গণঅভ্যুত্থান দিবসে মতিউর রহমান স্মৃতিসৌধে ছাত্রলীগের শ্রদ্ধা

ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে কিশোর শহীদ মতিউর রহমান স্মৃতিসৌধে ছাত্রলীগের শ্রদ্ধাঞ্জলি
ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে কিশোর শহীদ মতিউর রহমান স্মৃতিসৌধে ছাত্রলীগের শ্রদ্ধাঞ্জলি  © টিডিসি ফটো

ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে কিশোর শহীদ মতিউর রহমান স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বকশীবাজারস্থ নবকুমার ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে শহীদ মতিউর রহমান স্মৃতিসৌধে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসে সহ কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘বাঙালি জাতির স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মাইলফলক ঊনসত্তরের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান। বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা ও পরবর্তীতে এগারো দফার ধারাবাহিকতায় ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান ব্যাপকতা পায়। ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এদেশের ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়ে গণমানুষের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেন।’

তিনি বলেন, ‘মুক্তিকামী ছাত্র-শ্রমিক-জনতার রুদ্ররোষ ও গণঅভ্যুত্থানের চাপে স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ সবাইকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পতন ঘটে আইয়ুবের স্বৈরশাসনের।’

সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান দিবস বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। মুক্তিকামী নিপীড়িত জনগণের পক্ষে বাঙালি জাতির মুক্তি সনদ ৬ দফা। পরবর্তীতে ছাত্র সমাজের ১১ দফা কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে সংঘটিত এ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে রক্তের সিঁড়ি বেয়ে স্বৈরাচার আইয়ুববিরোধী গণআন্দোলনসহ স্বাধীনতা আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান এর ফলশ্রুতিতে ছাত্র-জনতার তীব্র গণ-আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার আইয়ুব সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে বাধ্য হন।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এক তাৎপর্যপূর্ণ মাইলফলক। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা, পরবর্তীতে ১১ দফা ও উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় রক্তাক্ত সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি মহান স্বাধীনতা অর্জন করে। আন্দোলন দমাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করা হয়। এ মামলায় বঙ্গবন্ধুকে বন্দি করা হয়।

এর প্রতিবাদে দেশব্যাপী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা দুর্বার ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন গড়ে তোলে। পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতে ১৯৬৯ সালের এ দিনে জনতা শাসক গোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলি বর্ষণে নিহত হন নবকুমার ইন্সটিটিউশনের নবম শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমান। এর আগে ২০ জানুয়ারি শহীদ হন আসাদুজ্জামান। শহীদ আসাদের আত্মদানের পর ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি শোক পালনের মধ্যদিয়ে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে ২৪ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।


সর্বশেষ সংবাদ