রামপুরায় সংঘর্ষ

‘স্বামীর নাভির নিচ থেকে পুরোটা অবশ, তিন সন্তান নিয়ে আমি এখন কী করমু’

হাসপাতালে শাহ আলম এবং তার স্ত্রী-সন্তান
হাসপাতালে শাহ আলম এবং তার স্ত্রী-সন্তান  © টিডিসি ফটো

হাসপাতালের বিছানায় ঘুমিয়ে শাহ আলম (৪০)। বাম পাশে বসা স্ত্রী। অন্যপাশে ১০ বছর বয়সী সন্তান ইয়ামিন। ছোট্ট ইয়ামিন বুঝতেই পারছে না, তার বাবা হয়তো আর কখনো হাটতে পারবে না। তাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারবে না। পাশে বসা স্ত্রী শিল্পী বেগম বিলাপ করে বলছিলেন, ‘আমার স্বামীর নাভির নিচ থেকে পুরো শরীর অবশ হয়ে গেছে। পা নাড়াতে পারছেন না। তিন সন্তান নিয়ে আমি এখন কী করমু?’ 

গত শুক্রবার কাজের উদ্দেশে বের হয়ে রাজধানীর রামপুরা ব্রিজের কাছে গুলিবিদ্ধ হন শাহ আলম। পরে আশেপাশের লোকজন তার স্ত্রী শিল্পী বেগমকে কল করে শাহ আলমের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর দেন। এরপর তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখান থেকে ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ভর্তি করা হয় শাহ আলমকে। বর্তমানে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও দুই পা নাড়াতে পারছেন না তিনি।

স্বামীর বর্তমান অবস্থা দেখে ভেঙে পড়েছেন শিল্পী। ছোট ছোট তিন সন্তানকে নিয়ে কীভাবে বাকি জীবন কাটাবেন সেই চিন্তা পোড়াচ্ছে তাকে। শিল্পী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমার স্বামী কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। বাড়ি থেকে কাজের কথা বলে বের হয়েছিলেন। এরপর তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে খবর পাই। 

তিনি আরও বলেন, বড় ছেলে সাব্বির নবম শ্রেণিতে পড়ে। ইয়ামিন পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। আর সবার ছোট মেয়ে ফাহমিদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়েন। স্বামীর উপার্জন দিয়েই পুরো পরিবার চলে। সন্তানদের এখনও কাজের বয়স হয়নি। বড় ছেলেকে কাজে পাঠাতে হলে তার পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে হবে। এই অবস্থায় সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত তিনি।

শাহ আলমের ভায়রা জাহিদ হাসানা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শাহ আলমের বুকের বাম পাশে গুলি লেগে তা পিঠ দিয়ে বের হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কাল (সোমবার) তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হবে। তবে শাহ আলমের দুই পা অবশ হয়ে আছে। কেন এরকম হয়েছে তার কোনো কারণও বলছে না। আমরা শাহ আলমের সঠিক চিকিৎসা চাই।


সর্বশেষ সংবাদ