হুইল চেয়ারে বসেও স্বপ্ন পূরণে অদম্য রিফাত
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২২, ১০:০৩ PM , আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২২, ১০:০৩ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কেন্দ্রে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১২ টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে ১ টা পর্যন্ত। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে চুয়াডাঙ্গা থেকে এসেছেন প্রতিবন্ধী ভর্তিচ্ছু শিক্ষর্থী রিফাত হোসেন। তিনি হাঁটতে পারেন না, দুই হাত দিয়েও কোনো কিছু করতে পারেন না, মুখ দিয়েও স্পষ্ট কথা বলতে পারেন না এবং উচ্চতায়ও অস্বাভাবিক। তবুও স্বপ্ন পূরণে অদম্য তিনি। তার স্বপ্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করা। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়ে অবহেলিত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে কাজ করা।
রিফাতের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবে রুপ দিতে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে এসেছেন বন্ধু রিফাত আদনান। বন্ধুর এমন ভালবাসা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন অনেকে। অনেকে বলছেন প্রযুক্তির এই যুগে বন্ধুত্বের এমন ভালবাসা খুঁজে পাওয়া যাবে না।
প্রতিবন্ধী রিফাত হোসেন চুয়াডাঙ্গা জেলার বোয়ালিয়া গ্রামের ফাহিদুর রহমানের ছোট ছেলে। নিজ গ্রামের নিউ মেমোরিয়াল হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিকে জিপিএ ৪.৬৩ এবং চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ ৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। প্রবিবন্ধী হলেও স্বপ্ন ছোঁয়ার প্রাণবন্ত চেষ্টা রিফাতের। হাঁটতে পারেন না, দুই হাত দিয়েও কাজ করতে পারেন না, চলেন হুইল চেয়ারে। তবে দৃঢ় মনোবল নিয়ে এসেছেন ভর্তি পরীক্ষা দিতে।
প্রতিবন্ধী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, ছোটবেলা থেকে অনেকের সমালোচনা ওনকটু কথা শুনতে হয়েছে। তবে এগুলো অতিক্রম করে লক্ষ্যপানে অটুট ছিলাম। এক জায়গা থেকে অন্য চলতে কষ্ট হয়। তবে কষ্ট ছাড়া তো কিছু অর্জন করা যায় না। আমার অর্জনে পরিবার এবং বন্ধুরা সহযোগীতা করেছে। আজকের পরীক্ষার কেন্দ্রেপ নিয়ে এসেছেন আমার বন্ধু রিফাত আদনান।
তিনি বলেন, জীবনে ভাল কিছু করতে চাই। আমার স্বপ্ন প্রতিষ্ঠিত হয়ে সুবিধাবঞ্চিত প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ১৪৪ তম হয়েছি। আইন বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করার ইচ্ছা। আজকের ভর্তি পরীক্ষা ভাল হয়েছে। আশা করি গুচ্ছতেও ভর্তির সুযোগ পাব ।
হুইল চেয়ারে করে পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে আসা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর বন্ধু রিফাত আদনান বলেন, সামনে আমার কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা তবুও এসেছি। ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি। আমরা ওকে সবসময় সহযোগীতা করার চেষ্টা করেছি। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে ওর সাফল্যে আমরাও খুব আনন্দিত।