ঈদেও বাড়ি যেতে দিচ্ছে না বিসিএস

শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করছেন (প্রতীকী ছবি)
শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করছেন (প্রতীকী ছবি)  © সংগৃহীত

আসছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। ইতোমধ্যে ঈদকে ঘিরে পাড়া-মহল্লায় পড়েছে খুশির ধুম। তবে অনেকের এই খুশিতে ভাঁটা ফেলেছে বিসিএস পরীক্ষা। আসছে ২৪ জুলাই ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা থাকায় তারা পরিবারের সঙ্গে উদযাপন করতে পারছে না এবারের ঈদ। দারিদ্রের কষাঘাত, আত্মমর্যাদা ও স্বপ্ন পূরণের তীব্র স্পৃহার কাছে যেন গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে এ আনন্দ। এখন তাদের স্বপ্ন শুধু লক্ষ্য জয়ের!

জানা গেছে, আগামী ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষা। এছাড়া জুলাই ও আগস্টের শুরুতে ব্যাংক জবসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অন্তর্গত অনেক চাকরির পরীক্ষা ও ভাইভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ফলে ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে বাড়ি যেতে চাচ্ছেন না অনেক চাকরিপ্রার্থী।

এসব শিক্ষার্থীদের চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত হতে খোলা রাখা হয়েছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল। ফলে আনন্দ ভুলে সেখানেই লক্ষ্য অর্জনে স্বপ্ন দেখছেন দেশের শত শত স্বপ্নবাজ তরুণ।

জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোহেল আরমান জানান, এবছর ঈদে বাড়ি যাচ্ছি না। চলতি মাসের ২৪ তারিখ বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পড়াশোনা শেষ। এখন একটা চাকরি প্রয়োজন। তাছাড়া বাড়িতে বিশেষ কোন উদযাপনও নেই। তাই অনন্যোপায় হয়ে হলেই থাকছি।

আরও পড়ুন: ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু ২৪ জুলাই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফি জানান, ঈদ তো বরাবরই আনন্দের। এক্ষেত্রে শৈশবটাই মনে হয় বেশি আনন্দের ছিল। কিন্তু বড় হয়ে তো দায়িত্ব, প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষা সবই বেড়ে গেছে। তাই খুশির থেকে এখন দায়িত্ব বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবার মুখের দিকে চেয়ে থাকা, গ্রামের মানুষ চাকরির কথা জিজ্ঞেস করে, একই সাথে স্কুল পাশ করা বন্ধুটাও যখন খোঁটা দিয়ে কথা বলে তখন সত্যিই খারাপ লাগে। সব দিক বিবেচনা করে একটা চাকরি খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। তাই সব আনন্দ ভাগ্যের সাথে ভাগাভাগি করে হলে থেকেই ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রাহাত আল রোমান জানান, ঈদে ভাবছিলাম বাড়ি যাব। কিন্তু সবকিছু বিবেচনা করে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে আসতে হলো। পড়াশোনা শেষ হয়েছে অনেকদিন হলো। অনেক চাকরির পরীক্ষা দিয়েও নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারিনি। শেষ বিসিএসের প্রিলিমারি পরীক্ষায় টিকে লিখিততে বসার সুযোগ পেয়েছি। প্রত্যাশা শুধু লক্ষ্য জয় করে পরিবারের মুখে হাসি ফোটানো।

এমন অনেক শিক্ষার্থীই এবছর দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট্ট কক্ষে ঈদ উদযাপনের জন্য লক্ষ্য স্থির করেছেন। যাদের স্বপ্ন লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা। 

এবিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারীজ বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশে যে পরিমাণ শিক্ষিত বেকার তরুণ-তরুণী রয়েছেন, সেই তুলনায় কর্মসংস্থান নেই। ফলে পরিবারের লাখ লাখ টাকা খরচ করে পড়াশোনা শেষ করে; সেই পরিবারেরই বোঝা হচ্ছেন তারা। এসব দৃশ্য আমাদের ব্যথিত করে। তাই দেশে কর্মসংস্থান বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই।

অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের কেবল সরকারি চাকরির পেছনে ছুটে চলা ঠিক বলে মনে করি না। বিশ্ব অগ্রগতির দিকে তাকিয়ে সর্ব বিষয়ে সমান দক্ষতা অর্জনের প্রচেষ্টা করতে হবে। কেননা শিক্ষিতের চেয়ে দক্ষ জনবল জরুরি। তাই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বপ্ন জয়ের পথে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence