ভারতের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ঘণ্টা বাজল বাংলাদেশের

  © সংগৃহীত

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের কাছে ৫০ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ দল। অস্ট্রেলিয়ার পর ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনালের আশাও শেষ তাদের। ফলে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ঘণ্টা বাজল শান্তদের। অন্যদিকে, দুর্দান্ত জয়ে রোহিত শর্মার দল এক পা দিয়ে রাখল শেষ চারে।

অ্যান্টিগায় ১৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নামা বাংলাদেশের ইনিংস ৮ উইকেটে ১৪৬ রানে থামিয়ে দেন ভারতের বোলাররা। গ্রুপ পর্বে একাদশে সুযোগ না পাওয়া কুলদীপ যাদব সুপার এইটে দেখাচ্ছেন ঘূর্ণি জাদু। আগের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিয়েছিলেন ২ উইকেট, আজ ১৯ রান দিয়ে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে সাবধানী শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনার লিটন দাস ও তানজিদ হাসান তামিম স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়াচ্ছিলেন রানের গতি। পঞ্চম ওভারে খেই হারালেন লিটন। প্রথম ৭ বলে করেছিলেন ৩ রান। পরের দুই বলে অক্ষর প্যাটেলকে ১টি চার ও হার্দিক পান্ডিয়াকে পুল করে চোখজুড়ানো ছক্কা।

ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে যাওয়া লিটন আভাস দিচ্ছিলেন দারুণ কিছুর। কিন্তু না, পরের বলেই আউট হলেন তাঁর মতো করেই। অফ স্টাম্পের বাইরে সরে পান্ডিয়ার ওয়াইড লাইনের স্লোয়ার ঘুরাতে গিয়ে ডিপ স্কয়ারে ক্যাচ দিয়েছেন সূর্যকুমার যাদবকে। ১০ বলে ১৩ রান করে ফেরেন লিটন। পঞ্চম ওভারে ভাঙে ৩৫ রানের ওপেনিং জুটি।

পাওয়ার-প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৪২ রান। দ্বিতীয় উইকেটে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তামিম জুটি বড় করার চেষ্টা করেন। তবে লক্ষ্য অনুযায়ী স্কোর বোর্ডে ওভারপ্রতি রানে হার কমই জমা হচ্ছিল। ১০ম ওভারে কুলদীপ যাদবের এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন তামিম। ভাঙে ৩১ বলে ৩১ রানের জুটি।

সুবিধা করতে পারেননি ৪ নম্বরে নামা তাওহিদ হৃদয়ও। কুলদীপ নিজের পরের ওভারে এলবিডব্লুতে ফেরান হৃদয়কে (৪)। পরের ওভারে রোহিত শর্মার ক্যাচে ফেরান সাকিব আল হাসাকেও (১১)। স্কোরে ১০০ রান জমা করতে বাংলাদেশের লাগে ১৪ ওভার। শেষ ৬ ওভারে জিততে তাদের প্রয়োজন পড়ে ৯৭ রান। যেটি রীতিমতো কঠিন কাজই। তখনই ধীরে ধীরে হার জেঁকে বসতে শুরু করে।

থিতু হয়েও ঝড় তুলতে পারেননি শান্ত। ১৬তম ওভারে জসপ্রীত বুমরার বলে ফেরেন ক্যাচ দিয়ে। ৩ ছক্কা ও ১ চারে ৩২ বলে ৪০ রান আসে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে। তারপর জাকের আলী অনিক ফেরেন ১ রানে। বিশ্বকাপ দলে জায়গা করেও প্রত্যাশা মতো দলের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। ১০ বলে ২৪ রানের ছোটখাটো এক ঝোড়ো ইনিংস খেলেছেন রিশাদ হোসেন। ৩ ছক্কা ও ১টি চারে করেছেন ২৪ রান।

দলের অন্য ব্যাটারদের জন্য রিশাদের ইনিংস যেন টি-টোয়েন্টি সংস্করণের ব্যাটিংয়ের ধরন হিসেবে উদাহরণ হয়ে থাকল! মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ফেরেন ১৫ বলে ১৩ রান করে। বুমরা, আর্শদীপ সিং দুটি ও কুলদীপ নিয়েছেন ৩টি উইকেট।

ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটের সুবিধা নেয়নি বাংলাদেশ। ভারতকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান অধিনায়ক শান্ত। এর খেসারত শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দিয়েই গেছেন তাঁরা। তার সঙ্গে একাদশে সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমেদকে বাদ দেওয়া। স্পিনে পারদর্শী ভারতের বিপক্ষে এটাও যেন প্রশ্নবিদ্ধ এক সিদ্ধান্ত হয়ে গেল!

টস জিতে অধিনায়ক শান্ত বলেছিলেন, এই পিচে ১৬০ থেকে ১৭০ রান আদর্শ। পিচ রিড করতেই বাংলাদেশের অধিনায়ক যে ভুল করেছেন তা টের পাওয়া গিয়েছে পাওয়ারপ্লেতেই। ৬ ওভারে তারা তুলল ৫৩ রান। ওই ৬ ওভারে বাংলাদেশের প্রাপ্তি সাকিব আল হাসানের উইকেট। যে উইকেট ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তার ৫০তম উইকেট। এমন কীর্তি নেই আর কারোরই। 

নবম ওভারে তানজিম সাকিব জোড়া আঘাত হেনেছেন। ১৩তম ওভারে রিশাদ ফিরিয়েছেন রিশাভ পান্তকে। নিয়মিত উইকেটের পতনগুলো খুব একটা স্বস্তি দেয়নি টাইগার শিবিরকে। সুযোগ পেলেই তারা চড়াও হয়েছেন বাংলাদেশের ওপর। শেষ ৪ ওভারে ৬২ রান আর মাঝের ওভারে ৮১ রান নিশ্চিত করেছে ভারতের বিশাল সংগ্রহ। 


সর্বশেষ সংবাদ