ছাত্রদলের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ, পদবঞ্চিতদের ক্ষোভ

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল  © লোগো

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ২৬০ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। ঈদ-উল আজহার দু’দিন আগে গত শনিবার (১৫ জুন) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এই কমিটিতে সংগঠনটির শীর্ষ দুই নেতার পছন্দের লোকজনদের স্থান দিতে গিয়ে পরীক্ষিত ও মামলায় জর্জরিত শতাধিক যোগ্য ও ত্যাগী পদপ্রত্যাশীর স্থান হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে। সংগঠনে দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয়, বিতর্কিত, চাকরিজীবী এবং অছাত্রদেরও কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

এ নিয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের এবং পদবঞ্চিতদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে বিএনপির হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তবে বাদ পড়াদের অনেককে আগামীতে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে বলে জানা গেছে। 

এদিকে ঘোষিত কমিটিতে পদায়নের ক্ষেত্রে সিনিয়র-জুনিয়র মানা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রমে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। ছাত্রদলের এক সাবেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যেসকল নেতাকর্মীরা মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশসহ দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে অপেক্ষাকৃত বেশি সক্রিয় ছিলেন তাদের অনেককে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। অথচ এ ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা অপেক্ষাকৃত কঠিন। আর অপেক্ষাকৃত সহজ কর্মসূচি আলোচনা সভায় অংশগ্রহণের ছবি দেখিয়ে অনেকে কমিটিতে পদ বাগিয়ে নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ২৬০ সদস্যের আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা

তবে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, বিএনপির চলমান আন্দোলন-সংগ্রামে বিশেষ করে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে গত ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত যারা নিজেদের জীবনবাজি রেখে দলের কর্মসূচি সফল করেছে কমিটিতে তাদেরকেই প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে কারা রাজপথে সক্রিয় ছিল এবং কারা ছিল না এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে পদায়ন করা হয়েছে। 

তাদের ভাষ্য, এ সময়ের মধ্যে যারা মিছিল-মিটিংয়ে সশরীরে অংশ নিয়েছে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী পদায়ন করা হয়েছে। তবে তারা এও স্বীকার করেছেন, যারা ১২-১৪ বছর ধরে রাজনীতি করেও এ সময়ে নিষ্ক্রিয় ছিল তাদের অনেককে পদ দেয়া হয়নি। সেশন ধরে কমিটি করার কারণেও অপেক্ষাকৃত সিনিয়র অনেকে বাদ পড়েছে। কমিটি করার ক্ষেত্রে এটা দলের (বিএনপি) নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল বলে জানায় তারা। তবে আগামীতে কমিটি বর্ধিত করার সময় যারা দলের জন্য পরীক্ষিত কিন্তু বাদ পড়েছে তাদের পদায়নে অগ্রাধিকার দেয়া হবে।

এর আগে গত ১ মার্চ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের ৭ সদস্য বিশিষ্ট নতুন আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছিলেন। রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে সভাপতি ও নাছির উদ্দীন নাছিরকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়াকে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, শ্যামল মালুমকে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আমানউল্লাহ আমানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, মো. জাহাঙ্গীর আলমকে দপ্তর সম্পাদক এবং শরিফ প্রধান শুভকে প্রচার সম্পাদক করা হয়েছিল। 

এদিকে আংশিক কমিটির সাড়ে তিন মাস পর গত শনিবার ২৬০ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতি করা হয়েছে ৪০ জনকে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ১১০ জন। এছাড়া ৫৩ জনকে সহ-সাধারণ সম্পাদক, ৩০ জনকে সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, ১১ জনকে সম্পাদক এবং সহ-সম্পাদক পদে ৬ জনকে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে ২৬০ সদস্যের মধ্যে সহ-দপ্তর পদ দুটি ফাঁকা রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মহানগরের বিলুপ্ত চার ইউনিটে শিগগিরই ছাত্রদলের কমিটি

এর আগে ২০২২ সালে রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণকে সভাপতি ও সাইফ মাহমুদ জুয়েলকে ৩০২ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছে হয়েছিল। এর কয়েক মাসের মাথায় এসে বিভিন্ন পদে আরও ৮৯ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

বর্তমান কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৬-২০০৭ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই সেশনে থেকে সর্বশেষ ২০১২-২০১৩ সেশন পর্যন্ত অধ্যয়নরতরা ২৬০ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটিতে স্থান হয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে যারা রয়েছেন তাদের সেশন কত ধরা হয়েছে সেটা জানা যায়নি। 

কমিটিতের ৬৫নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন জুয়েল রানা নামের একজন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি রাজধানীর পিজি হাসপাতালে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) চাকরি করেন এবং ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আওয়ামী লীগের সাথে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনও করছেন বলে জানা গেছে। এ নিয়ে অনেকেই জুয়েল রানার ছবি ফেসবুকে শেয়ার দিয়ে সমালোচনা করছেন।  

তবে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির দাবি করেন, এটা জুয়েল রানা নয়, জুয়েল হোসেন হবে। নামটা কোনো কারণে ভুল এসেছে। তবে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। জুয়েল হোসেন ঢাবির সোহেল-আরিফ কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন এবং ২০০৮-২০০৯ সেশনের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

