাকবে, সে ক্যাম্পাসে সেদিন আন্দোলনও স্থগিত থাকবে।
যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা আজও আমাদের কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা আশাবাদী সরকার আমাদের দাবি-দাওয়া মেনে নেবেন। কিন্তু যতক্ষণ না আমাদের দাবি মানা হচ্ছে, আমরা আমাদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি এবং অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। আমাদের দাবিগুলো ‘প্রত্যয়’ পেনশন স্কিম বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল এবং সুপার গ্রেড কার্যকর করতে হবে।
মাভাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাসুদার রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য এই বৈষম্যমুলক পেনশন নীতিমালা করা হয়েছে, সেটি অমর্যাদাকর। এই প্রত্যয় স্কিম কার্যকর হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধা শূন্যের দিকে এগিয়ে যাবে। যা উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে।
শিক্ষকরা বলছেন, বর্তমান ব্যবস্থায় একজন অধ্যাপক মাসে ৪৫ হাজার ৭৯০ টাকা পেনশন পান। এ জন্য তাদের বেতন থেকে কোনো টাকা কাটা হয় না। সর্বজনীন পেনশন নিয়ে গঠিত মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন ব্যবস্থায় ৩০ বছর বয়সে যোগ দিয়ে ৬৫ বছর বয়সে অবসর নিলে মাসে মাসে বেতন থেকে টাকা কাটার পর পেনশন পাওয়া যাবে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা।
কিন্তু আনুতোষিক বা গ্রাচ্যুইটি বাবদ এককালীন ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা নতুন ব্যবস্থায় পাওয়া যাবে না। এই টাকা পেনশন তহবিল বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে যে মুনাফা পাওয়া যায়, তা যোগ করলে বর্তমান ব্যবস্থায় পেনশন দাঁড়ায় মাসে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এখানে সুবিধা কমার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকনেতারা। কর্তৃপক্ষ বলছে, ১ জুলাই থেকে যাঁরা যোগ দেবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে।
এদিকে, আন্দোলন নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অচলাবস্থা নিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গত বৃহস্পতিবারের নির্ধারিত বৈঠক শেষ পর্যন্ত হয়নি। বৈঠকটি স্থগিত করার কারণ হিসেবে মন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার কথা বলা হয়েছে। এখন ঠিক কবে নাগাদ এই বৈঠক হতে পারে, সে ব্যাপারেও সরকারের দিক থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো সময় জানানো হয়নি শিক্ষক নেতাদের।
সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচির বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকনেতারা আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় থাকার কথা বলছেন। তারা আশা করছেন, শিগগিরই সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে তাদের এই বৈঠক হবে। আলোচনা করেই একটা সমাধানে যেতে চান তারা।