১২ বছরেও পূর্ণাঙ্গ হলো না জবি ছাত্রলীগ, পদ ছাড়াই রাজনীতি শেষ কর্মীদের

জবি-ছাত্রলীগ
জবি-ছাত্রলীগ  © লোগো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি ১২ বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। সর্বশেষ শরিফ সিরাজ কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়েছিলো। এরপর থেকে কমিটি স্থগিত, বিলুপ্ত আর বিদ্রোহীদের আগুনেই পুড়ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীদের ভাগ্য। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে পরিচয় না পাওয়ায় হতাশ কর্মীরা। বয়সসীমা পার হওয়া আর তীব্র হতাশায় কর্মীরা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে ইতি টানছেন। চাপা অভিমানে কেউ রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, কেউ করেছেন বিয়ে। গত ১২ বছরে তিনবার কমিটি হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি পায়নি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। 

জানা যায়, ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শরীফ-সিরাজের পূর্ণাঙ্গ কমিটির পর আর এই গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ শরীফ-সিরাজ কমিটির বিলুপ্তির ছয় মাস পর ১৭ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সোহাগ-জাকির কমিটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ৩৯ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে। ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হলে কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে শোভন-রাব্বানীর কমিটি। এরপরই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিদ্রোহীরা অবস্থান নেন। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের বিদ্রোহীদের সাথে তরিকুল-রাসেলের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারি উক্ত কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সেই কমিটি দুই বছর অতিক্রম করলেও পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় কোন আলোর মুখ দেখেনি শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। 

সূত্রে জানা যায়, কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর ২০১৯ সালের ২০ জুলাই ছাত্রলীগের এই সুপার ইউনিটের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু নতুন কমিটি দেয়ার আগে চাঁদাবাজির অভিযোগে ১৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিদায় ঘটে। শীর্ষ দুই নেতার বিদায়ের পর শাখা ছাত্রলীগের কমিটি দীর্ঘতর হতে থাকে। এরপর করোনায় ক্যাম্পাস বন্ধের অজুহাতে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতায় দীর্ঘ আড়াই বছর নেতৃত্বহীন ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ফলে কর্মীদের নিজের নামের পাশে পদবী লাগানোর ভাগ্য হয় উঠেনি। 

এরপর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ২০২২ সালের পহেলা জানুয়ারি ইব্রাহীম ফরাজিকে সভাপতি ও এস এম আকতার হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। কমিটি হওয়ার ছয় মাসের মাথায় কোন কারণ উল্লেখ না করেই গত ১ জুলাই সেই কমিটি স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। বারবার কমিটি ভাঙ্গনে আলোর মুখ দেখেনি শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী কর্মীরা। ফলে নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। 

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এফ এম শরীফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটে প্রতিটি পদ গুরুত্বপূর্ণ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। পূর্ণাঙ্গ কমিটির মাধ্যমে কর্মীদের একটি রাজনৈতিক পরিচয় তৈরি হয়। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নতুন কমিটি হলে সেখানে নির্দিষ্ট কয়েক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির করার একটা নির্দেশনা রয়েছে। সেখানে এমন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটকে শক্তিশালী করতে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দরকার। 

আরও পড়ুন : চলতি সপ্তাহে ৪১তম বিসিএসের ফল

তিনি আরও বলেন, জবি ছাত্রলীগের শেষ দুই কমিটি সফলভাবে শেষ হয়নি। বিভিন্ন কারণে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত ও স্থগিত করেছে। এক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে নেতৃত্বে বাছাইয়ে। সম্মেলনের সময় যদি সাবেক নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটি দেওয়া হয় তাহলে সৎ, দক্ষ ও ত্যাগী নেতারা নেতৃত্বে আসবেন। 

শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, আমাদের সময় যখনই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেবো, তার কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্ত করে দেয়। এটি আমাদের কর্মীদের জন্য অবশ্যই খারাপ লাগে। কিন্তু নিজেদের অন্তঃকোন্দলের ফলে মূল কমিটি বিলুপ্ত হয়ে যায়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence