রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

গণঅভ্যুত্থান দিবসে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম থাকলেও নীরব ছাত্রদল-বাম সংগঠন

রাবি ছাত্রশিবিরের বিজয় মিছিল
রাবি ছাত্রশিবিরের বিজয় মিছিল  © টিডিসি

গণঅভ্যুত্থান দিবসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন ও রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের পৃথক বিজয় র‌্যালি ও সমাবেশ থাকলেও একেবারে নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ ক্যাম্পাসের অন্যান্য বাম ছাত্রসংগঠনগুলো। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিজয় র‌্যালিতেও তাদের উপস্থিতি মেলেনি। অন্যদিকে সকাল থেকে নানা কার্যক্রমে বেশ সক্রিয় ভূমিকায় ছিল শাখা ছাত্রশিবির। এদিন বিকেল চারটায় ‘জুলাই জাগরণ’ র‌্যালিও পালন করে তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নিয়ে বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলো বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছে। অন্যদিকে আগামী ৭ আগস্ট থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের তালিকা প্রকাশসহ একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। এ ছাড়া সংখ্যা কম হওয়ায় অনেক সংগঠন প্রশাসনের আয়োজিত র‌্যালিতে সংহতি জানিয়ে আলাদা করে কোনো কর্মসূচি পালন করেনি।

এ বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘আজ আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। আমরা সংখ্যায়ও কম আর সবাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে, সে কারণেও সম্ভব হয়নি। রাকসু নির্বাচন নিয়ে আমরা পরিকল্পনার মধ্যে আছি, তাই সামনেও এ নিয়ে কর্মসূচির পরিকল্পনা নেই।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘আজ আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদা কোনো কর্মসূচি করিনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের র‌্যালিতে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেছি। এর আগে, আমরা মাসব্যাপী প্রোগ্রাম করেছি। গত ২ তারিখেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম।’

আজকের কর্মসূচির বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশের প্রথম বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত আজকের বিজয় র‍্যালিতে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। তা ছাড়া গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফতহে গণভবনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বিকেল ৪টায় বিনোদপুর থেকে তালাইমারি ‘জুলাই জাগরণ নব উদ্যমে বিনির্মাণ’ র‍্যালিও আয়োজন করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল শেখ হাসিনার ফাঁসি ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিচার। এখনো অনেক কিছু অর্জিত হয়নি, তবে যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা রাজপথে থাকব।’

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সরদার জহুরুল বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যল আজ আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। তবে গতকাল জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের পক্ষ থেকে একটি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ৭ আগস্ট আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের ছবি প্রকাশসহ আমরা এদিকে ভিন্ন কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম (কনক) বলেন, এটি মূলত সব দলমত, ছাত্রসংগঠন নির্বিশেষে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ছিল। এখানে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই কাম্য—প্রশাসনও ঠিক সেভাবেই আয়োজন করেছে, কিন্তু প্রভাবশালী অনেক সংগঠনই আসেনি। তবে রাকসুকেন্দ্রিক দলগুলোর গুছানোর একটা ব্যাপার আছে, এদিকেও ব্যস্ততা থাকতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘আসলে বর্তমানে আত্মদ্বন্দ্বে নিজেদের মধ্যে জটিল সমীকরণ কাজ করছে। দেশব্যাপী আজ অনেকেই দ্বিধাবিভক্ত—আমাদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব লেগে আছে, সেটিও বড় কারণ হতে পারে।’


সর্বশেষ সংবাদ