আমাকেও শিবির ট্যাগ দিয়ে ঢাবিতে নিপীড়ন করা হয়েছে: ইমি
- ঢাবি প্রদায়ক
- প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩৮ PM , আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৯ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শামসুন নাহার হল সংসদের সাবেক ভিপি তাসনিম আফরোজ ইমি বলেছেন, আওয়ামী শাসনামলে ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি প্রকাশ্যে নিপীড়নের শিকার হতে দেখেছি ছাত্রদলকে। তবে ছাত্রদল ট্যাগ দিয়ে যতটুকু হেনস্তা করা হত, তার চাইতে বেশি শিবির ট্যাগ দিয়ে করা হয়েছে। এমনকি আমাকে ছাত্রশিবির ট্যাগ দিয়ে নিপীড়ন করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার থিয়েটারে অনুষ্ঠিত ন্যারেটিভ নামক একটি সংগঠন কর্তৃক ‘জুলাই পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি: প্রসঙ্গ ছাত্রশিবির’ শিরোনামে আয়োজিত এক ডায়ালগে এ কথা বলেন তিনি।
সাবেক ভিপি তাসনিম আফরোজ ইমি বলেন, এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই যে ক্ষমতাসীন দলের বাহিরে ভিন্ন মত ধারণকারীদের নানা নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। আমার উপর করা শিবির ট্যাগ দিয়ে নিপীড়ন থেকে কিছুটা অনুমান করা যায় শিবিরের কর্মীদের ওপর কি পরিমাণ জুলুম নির্যাতন হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবদান যেভাবে অস্বীকার করা যাবে না ঠিক অনুরূপ বিগত ১৬ বছরের শাসনামলে তাদের অত্যাচার, নির্যাতন, নিষ্পেষণ, শাপলা চত্বর এবং পিলখানার মত ঘটনাসমূহ অস্বীকার করা যাবে না।
এ সময় তিনি আরও বলেন ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মতো নারীরাও এখন সংখ্যালঘুতে পরিণত হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় তারা হেনস্থার শিকার হচ্ছে। কক্সবাজারের পোশাক নিয়ে এক নারীকে হেনস্তার করার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
ডায়ালগে অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ বলেন, ছাত্ররাজনীতিতে শিবিরকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে যে কেউ শিবির করলে তাকে মেরে ফেলা বৈধ ছিল। শহীদ আবরার ফাহাদকে শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্মমভাবে শহীদ করা হয়। শহীদ হওয়ার পর তার বাবা এসে বললেন, তিনি ছাত্রশিবির করেন না।
তিনি আরো বলেন, যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির পরিচয় দেয় তাকে ৫৭ দিন রিমান্ডে দেওয়া হয়। যে শিবিরের শাখা সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেয় তাকে গুম করে ফেলা হয়। যিনি ওয়ার্ড সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেয় তাকে কোরআন ক্লাস থেকে উঠিয়ে নিয়ে অস্ত্রের মামলা দেওয়া হয়। এভাবে শিবিরের কেন্দ্রীয় অফিস থেকে ওয়ার্ড অফিস পর্যন্ত সকল অফিস বন্ধ করে দেওয়া হলো। শিবিরের সকল ধরনের প্রোগ্রাম বন্ধ করে শিবিরকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী ছাত্রলীগের যে রাজনীতি তারা দেখিয়েছে এবং ৯০ সাল থেকে ২০০৫ পর্যন্ত যে ছাত্র রাজনীতি ছিল তার অনুরূপ কোন দখলদারিত্বের রাজনীতি চাই না। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতির সোনালি সময় যাচ্ছে। আমরা চাই সকল দল ,মত, ধর্ম, নারী এবং পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই সমান নাগরিক অধিকার লাভ করবে।
“আমরা চাই ছাত্ররাজনীতি এমন হবে যেখানে হল এবং বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ স্বাধীন হবে এবং স্বাধীনভাবে নিজের মতামত দিতে পারবে। কোন পলিটিক্যাল পার্টি বা রাজনৈতিক দল এটা ঠিক করে দেবে না হলে কে সিট পাবে আর কে সিট পাবে না।”
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি ডেমোক্রেটিক বা গণতান্ত্রিক পরিবেশ চাই যেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তার আইডিয়া শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দিবে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের মত করে স্বাধীনভাবে গ্রহণ করবে।
ডায়ালগে হামাস বিন খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী মো. ইশরাক, শামছুন নাহার হল সংসদের সাবেক সাহিত্য সম্পাদক অরুণিমা তাসনিম এবং বিশিষ্ট চিন্তক ও অ্যাক্টিভিস্ট আরিফুল ইসলাম তুহিন আলোচনায় অংশ নেন।