কর্মীসভার ২৬ দিনেও কমিটি পায়নি কুবি ছাত্রলীগ
- কুবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৪৫ PM , আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০১:০৬ PM
কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের নির্দেশনায় গত ৯ অক্টোবর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শাখা ছাত্রলীগের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো নতুন কমিটি ঘোষণা হয়নি কুবিতে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আরও দেরিতে কুবি ছাত্রলীগের কমিটি হতে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় এবং শীর্ষ পদ-প্রত্যাশীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান না করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনটিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ইলিয়াস-মাজেদ কমিটির সাড়ে ছয় বছর অতিবাহিত হওয়ার পর গত ৬ মার্চ বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এর সাড়ে সাত মাস পর কর্মীসভা ডাকা হয়।
এর আগে সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৮ মে কুবি ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইলিয়াস হোসেন সবুজকে সভাপতি ও রেজাউল ইসলাম মাজেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
একই বছরের ২৩ নভেম্বর ১৬১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় সোহাগ-জাকির কমিটি। এক বছর মেয়াদী সে কমিটি দায়িত্ব পালন করে প্রায় সাড়ে ৬ বছর। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি একাধিকবার পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি কুবি ইউনিটের নেতৃত্ব।
শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এক কমিটিতে দীর্ঘ সময় পার হয়েছে। অন্যদিকে কর্মীসভা হওয়ার এতদিন পর নতুন কমিটি গঠনে আবার কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। এতে নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তারা চরম হতাশায় দিন পার করছেন।
২০১৭ সালের ২৮ মে কুবি ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এক বিজ্ঞপ্তিতে ইলিয়াস হোসেন সবুজকে সভাপতি ও রেজাউল ইসলাম মাজেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। একই বছরের ২৩ নভেম্বর ১৬১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় সোহাগ-জাকির কমিটি।
তবে শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা বলছেন ভিন্ন কথা। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমি মনে করি এ মুহূর্তে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় রাজনীতি। এটার ওপর আমাদের ভবিষ্যৎ এবং ভাগ্য নির্ভর করছে। কুবি ছাত্রলীগের কমিটি দরকার। তবে কমিটি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি যখন যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা সে সিদ্ধান্ত পালন করব।’
কাজী নজরুল ইসলাম হলের সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, ‘গত মাসে আমাদের বহুল প্রত্যাশিত কর্মীসভা হয়েছে। আশা করি দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক একটি সুন্দর, ও যোগ্য নেতৃত্ব উপহার দেবে।’
একই কথা বলেছেন শাখা ছাত্রলীগের আরেক নেতা স্বজন বরণ বিশ্বাসও। তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে হয়তো কমিটি দিতে দেরি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ যেহেতু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যথেষ্ট সচেতন আছে এবং কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আশা করব যথা সময়ে কমিটি হয়ে যাবে।’
আরো পড়ুন: ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস
২০১৭ সালের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহি বলেন, ‘নতুন নেতৃত্ব গঠনের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরও কি কারণে কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে না তা বলতে পারব না। তবে আমার মনে হয় বর্তমানে দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করে কমিটি দিতে দেরি হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারি। সামনে যেহেতু নির্বাচন, তাই সবাইকে সংগঠিত করার জন্য কমিটি দ্রুত দিয়ে দেওয়া দরকার বলে মনে করি।’
বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুস বলেন, কমিটির বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। শিগগিরই সিদ্ধান্ত আসবে। তবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পছন্দকে প্রায়োরিটি দিয়ে কমিটি দেওয়া হবে।’
কেন্দ্রীয় সহসভাপতি কোহিনুর আক্তার রাখি বলেন, ‘দেশের এ অবস্থায় তো আর কমিটি দেওয়া যায় না। গত ২৮ তারিখ বিএনপির মহাসমাবেশ, আওয়ামী লীগের বড় কর্মসূচি গেল। এছাড়া অবরোধ পরিস্থিতি, সব মিলিয়ে অনুকূল পরিস্থিতি নেই। কমিটির বিষয়ে বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে।’