ভারতীয় প্ররোচনায় পরিকল্পিতভাবে পাহাড়কে অস্থিতিশীলের অভিযোগে ঢাবিতে মশাল মিছিল
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:০৯ PM
ভারতের প্ররোচনায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ ও চাকমা রানী ইয়ান ইয়ানের নেতৃত্বে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করার প্রতিবাদে এবং তাদেরকে নিষিদ্ধ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ‘সার্বভৌম ছাত্র জোট’ প্লাটফর্মে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মশাল মিছিলটি টিএসসি থেকে শহীদ মিনারে গিয়ে সমাবেশ করে শেষ হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ভারতীয় প্ররোচনায় পরিকল্পিতভাবে পাহাড়কে অস্থিতিশীল করা, সেনাবাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা করে রক্তাক্ত করা, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে হামলা, পবিত্র মসজিদে হামলা, পাহাড়ের বাঙালি ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নির্বিশেষে সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলা, ধর্ষণ, হত্যা, আদিবাসী মোড়কে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র ও জাতিগত দাঙ্গার সৃষ্টিকারী পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ নিষিদ্ধকরণ ও চাকমা রানী ইয়ান ইয়ান ও মাইকেল চাকমাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
‘পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি ধর্ষণকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেয়া হচ্ছে, সেনাবাহিনীর টহলরত গাড়িতে হামলা চালিয়ে কয়েকজন সেনা সদস্যকে রক্তাক্ত করা হয়েছে, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে হামলা চালানো হয়েছে এবং পাহাড়ে জাতিগত দাঙ্গা বাঁধানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। প্রকাশ্যে লাঠিসোটা ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়া হচ্ছে, নিরীহ বাঙ্গালীদের উদ্দেশ্য করে গুলি চালানো হচ্ছে।’
তারা বলেন, পাহাড়ের এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরিতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্যে মদদ দেয়া থেকে শুরু করে অর্থায়ন করা ও উস্কে দেয়ার পেছনে কাজ করছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ ও চাকমা রানী ইয়ান ইয়ান। তাদের প্ররোচনায় পাহাড় আজ উত্তপ্ত ও জাতিগত দাঙ্গার মুখোমুখি। সরকারকে অতি দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সশস্ত্র গোষ্ঠী ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং রাষ্ট্রদ্রোহী ইয়ান ইয়ানকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একইসাথে নিরাপত্তাবাহিনী ও পাহাড়ের সাধারণ মানুষের উপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।
তারা আরও বলেন, ধর্ষক যে-ই হোক তাকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। ইতিমধ্যে ধর্ষণের সাথে জড়িত নয়ন শীল নামে এক হিন্দু যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, ধর্ষণ ইস্যুকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে ইউপিডিএফ ও ইয়ান ইয়ান গং চক্র বাঙালি-অবাঙালি জাতিগত দাঙ্গা উসকে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। এই চক্রটি এখন ধর্ষকদের বিচারের দাবি না করে তারা নানান রকম বিচ্ছিন্নতাবাদী স্লোগান দিচ্ছে- পাহাড় থেকে সেনা হটাও, স্বায়ত্তশাসন চাই, আদিবাসী স্বীকৃতি চাই, স্বাধীনতা চাই, জুম্মোল্যান্ড ও কুকি চীন চাই ইত্যাদি রাষ্ট্রদ্রোহী দাবি নিয়ে তারা এখন মাঠে নেমেছে।
আমাদের প্রশ্ন - ধর্ষণবিরোধী মিছিলে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান কেন? এসব স্লোগান দিতে দিতে তারা সেনাবাহিনীর টহলরত গাড়িতে হামলা চালিয়ে সেনা সদস্যদের রক্তাক্ত করার নেপথ্যে কোন ষড়যন্ত্র লুকানো?
আমরা বিস্ময় প্রকাশ করছি- পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এরুপ সহিংস ও সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীরবতার কারণে। আমরা সরকারের এহেন দায়িত্ব-জ্ঞানহীন নীরবতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। অতি দ্রুত সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং ইয়ান ইয়ানকে গ্রেফতার করতে হবে ।
সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে আমরা স্পষ্ট বলতে চাই- জনগণ আপনাদের পাশে আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আপনারা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ইউপিডিএফ সহ সকল সশস্ত্র সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযানে নামুন। দেশের ছাত্র-জনতা আপনাদের পাশে থাকবে।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তালহা, রফিক, মুহাম্মদ শাকিল মিয়া, আব্দুল্লাহ আল মাহিন, আব্দুল বাসিত, রাহাত, জিয়াউল, শিহাবসহ শাহাদাত ফরাজী সাকিব, রিয়াজুল ইসলাম, ইব্রাহিম খলিলসহ অন্যরা।