‘ডাকসু নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে’

বিজয় র‍্যালি
বিজয় র‍্যালি  © টিডিসি ফটো

দ্রুতই ডাকসুসহ সকল ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় বিজয় র‍্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এসময় তিনি বলেন, এ দেশের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু ছাত্র সংসদ নির্বাচন। যার মাধ্যমে ক্যাম্পাসে তারা তাদের অধিকার আদায়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে। এই যাত্রা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিয়েই শুরু করতে হবে।

বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা একটি বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি আয়োজন করে। র‍্যালিটি টিএসসি চত্বর থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদ, লাইব্রেরি, ডাকসু, মধুর ক্যান্টিন, অপরাজেয় বাংলা হয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে শেষ হয়। 

শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার উন্মেষ কেন্দ্র। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে সশস্ত্র সংগ্রামেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অবিস্মরণীয়। পাকবাহিনী একাত্তরের মার্চে স্বাধীনতাকামীদের দমনের অভিযান অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জুলাই-আগস্টে স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে সবার আগে জেগেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জাতির মুক্তি সংগ্রামের পথিকৃৎ হিসেবে কাজ করেছে আমাদের গর্বের এই প্রতিষ্ঠান। এই সকল সংগ্রামের মৌলিক আকাঙ্ক্ষা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় তা আজও বাস্তবায়ন করা যায়নি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে শাসকগোষ্ঠীরা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করেছেন। জনগণের ভাগ্য নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলায় মেতেছিলেন। এক‌ইসাথে দেশ পরিচালনায় যে ত্রুটিপূর্ণ সংবিধান রচনা ও  বারবার সংশোধন করা হয়েছে তা শাসককে স্বৈরাচার করে তুলেছে। ইসলাম ছাড়া কখনোই মানবতার কল্যাণ, শান্তি ও মুক্তি আসতে পারে না। স্বৈরাচার পতনের পর সময় এসেছে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার। তাই এবারের বিজয় দিবসে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় আমাদের সকলকে শপথ নিতে হবে।

এসময় তিনি হিজাবফোবিয়া রোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল ক্যাম্পাস প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি কামনা করেন। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে কে কোন ধরনের পোশাক পরিধান করবে তাতে তো হিজাব বা নিকাব পরিধান করা বোনেরা বাঁধা সৃষ্টি করছে না। তাহলে ইসলামের ফরজ বিধান পর্দা পালনে কেন নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হবে। এটা জঘন্য অপরাধ। এই ধরনের অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্টদের তদন্তপূর্বক কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ক্যাম্পাসে ট্যাগিংয়ের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে ক্যাম্পাস প্রশাসনকে আন্তরিক ভূমিকা পালন করতে হবে।

ঢাবি সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ৫৪ তম বিজয় দিবসে আমাদের সবাইকে ভারতের আধিপত্যবাদ বিরোধী চেতনায় জেগে উঠতে হবে। আমরা ৭১ ও ২৪ লড়াইয়ে শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে যেভাবে বিজয় অর্জন করেছি। চলমান আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়েও আমরা বিজয় অর্জন করব ইনশাআল্লাহ। স্বৈরাচারবিরোধী সকল শক্তিকেই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির প্রতি বিদেশি হস্তক্ষেপ ও আধিপত্যের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান করছি।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী খায়রুল আহসান মারজান, উবায়দুল্লাহ মাহমুদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর সহ সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, অর্থ সম্পাদক ইলিয়াস তালুকদার, শরিফুল ইসলাম, রাশেদুল ইসলামসহ অনুষদ ও ডিপার্টমেন্ট নেতৃবৃন্দ।


সর্বশেষ সংবাদ