পরে জুয়েল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি জুয়েল হোসেন। কমিটিতে জুয়েল রানা হিসেবে নাম এসেছে।

এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, গুরুতর যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেটি ভুল বোঝাবুঝি। আগামী ২৮ জুন আমরা কমিটির প্রথম সভা ডেকেছি। সেখানে এসব মীমাংসা করা হবে। তার ভাষ্য, কমিটিতে পদ দেয়া সবার জীবনবৃত্তান্ত তাদের কাছে রয়েছে। নামের ভুল কিংবা এক  পদের বিপরীতে একাধিক ব্যক্তি দাবির বিষয়েও চেক করা হলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

কমিটিতে ৮৯নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন হাসনাইন নাহিয়ান সজিব। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তাকে পদ দেয়ায় বিস্মিত স্বয়ং সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে তিনি জানান, সজিব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান কমিটিতে আছে, পাশাপাশি ঢাকা কেন্দ্রিক রাজনীতি করেন। তবে উপজেলা যুবদলের পদ নেয়া তাদের জানা ছিল না। তিনি জানান, কমিটিতে এরকম কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কমিটিতে ৮৯নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের গোলাম কিবরিয়া। তিনি চার বছর যাবত সরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করছেন এবং ৮৬নং সহ-সাধারণ সম্পাদক মির্জা মারুফ বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকরি করার অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া ১৬৬নং সহ-সাধারণ সম্পাদক সোহাগ মোল্লাহ এইচএসসির গণ্ডি পেরোতে পারেনি এবং ১৩৯নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রবিন অষ্টম শ্রেণি পাশ বলে জানা গেছে। তাছাড়া লন্ডনে বসবাসরত কাওছার মাহমুদ শাওন হয়েছেন এই কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ১নং সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক ৬ বছর যাবত গাজীপুরে কোচিং ব্যবসা করেন বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে তিনি তিনি রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় বলে জানা গেছে। 

আর সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন আসিফ ৩ বছর ধরে দারাজের রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের অফিসে চাকরি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, ঢাকা শেরে বাংলা নগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. শামীম হয়েছেন এই কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।

আরও যত বিতর্কিত ও নিষ্ক্রিয়দের পদায়ন

প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার হিসেবে পরিচিত শেখ তৌহিদুর রহমান তাজ হয়েছেন সদ্য ঘোষিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ব্যবসায়িক কাজের চাপে ঢাকাতেই অবস্থান করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে; সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমানের কাছের হওয়াতে সহ-সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন সাইফুল ইসলাম সোহেল। তিনি একটি ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কর্মরত রয়েছে বলে জানা গেছে।

সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের ‘মাই ম্যান’ খ্যাত মহানগরের রাজনীতিতেও নিষ্ক্রিয় ও সাবেক সদস্য ওয়ালিউজ্জামান সোহেলকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নিষ্ক্রিয়দের মধ্যে পদ পাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এমন একজন রাজিব-আকরামের কমিটির এর এবার পদ পেয়েছেন। তিনি জানান, আগের দুই কমিটিতে পদ না পেলেও তারা (পদবঞ্চিতরা) বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। সেসময় হাইকমান্ড থেকে বারবার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করে নানা বাহানায় পদায়ন করেননি তৎকালীন নেতারা। এটা ছিল দুর্ভাগ্যজনক এবং এতে দলের কোনো লাভ হয়নি।

২০১৪ সালের পর গতবার ঢাবির কমিটিতে পদ পেয়েছিলেন, তাকে এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে। মাঝখানে এতোদিন রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না কেন, এমন প্রশ্নে তিনি জানান, পারিবারিক সমস্যার কারণে তিনি রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন। তবে তিনি এখন তিনি সক্রিয় রাজনীতি করতে চান।

পদবঞ্চিদের ক্ষোভ
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৭-২০০৮ সেশনের। তার সেশনের পদবঞ্চিতদের একজন বলেন, আমি সর্বশেষ শ্রাবণ-জুয়েল কমিটির সহ-সভাপতি ছিলাম। সেই কমিটির তালিকায় ২০ জনের পরে ছিলাম। আশা ছিল এ কমিটিতে আরও সামনের দিকে স্থান হবে। কিন্তু কমিটির তালিকা দেখে অবাক। তিনি বলেন, আমি লজ্জাও পেয়েছি। কমিটিতে আমার স্থান হয়নি। শীর্ষ দুই নেতার পকেট কমিটি ও আর্থিক লেনদেন না থাকলে এ অবস্থা হত না। তাদের সেশনে এরকম আরও ১৫-২০ জন বাদ গেছে বলে তিনি দাবি করেন। 

