এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে পড়াচ্ছে ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগের অনলাইন ক্লাস
ছাত্রলীগের অনলাইন ক্লাস  © টিডিসি ফটো

এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে পড়াচ্ছে ছাত্রলীগ। এ উদ্যোগে আওতায় সংগঠনটির মাধ্যমে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীরা অনলাইনে বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে। দেশব্যাপী ১০০ জন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সাইন্স একাডেমি’ সহায়তাটি দেয়া হচ্ছে।

কার্যক্রমটির কো-অর্ডিনেটর বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের উপ বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার হাবীব আহসান।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছর অক্টোবরে ১৫ জন অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীকে শিক্ষা সহায়তার মাধ্যমে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সাইন্স একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয়। এ বছরে করোনা সংক্রমনের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সময় কাল বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে নতুন উদ্যমে কার্যক্রমটি শুরু হয়েছে।

সব মিলে এ কার্যক্রমে রেজিস্ট্রেশনকৃত নিয়মিত শিক্ষার্থী সংখ্যা ১০৬৮ জন। যারা শিক্ষা সহায়তা নিচ্ছেন ৬৩ জন শিক্ষকের মাধ্যমে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চলমান থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলা পর্যন্ত এবং বিনামূল্যে শিক্ষা সহায়তা দেওয়া চলতে থাকবে করোনা সংক্রমন কমে গেলেও। এতে প্রতিদিন নতুন নতুন শিক্ষার্থী যুক্ত হচ্ছেন বলেও জানানো হয়।

শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হয়, প্রত্যেক শিক্ষক ১৫-২০ জনের এক একটি গ্রুপে সপ্তাহে ন্যূনতম তিন দিন পদার্থ, রসায়ন, গণিত, জীববিজ্ঞান, আইসিটি, ইংরেজি বিষয়ে অনলাইনে জুম এবং গুগল মিটের মাধ্যমে ক্লাস নিচ্ছেন।

সর্বমোট ১০০ জন শিক্ষক রয়েছেন, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, কুয়েট, রুয়েট, চুয়েট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্হিবিশ্বে রাশিয়া, কানাডায়সহ কয়েকটি দেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থী।

সহায়তাটি একাধারে দেশের আটটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিতে পারছেন। এখানে নটরডেম কলেজ, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, ভিকারুননিসা নুন স্কুল এন্ড কলেজ, ক্যাডেট কলেজ সমূহের এবং জিলা স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীরা যেমন রয়েছে তেমনি গ্রামের স্কুল কলেজ এবং মাদ্রাসার বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন।

দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে যেকোন শিক্ষার্থী বা কারো পরিবারের সন্তান বা ভাই-বোন কেউ বিনামূল্যে সহায়তাটি নিতে পারবে। তবে সহায়তা কার্যক্রমটি বিনামূল্যে দিতে অংশগ্রহণ করতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের, অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল চেতনা লালনকারী যেকাউকে আহবান জানানো হয়েছে।

সহায়তা কার্যক্রমটি পেতে বা কার্যক্রমটির সাথে যুক্ত হতে যোগাযোগ করতে হবে ০১৭৪০০০০০৭৫, ০১৯৭১৪৮৫২৬৬ এই দুটি নাম্বারের যেকোন একটিতে বা Fb/DrMAWazedMiahSA ফেসবুক পেজ, বা ইমেইল- drmawazedmiahscienceacademy@gmail.com এ।

ফাতেমা তুজ জহুরা। গাজীপুরের জয়দেবপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ ইনস্টিটিউট হাইস্কুলের শিক্ষার্থী। তিনি ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সাইন্স একাডেমিরও একজন শিক্ষার্থী।

তিনি জানান, করোনার সময়ে যেখানে সকল ধরনের প্রাইভেট, টিউশনি বন্ধ হয়ে গেছে সেখানে ছাত্রলীগের ভাইয়েরা যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। আমাদের যে সমস্ত ভাইয়েরা ক্লাস নেন তারাও খুব যোগ্য। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি।

আরেক শিক্ষার্থী যিনি রংপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। তার নাম রিফাত হাসান। তিনি বলেন, আমার আগে যে ত্রুটিগুলো ছিলো, তা ক্লাসগুলো করার মাধ্যমে অনেকটা সমাধান হয়েছে। দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আমাদের ক্লাস নেন। এজন্য আমিও খুব গর্ব অনুভব করি।

সাফকাত আর রুম্মান। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। তিনি ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সাইন্স একাডেমিরও একজন ক্লাস কন্ডাক্টর।

তিনি জানান, ছাত্রলীগের উদ্যোগে প্রথমে যখন আমরা ক্লাস নেওয়া শুরু করি তখন আমার মনে হলো দেশের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা শহরের শিক্ষার্থীদের মতো সমান সুযোগ পাচ্ছে না। আমরা তাদের প্রোফার গাইডলাইন শুরু করি। তখন তারা যেনো তাদের হারানো পথ খুঁজে পায়।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপ বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সাইন্স একাডেমির কো-অর্ডিনেটর খন্দকার হাবীব আহসান বলেন, ছাত্ররাজনীতি করার সুবাদে ‘ছাত্ররাজনীতি হোক শিক্ষার্থীদের জন্য’ ধারণা নিয়ে আমরা শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কাজ নিয়মিত করে আসছি।

তিনি বলেন, এ দায়বদ্ধতা থেকেই করোনা সংক্রমন মহামারী মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আমাদের কার্যক্রম। বৈশ্বিক শিক্ষাব্যবস্থা ও রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় আমাদেরকে প্রতিযোগী হতে হলে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকলেও আমাদের তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষাক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার করে শিক্ষা ব্যবস্থা গতিশীল রাখার বিকল্প নেই।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence