কঠোর লকডাউনে প্রতিদিন আড়াই হাজার মানুষকে খাবার দিচ্ছে যুবকেরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২১, ১১:২৭ AM , আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২১, ১২:২৩ PM
গত বছর লকডাউনের প্রথম দিকে কয়েক জন তরুণ মিলে প্রতিদিন কিছু মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন। এবারের লকডাউনে আবারও প্রতিদিন মানুষের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে সেই সব যুবকেরা।
আয়োজকরা জানালেন, সকাল থেকে খাবারের জোগাড় শুরু হয়। বাজার করা, কাটাকুটি এরপর রান্না। বিশাল বিশাল চার পাতিল খিচুড়ি রান্না করা হয়। এরপর দুপুর থেকে বিতরণ শুরু হয়। এরপর যতক্ষণ খাবার নিতে মানুষ আসে ততক্ষণ চলতে থাকে। প্রয়োজনে আবারও রান্না বসানো হয়। লালমাটিয়ার ডি-ব্লকের ৩/৫ সড়কে যে কেউ নিতে পারেন এই খাবার।
লকডাউন না থাকলে সপ্তাহে এক দিন খাবার বিতরণ করেন। রোজারও সময় করেছেন প্রতিদিন। এবার দেশ জুড়ে যখন কঠোর লকডাউন শুরু হলো তখন আবারও দৈনিক খাবার বিতরণ শুরু করেছেন তারা।
যুবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খাবার যারা নিতে আসেন তাদের বলা হয় মেহমান। প্রতিদিনই সেই মেহমানের সংখ্যা বাড়ছে। এ বছর রোজার সময় যেখানে প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ মানুষকে খাওয়ানো হতো। এবারের লকডাউনে সে সংখ্যা ২ হাজার পেরিয়ে গেছে। কোনো কোনো দিন তা আড়াই থেকে ৩ হাজার হয়ে যায়। ফলে বেশি মানুষের খাবারের জন্য দরকার হয় বাড়তি টাকার। অবশ্য সেজন্য তাদের থেমে থাকতে হয়নি। শুভাকাঙ্ক্ষীরা পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখন তারা ভাবছেন লকডাউনের কারণে আয়হীন হয়ে পড়া অসহায় মানুষদের জন্য খাদ্যপণ্য সরবরাহের কথা।
আয়োজকরা জানান, এমন একটা কাজ করা যায় এই ভাবনাটা প্রথম আসে লিজার মাথায়। তার সেই চিন্তাকে রূপ দিতেই আরো কয়েক জন তরুণ যুক্ত হয়। ১১ জনের একটি দল দাঁড়িয়ে যায়। পরে আরও অনেকে যুক্ত হন।
এই দলের সদস্য আসমা আক্তার লিজা বলেন, অন্যসময় অনেক স্বেচ্ছাসেবক যুক্ত হতেন। এবারের লকডাউনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্পরতায় দূরের স্বেচ্ছাসেবকরা আসতে পারছেন না। ফলে অল্প স্বেচ্ছাসেবক নিয়েই আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
লিজা আরও বলেন, মার্চ ২৬, ২০২০। লকডাউনের সময় নিউ মার্কেট এলাকায় কুকুরদের খাবার খাওয়াতে গেছি। দেখি, কয়েকটা ছোট বাচ্চা একটা দোকান ভাঙার চেষ্টা করছে। আমাকে দেখে পালাচ্ছিল। ধরে বললাম, দোকান ভাঙছো কেন? উত্তরে বলল, এটা খাবারের দোকান। ভেতরে খাবার আছে। কোথাও তো খাবার পাচ্ছি না। তখনই বুঝলাম, করোনার সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক দেওয়ার চাইতে বেশি জরুরি হচ্ছে খাবার দেওয়া।