২০০৮-২০০৯ সেশনের খুলনা এলাকায় এক পদপ্রত্যাশী গত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ কমিটির তিনি সহ-সভাপতি প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু নতুন কমিটিতে তার নামও আসেনি। তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের আগে-পরে মাঠে ছিলাম। কিন্তু ফেসবুকে পোস্ট করিনি নিরাপত্তার কারণে। অথচ কমিটিতে নাম আসেনি। এই সেশনে নাদির শাহ পাটওয়ারী, মো. শিপন বিশ্বাস, জিহাদুল ইসলাম রঞ্জু ও আসিফ হোসেন রচি (সবাই সাবেক কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক) ও মো. আব্দুলাহেল কাফীসহ (সহ-সাধারণ সম্পাদক) ১০-১৫ জন পদপ্রত্যাশীর জায়গা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।

২০০৯-২০১০ সেশনের সাবেক কমিটির একজন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জানান, ১৬-১৭ বছর রাজনীতি করেও এ কমিটি থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। এই সেশন থেকে এস এম মাহমুদুল হাসান রনি (সাবেক যুগ্ম সম্পাদক). মো. শরিফুল ইসলাম (সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক), মো. মশিউর রহমান (২নং সহ-সভাপতি, ঢাবি)সহ ১০-১২ জন জন বাদ গেছে বলে জানা গেছে। 

ঢাবির ২০১০-২০১১ সেশনের পদপ্রত্যাশীদের প্রায় সবাই পদ পেয়েছেন সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় কমিটিতে। তবে ২০১১-২০১২ সেশন থেকে ১০-১২ জন পদপ্রত্যাশী বাদ পড়েছেন বলে জানা গেছে। এরমধ্যে রয়েছেন আব্দুল আল রিয়াদ (সভাপতি, অমর একুশে হল), শাহাদাৎ হোসেন (সাধারণ সম্পাদক, এফ এইচ হল), মো. ফিরোজ আলম (গণসংযোগ সম্পাদক), মির্জা ফরসাল (বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক), সুপ্রিয় শান্ত  (সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ হল) ইউছুফ হোসেন খান (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ঢাবি), মেহেদী হাসান রাজা (আপ্যায়ন সম্পাদক), হাসান আবিদুর রেজা (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ঢাবি), ও নাজমুস সাকিব (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ঢাবি)।

পদায়নের ক্ষেত্রে সিনিয়র-জুনিয়র মানা হয়নি
ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেলকে ২৬০ সদস্যের কমিটিতে ৫নং সহ-সভাপতি করা হয়েছে আর ২নং সহ-সভাপতি করা হয়েছে ইজাজুল কবির রুয়েলকে। তবে রুয়েল এর আগে ঢাবির সোহেল-আরিফ কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে ছিলেন। 

অন্যদিকে, ঢাবির সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামকে ২৬০ সদস্যের কমিটিতে ৪নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে আর মমিনুল ইসলাম জিসান হয়েছেন ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এর আগে জিসান ঢাবির সোহেল-আরিফ কমিটির সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন। কমিটিতে পদায়নের ক্ষেত্রে এরকম পদ এবং বয়সের সিনিয়র-জুনিয়র মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠছে। 

কমিটির তালিকায় ২০ জনের পরে আসা এক সহ-সভাপতি জানান, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৭-০৮ সেশনের। কিন্তু তার আগে সহ-সভাপতি পদ পাওয়া অনেকের সেশন তার পরে। তার প্রশ্ন, পার্টি অফিসে কিংবা কোনো প্রোগ্রামে কে আগে বসবে? সে নাকি তার জুনিয়র।

জানতে চাইলে ২৬০ সদস্যের কমিটিতে ৪নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হওয়া আরিফুল ইসলাম বলেন, এটি পার্টি মূল্যায়ন করছে। তাই সেখানে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদ পাওয়া একজন নেতা বলেন, কমিটির শীর্ষ দুই নেতা এটাকে তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত বলে চালিয়ে দিচ্ছে। তবে যতটুকু জেনেছি শীর্ষ দুই নেতা এটা করেছেন। 

ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা যা বলছেন
২৬০ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটির বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, কমিটিতে পদ পাওয়াদের বিরুদ্ধে গুরুতর কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ধারাবাহিক আন্দোলনে যাদের অংশগ্রহণ ছিল বিশেষ করে ২৮ অক্টোবর থেকে ৭ জানুয়ারি ভূমিকার রেখেছিল তাদেরকে সমন্বয় করে পদায়ন করা হয়েছে।

আর সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, কমিটি করার ক্ষেত্রে দলের ক্রাইটেরিয়া ছিল ২৮ অক্টোবর এবং তার পরবর্তী সময় রাজপথে ভূমিকা কেমন ছিল তা যাচাই করে পদায়ন করা। এসময় যারা সক্রিয় ছিল তাদেরকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং যোগ্যতা অনুযায়ী পদায়ন করা হয়েছে। 

তবে কমিটির আকার আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের জানা মতে- গত কমিটির ২০-৩০ জন এবার বাদ পড়েছেন। হাইকমান্ডের পরামর্শ ও নির্দেশনাক্রমে কমিটির আকার আরও কিছুটা বাড়ানো হতে পারে। সেটি হলে আরও অনেককে কমিটিতে নেওয়া যাবে। তাছাড়া সম্পাদকীয় বিভিন্ন পদ এখনও ঘোষণা হয়নি। সেগুলোতেও কয়েকজন পদায়িত হবেন বলে তিনি জানান।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence